কোনো রকম সরকারি সাহায্য গ্রহণ করেছে—এমন বৈধ বহিরাগতদের গ্রিনকার্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র সরকার নতুন কড়াকড়ি আরোপ করতে যাচ্ছে।
গতকাল শনিবার হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দপ্তর এক ঘোষণায় জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বহিরাগত, যাঁরা বর্তমানে খাদ্য, গৃহায়ণ ও অন্যান্য খাতে সরকারি সাহায্য পেয়ে থাকেন, তাঁদের গ্রিনকার্ডের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হতে পারে। ভবিষ্যতে এই সাহায্য গ্রহণ করতে বাধ্য হবে—এমন বৈধ অভিবাসীদের ক্ষেত্রেও এই নিয়ম বহাল হবে।
এই ঘোষণায় যেসব সাহায্য খাতকে নির্দিষ্ট করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ওষুধ কেনায় আর্থিক সাহায্য, খাবার কেনায় সহায়ক ফুড স্টাম্প, বাড়তি পুষ্টি সহায়তা ও বাড়িভাড়ায় আর্থিক সাহায্য।
উল্লেখ্য, গ্রিনকার্ড অর্জনের মাধ্যমে এ দেশে বৈধভাবে আসা বহিরাগতরা স্থায়ীভাবে বসবাসের যোগ্যতা অর্জন করে থাকেন। গ্রিনকার্ড লাভের পাঁচ বছরের মাথায় কোনো অভিবাসী মার্কিন নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারেন।
নতুন নীতিমালার ব্যাখ্যায় হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দপ্তর জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এমন অভিবাসীকে স্বাগত জানাতে চায়, যাঁরা এই দেশে অবস্থানকালে নিজেদের খরচ বহনে সক্ষম। যাঁরা গ্রিনকার্ড পেতে আগ্রহী, তাঁদের এ কথা প্রমাণ করতে হবে যে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের তাঁরা আর্থিকভাবে সমর্থনে সক্ষম। এই নীতিমালা বাস্তবায়নের ফলে একদিকে যুক্তরাষ্ট্রের করদাতাদের ওপর বাড়তি ব্যয়ভার কমবে, অন্যদিকে অভিবাসীরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে উৎসাহিত হবেন।
এই নতুন নীতিমালা ঘোষণা আকারে প্রকাশের পর বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থার মতামত সংগ্রহের জন্য ৬০ দিন অপেক্ষা করা হবে। চূড়ান্ত নীতিমালা কবে থেকে কার্যকর হবে, হোমল্যান্ড দপ্তর সে কথা জানায়নি।
এ রকম একটি নীতিমালা আসছে, সে কথা বেশ কিছুদিন থেকেই শোনা যাচ্ছিল। গ্রিনকার্ড পেতে বাধাগ্রস্ত হবেন, এই আশঙ্কা থেকে মূল ঘোষণা প্রকাশের আগেই অনেক বৈধ অভিবাসী সব রকম সরকারি সাহায্য গ্রহণ বন্ধ করে দিয়েছে।
অভিবাসীদের পক্ষে কাজ করে—এমন একাধিক বেসরকারি সংস্থা জানিয়েছে, ভীতসন্ত্রস্ত অনেক বৈধ অভিবাসী তাঁদের মার্কিন নাগরিক—এমন সন্তানদের জন্যও কোনো রকম সরকারি সাহায্য গ্রহণ করছেন না। এর ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সবচেয়ে দরিদ্র অভিবাসীরা। ‘ডাকা’ নামে পরিচিত কর্মসূচির অধীনে এ দেশে শিশু অবস্থায় এসেছে—এমন তরুণ-তরুণীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। তবে ইতিমধ্যে গ্রিনকার্ড পেয়েছেন বা মার্কিন নাগরিকত্ব লাভ করেছেন, এমন অভিবাসীর ক্ষেত্রে এই নীতিমালার কোনো প্রভাব থাকবে না।
মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে এমন একটি ঘোষণার পেছনে ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসনবিরোধী রাজনীতির ভূমিকা রয়েছে, এ ব্যাপারে অধিকাংশ পর্যবেক্ষক একমত। রাজনৈতিক পত্রিকা পলিটিকো জানিয়েছে, এই নীতিমালাগুলোর প্রস্তাবক হলেন ট্রাম্পের অন্যতম উপদেষ্টা স্টিফেন মিলার। তাঁর বিশ্বাস, অভিবাসন প্রশ্নে নতুন কড়াকড়ি আরোপিত হলে মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকানরা সুবিধাজনক অবস্থায় থাকবে।