পরমাণু চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের ব্যাপারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেওয়া প্রস্তাবটি খতিয়ে দেখছে ইরান। গত শনিবার ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি বলেছেন, বৈঠকের বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হলেও এখনো এ বিষয়ে সাড়া দেওয়া হয়নি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিকে শনিবার আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রোসি তেহরান পৌঁছেছেন। ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার অবসান না ঘটালে পরমাণু স্থাপনায় জাতিসংঘের পরিদর্শকদের প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করতে বেঁধে দেওয়া সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই তিনি তেহরান পৌঁছান। ইরানের পার্লামেন্ট ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওই সময়সীমা বেঁধে দেয়।
তেহরানের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, রাফায়েল গ্রোসির সফরের সঙ্গে বেঁধে দেওয়া সময়সীমার সম্পর্ক নেই। তাদের বিরুদ্ধে অবরোধ প্রত্যাহার করা না হলে পারমাণবিক স্থাপনায় জাতিসংঘের পরিদর্শকদের প্রবেশের সুযোগ বন্ধ করা হবে।
২০১৫ সালে বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট থাকার সময় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি হয় ইরানের। ওই চুক্তির মূল বিষয় ছিল, ইরান পরমাণু কার্যক্রম সীমিত রাখবে এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি কমিশন ইরানের যেকোনো পরমাণু স্থাপনায় যেকোনো সময় পরিদর্শন করতে পারবে। বিনিময়ে ইরানের ওপর থেকে অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর এই চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ায় যুক্তরাষ্ট্র। এখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে চুক্তিতে থাকা বর্তমান সদস্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের ব্যাপারে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
অবশ্য ওই চুক্তি পুনর্জীবিত করতে কার আগে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, তা নিয়ে ইরান ও আমেরিকার মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। তেহরানের শর্ত হচ্ছে, চুক্তি নিয়ে আলোচনার আগে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জারি করা অবরোধ অবশ্যই তুলে নিতে হবে।
অন্যদিকে ওয়াশিংটন বলছে, তেহরানকে আগে চুক্তির শর্তে ফিরতে হবে।
আব্বাস আরাকচি বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেলের দেওয়া বৈঠকের প্রস্তাব অধ্যয়ন করা হচ্ছে। এ জন্য সহযোগী রাশিয়া ও চীনের মতো দেশের সঙ্গে পরামর্শ করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এ প্রস্তাব বিষয়ে আমরা জবাব দেব। তবে আমরা মনে করি, যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তিতে ফেরার জন্য আলাদা করে বৈঠকে বসার দরকার হবে না। শুধু নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেই চলবে।’
গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ইরানসহ পারমাণবিক চুক্তিতে থাকা ছয় দেশের মধ্যে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এটা শুধু আলোচনার একটি আমন্ত্রণ। এটি একটি কূটনৈতিক আলোচনা।’