গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা দেখা দেয়। সামরিক সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয় ইউরোপে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই মার্চের মাঝামাঝি সমর প্রস্তুতির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। তবে রাশিয়ার সঙ্গে উত্তেজনা এড়াতে বিষয়টি গোপন রাখে।
এ ঘটনার প্রায় তিন সপ্তাহ পর আজ মঙ্গলবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার খবর জানানো হলো। যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ইউরোপ সফরের আগ মুহূর্তে ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলে বি-৫২ বোমারু বিমানে করে দ্য হাইপারসনিক এয়ার ব্রিথিং উইপন কনসেপ্ট (এইচএডব্লিউসি) নামে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ওই প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মার্কিন অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান লকহিড মার্টিনের তৈরি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রটির পরীক্ষা সফল হয়েছিল।
প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বিস্তারিত জানাননি। তিনি শুধু জানিয়েছেন, ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়ার পর ৬৫ হাজার ফুট ওপর দিয়ে ৩০০ মাইল অতিক্রম করে এটি মাত্র পাঁচ মিনিটে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে। শব্দের গতিবেগের একেবারে নিম্নস্তরেও ক্ষেপণাস্ত্রটির গতি ছিল ঘণ্টায় প্রায় ৩ হাজার ৮০০ মাইল।
মার্চের মাঝামাঝি ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলে ইভানো-ফ্রানকিভস্ক অঞ্চলে একটি অস্ত্র সংরক্ষণাগারে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রাশিয়া। এর কয়েক দিন পরই যুক্তরাষ্ট্র হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায়। তবে রাশিয়ার সঙ্গে উত্তেজনা বাড়বে, এমন আশঙ্কা থেকেই যুক্তরাষ্ট্র তখন বিষয়টি গোপন করে রেখেছিল।
সিএনএন বলছে, রাশিয়ার কিনঝাল ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহারের বিষয়টি তখন তেমন গুরুত্ব দেননি যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা। প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন তখন বলেন, তিনি এটা ‘গেম চেঞ্জার’ মনে করছেন না। কয়েক দিন পর পেন্টাগনের প্রেস সেক্রেটারি জন কিরবি বলেন, এই হামলা চালানোর যুক্তি কী, সেটা জানা বেশ কঠিন।
রাশিয়ার আধুনিক অস্ত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র। এর নাম কিনঝাল। রাশিয়ার স্বল্প পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইস্কান্দারের আধুনিক সংস্করণ এটি। কিনঝাল ক্ষেপণাস্ত্রটি ২০১৮ সালে জনসমক্ষে আনে রাশিয়া। কিনঝালের গতি শব্দের গতির চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি। যুক্তরাষ্ট্র এইচএডব্লিউসি নামে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। দেশটির কাছে থাকা সবচেয়ে আধুনিক অস্ত্রগুলোর একটি এটি। এতে ওয়্যারহেড নেই। ক্ষেপণাস্ত্রটি বাতাসেই শক্তি সঞ্চয় করে চলে।