প্রবল তুষারঝড়ের কবলে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলের অঙ্গরাজ্যগুলো। এ পর্যন্ত আটজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আগামীকাল রোববার পর্যন্ত এ পরিস্থিতি থাকতে পারে। তুষারঝড়ের কারণে প্রায় সাত হাজার ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। বিপদ মোকাবিলায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনে ঘরে মজুত করে রাখছেন বাসিন্দারা। জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। খবর এএফপির।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া দপ্তর বলছে, রাজধানী ওয়াশিংটনে হানা দিয়েছে প্রবল তুষারঝড়। আজ শনিবারের মধ্যে ওয়াশিংটন ও আশপাশের এলাকায় আরও দুই ফুটের মতো তুষারপাত হতে পারে। পূর্বাঞ্চলের ওয়াশিংটন থেকে নিউইয়র্ক পর্যন্ত তুষারঝড় হানা দিয়েছে। আরও তুষারঝড়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। আরকানসাস, টেনেসি, কেনটাকি, নর্থ ক্যারোলাইনা, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া ও ভার্জিনিয়াসহ দক্ষিণাঞ্চলের ১৮ অঙ্গরাজ্যে তুষারঝড় বয়ে গেছে। তারা বলছে, ভারী তুষারপাত ও প্রচণ্ড তুষারঝড় ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির কারণ হবে। এটি জীবন ও সম্পদের জন্য বড় হুমকি। ঝড়ের সময় ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কর্মকর্তারা নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তুষারঝড়ের কারণে জনজীবন স্থবির হয়ে আছে, বাইরে বের হওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। ওয়াশিংটনের মেয়র মুরিয়েল বোসার সবাইকে সতর্ক করে বলেন, ‘এটাকে বড় ঝড় হিসেবে দেখা হচ্ছে।’ আর জাতীয় আবহাওয়া কার্যালয়ের পরিচালক লুইস ইউসেলিনির আশঙ্কা, এই তুষারঝড়ের কারণে পাঁচ কোটির মতো মানুষ আক্রান্ত হতে পারে।
ওয়াশিংটনের স্কুল ও সরকারি অফিস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গণপরিবহন চলাচলের সময়সূচি বিকেল থেকে সকাল পর্যন্ত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। আপত্কালীন পরিস্থিতি সামাল দিতে মুদি দোকান থেকে প্রয়োজনীয় পণ্য কিনে বাসায় রেখে দিচ্ছেন বাসিন্দারা। দোকান থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনে বাড়ি ফেরার পথে শারোন্দা ব্রাউন বলছিলেন, ‘মনে হচ্ছে, ভয়াবহ দুর্যোগের মুখে পড়তে যাচ্ছি।’
ওয়াশিংটনের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি অ্যান্ড ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির পরিচালক ক্রিস গেলডার্ট বলেন, দ্রুত পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। জাতীয় ঐতিহাসিক স্থাপনা, ক্যাপিটাল ভবন ও জাদুঘর বন্ধ থাকবে বলে পুলিশ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে।
ফ্লাইট পর্যবেক্ষণকারী ফ্লাইটওয়্যার ডটকমের হিসাবে, শুক্র ও শনিবারের নির্ধারিত ৬ হাজার ৬০০-এর বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
১৯২২ সালে প্রবল তুষারঝড়ে তিন দিনে ২৮ ইঞ্চির মতো তুষারপাত হয়েছিল। নাট্যশালার ছাদ ধসে পড়ে ১০০ মানুষের মৃত্যু ঘটে। এবার যেভাবে তুষারপাত হচ্ছে, তুষারপাতের সেই রেকর্ড ভেঙে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।