সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা বলেছেন, ব্রিটিশ রাজবধূ মেগান মার্কেল তাঁর অনাগত সন্তানকে নিয়ে ব্রিটিশ রাজপরিবারের একজন সদস্যের মন্তব্যের বিষয়ে যে তথ্য তুলে ধরেছেন, তা হৃদয়বিদারক। তিনি আশা করছেন, মেগানের এই অভিজ্ঞতা সারা বিশ্বের জন্য শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ব্রিটিশ রাজপরিবারের অন্দরের নানা ঘটনা প্রকাশ্যে এনে প্রিন্স হ্যারি ও মেগান মার্কেলের সাক্ষাৎকার বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলেছে। এ দুজন রাজপরিবারের একজন সদস্যের বিরুদ্ধে তাঁদের সন্তানকে নিয়ে বর্ণবাদী মন্তব্যের অভিযোগ তোলেন। ৭ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রে সিবিএস টিভিতে হ্যারি-মেগানের সাক্ষাৎকারটি প্রচারিত হয়।
মেগান বলেন, ব্রিটিশ রাজপরিবারের জৌলুশপূর্ণ জীবনে থেকেও তিনি ভালো ছিলেন না। পরিবারের মধ্য থেকেও তিনি এত বিচ্ছিন্ন ও নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ছিলেন যে একটা সময় বেঁচে থাকার ইচ্ছাই হারিয়ে ফেলেন। ভাবছিলেন আত্মহত্যা করবেন।
রাজপরিবারে মেগানের মানসিক কষ্ট ও তাঁর ছেলে অর্চির জন্মের আগে গায়ের রং নিয়ে বৈষম্যমূলক আলোচনার কথাও বলেন মেগান। তিনি বলেন, সন্তানের গায়ের রং নিয়ে উদ্বেগে ছিলেন রাজপরিবারের এক সদস্য।
হ্যারি অভিযোগ করেন, মেগান মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লেও রাজপরিবার থেকে কোনো সাহায্য পায়নি। মেগানের দেওয়া সাক্ষাৎকার প্রসঙ্গে এনবিসি নিউজকে মিশেল ওবামা বলেছেন, ‘ওই ঘটনা শোনাটা হৃদয়বিদারক। তাঁর কাছে মনে হয়েছে মেগান তাঁর পরিবারের একজন সদস্য।’
মিশেল ওবামা বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, বর্ণবাদ এই পৃথিবীতে নতুন নয়। তাই তাঁর অনুভূতি জানতে পারাটা একেবারে আশ্চর্যের কিছু নয়। আমি যে জিনিসটির জন্য প্রত্যাশা করি এবং যা আমি মনে করি, তা সর্বাগ্রে একটি পরিবার। আমি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং তারা যন্ত্রণা থেকে সেরে উঠে একে সবার জন্য শিক্ষণীয় মুহূর্ত হিসেবে ব্যবহার করতে পারে, তা কামনা করি।’
ওই সাক্ষাৎকার প্রকাশের পর গত মঙ্গলবার রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বাকিংহাম প্যালেস জানায়, গত কয়েক বছর হ্যারি ও মেগানের জন্য কতটা সমস্যাপূর্ণ ছিল, তা পুরোটা জানতে পেরে পুরো পরিবার দুঃখ পেয়েছে।
বাকিংহাম প্যালেসের বিবৃতিতে বলা হয়, যে বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে, বিশেষ করে বর্ণবাদের বিষয়টি উদ্বেগজনক। এগুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে। পারিবারিকভাবেই বিষয়গুলো সুরাহা করা হবে।
হ্যারির বড় ভাই প্রিন্স উইলিয়াম অবশ্য ব্রিটেনের রাজপরিবার বর্ণবাদী এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।