যুক্তরাষ্ট্রে ১০ লাখের বেশি মানুষ এরই মধ্যে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন। দেশটির ইতিহাসে বৃহত্তম টিকাদান কর্মসূচির এ এক মাইলফলক। তবে এই সময়ের মধ্যে যে গতিতে মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য ছিল, সেটি পূরণ হয়নি বলে স্বীকার করেছেন সরকারি কর্মকর্তারা। খবর এএফপির।
যুক্তরাষ্ট্রে শীতে নতুন করে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। এই ভাইরাসের সংক্রমণে এখন পর্যন্ত দেশটিতে মারা গেছেন ৩ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষ। এ বছর দেশটিতে যেসব রোগে বেশি মানুষ মারা গেছেন, সেগুলোর মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে যাওয়ার পথে রয়েছে করোনা।
‘অপারেশন ওয়ার স্পিডের’ প্রধান উপদেষ্টা মোনসেফ স্লাউয়ি বলেছেন, চলতি মাসে দুই কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, সেটি সম্ভবত পূরণ করা সম্ভব হবে না। কেননা, নানা কারণেই বিলম্ব ঘটছে। তবে আগামী মার্চের মধ্যে ১০ কোটি মানুষকে ও পরবর্তী তিন মাসে আরও ১০ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদী তিনি।
মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) পরিচালক রবার্ট রেডফিল্ড বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে গত ১৪ ডিসেম্বর এ দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত ১০ লাখের বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। এটি একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক। তবে আমরা স্বীকার করছি, আমাদের সামনের পথ চ্যালেঞ্জের।’ তিনি আরও বলেন, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-১৯ টিকার সরবরাহ সীমিত। আসছে সপ্তাহ ও মাসগুলোয় এ সরবরাহ বাড়বে।
খবরে বলা হয়, গত সপ্তাহে ফাইজার-বায়োএনটেকের প্রায় ৩০ লাখ টিকা আনা হয়েছে। এ সপ্তাহে ফাইজারের আরও ২০ লাখ ও মডার্নার ৬০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের।
কোভিড-১৯ টিকা কর্মসূচি মসৃণ গতিতে চালিয়ে নেওয়া গেলে আগামী গ্রীষ্মের আগে দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সক্ষমতা গড়ে তোলার লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হতে পারে।অ্যান্থনি ফাউসি, যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ
যুক্তরাষ্ট্রে টিকা ব্যবস্থাপনার কাজে নিয়োজিত কর্মসূচি ‘অপারেশন ওয়ার স্পিডের’ প্রধান উপদেষ্টা মোনসেফ স্লাউয়ি বলেছেন, চলতি মাসে দুই কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, সেটি সম্ভবত পূরণ করা সম্ভব হবে না। কেননা, নানা কারণেই বিলম্ব ঘটছে। তবে আগামী মার্চের মধ্যে ১০ কোটি মানুষকে ও পরবর্তী তিন মাসে আরও ১০ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদী তিনি।
অবশ্য এত অল্প সময়ে এতসংখ্যক মানুষকে টিকা দেওয়ার এ আশাবাদ কতটুকু ফলপ্রসূ হবে, সে ব্যাপারে অনেক বিশেষজ্ঞই সন্দিহান। তাঁরা বলছেন, এ উদ্যোগের সাফল্যের জন্য সমান্তরালভাবে প্রয়োজন হবে নানা স্তরের পরীক্ষা-নিরীক্ষা, ব্যাপকভাবে টিকা উৎপাদন, এসব ডোজ নিরাপদ ও কার্যকর কি না, তা প্রমাণ করা ইত্যাদি।
যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ফাউসি বলেছেন, কোভিড-১৯ টিকা কর্মসূচি মসৃণ গতিতে চালিয়ে নেওয়া গেলে আগামী গ্রীষ্মের আগে দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সক্ষমতা গড়ে তোলার লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হতে পারে।
গতকাল বুধবার এক সাক্ষাৎকারে ফাউসি বলেন, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী জুন বা জুলাই নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রবাসী স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন। তিনি বলেন, নার্সিংহোমে থাকা ব্যক্তি, স্বাস্থ্যসেবাকর্মী, জনগুরুত্বপূর্ণ কাজে নিয়োজিত কর্মী, বয়স্ক ব্যক্তি ও উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে আগামী মার্চ বা এপ্রিলের প্রথমভাগের মধ্যেই টিকা দেওয়া দরকার।