প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর প্রথম কর্মদিবসেই জো বাইডেন মুসলিমপ্রধান কয়েকটি দেশের ওপর ট্রাম্পের আরোপিত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বাতিল করতে পারেন। বাইডেনের তাঁর প্রথম কর্মদিবসেই এক ডজনের বেশি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করার কথা। তার মধ্যে মুসলিমপ্রধান কয়েকটি দেশের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আদেশ বাতিলের বিষয়টিও রয়েছে।
বুধবার শপথ নেবেন জো বাইডেন। তাঁর মনোনীত হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ রন ক্লেইনের এক নথি থেকে জানা গেছে, ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনই বাইডেন বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশ জারি করতে পারেন। এর মধ্যে মুসলিম দেশগুলোর ওপর আরোপ করা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসংশ্লিষ্ট আদেশ থাকতে পারে। এ ছাড়া প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেরা, করোনাভাইরাস মহামারির সময় শিক্ষার্থীদের বিতাড়ন ও ঋণ স্থগিতসংক্রান্ত ট্রাম্পের আদেশ বাতিলের বিষয়গুলো থাকতে পারে।
মেক্সিকোর সঙ্গে সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সন্তানদের সঙ্গে মা–বাবার পুনর্মিলনের ব্যবস্থা করতেও উদ্যোগী হবেন নতুন প্রেসিডেন্ট।
২০১৭ সালে ক্ষমতা গ্রহণের কিছুদিন পরই ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে সাতটি মুসলিমপ্রধান দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষিদ্ধ হয়ে যায়। বিশ্লেষকেরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি সহজেই বাতিল করা যেতে পারে। কারণ, এটি নির্বাহী আদেশ এবং প্রেসিডেন্টের ঘোষণার মাধ্যমে জারি করা হয়েছিল। তবে রক্ষণশীল বিরোধীরা মামলা করলে এ প্রক্রিয়া শুরু করতে দেরি হতে পারে। এই দেশগুলো হলো ইরান, ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, সুদান, ইয়েমেন ও সোমালিয়া।
গত অক্টোবরে জো বাইডেন বলেছিলেন, ‘প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে আপনাদের অবদানকে সম্মান জানাব। প্রেসিডেন্ট হিসেবে সমাজ থেকে ঘৃণার বিষ ছুড়ে ফেলতে আপনাদের সঙ্গে কাজ করব। আমার প্রশাসন আমেরিকার মতোই হবে, মুসলিম আমেরিকানরা প্রতিটি স্তরে কাজ করবে।’
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, বাইডেন ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই করোনা মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইও জোরদার করবেন। এ জন্য তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের আওতাধীন এলাকায় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করবেন। নির্বাচনী প্রচারণার সময়ই বাইডেন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিন থেকেই করোনার বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করবেন। এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশ করেছে নিউইয়র্ক টাইমস।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে জানানো হয়, আগের যেকোনো পূর্বসূরির তুলনায় বাইডেনকে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এ কারণেই তিনি ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম ১০ দিনে একের পর এক নির্বাহী আদেশ জারি করে দেশকে স্থিতিশীলতার পথে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। এরই মধ্যে বাইডেনের অন্তর্বর্তী দল ওই সব নির্বাহী আদেশের খসড়া তৈরি করে ফেলেছে।
বাইডেনের হোয়াইট হাউস চিফ অব স্টাফ রন ক্লেইনের নথি থেকে আরও জানা গেছে, বাইডেন তাঁর প্রথম ১০০ দিনের মধ্যে অভিবাসন আইনেও পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা করেছেন। এ জন্য তিনি কংগ্রেসকে একটি বৃহত্তর পরিকল্পনা পাঠাবেন। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত ১ কোটি ১০ লাখ অবৈধ অভিবাসীর নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।