ভ্যারাজোনা সেতুটি এখন দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল সেতু হতে যাচ্ছে। নিউইয়র্কের মেট্রোপলিটন ট্রান্সপোর্টেশন অথোরিটি (এমটিএ) গত ৭ মার্চ থেকে সেতুটি পারাপারে টোল ১৯ ডলারে উন্নীত করেছেন। এর মধ্য
দিয়ে নিউইয়র্কের স্ট্যাটেন আইল্যান্ড ও ব্রুকলিন সংযোগকারী এ সেতু পরিণত হয়েছে আমেরিকার সবচেয়ে ব্যয়বহুল সেতুতে।
আগে আমেরিকার সবচেয়ে ব্যয়বহুল সেতু ছিল ভার্জিনিয়ার চেসিপেক বে সেতু। ২৩ মাইল দীর্ঘ সেতু-টানেলটি একবার পার হতে দিতে হয় ১৮ ডলারের টোল। কিন্তু এখন মাত্র আড়াই মাইল দীর্ঘ ভ্যারাজোনা সেতুই টোলের দিক থেকে অতিক্রম করে গেল চেসিপেক বে সেতুকে। যেকোনো অঙ্গরাজ্যের অভ্যন্তরীণ সেতুর জন্যই এর টোলের পরিমাণ চোখ কপালে তোলার মতো।
এই নতুন টোল সম্পর্কে জানতে চাইলে সেতুটির ব্রুকলিন পার্শ্বে বসবাসকারী গ্লোরিয়া রীতিমতো ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বলেন, ‘১৯ ডলার টোল দিতে হলে তো এখন আর স্ট্যাটেন আইল্যান্ডে যাওয়া অসম্ভব। আগে ব্রুকলিন থেকে স্ট্যাটেন আইল্যান্ড পর্যন্ত ভ্যারাজোনা দিয়ে যেতে ১৭ ডলার ব্যয় হতো।’
নতুন টোলের অধীনে ই-জিপাসের ড্রাইভারদের ১২ দশমিক ২৪ ডলারের বদলে ১১ দশমিক ৫২ ডলার টোল দিতে হবে। কিন্তু স্ট্যাটেন আইল্যান্ডের বাসিন্দাদের এখনো রিবেট প্রকল্পের অধীনে সাড়ে ৫ ডলার পরিশোধ করতে হবে। এটিও বাড়িয়ে ৬ ডলার করার কথা ছিল। কিন্তু গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো ও রাজ্যের স্থায়ী আইন পরিষদ শেষ মুহূর্তে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।
কেথলিন কেলি বেরিজের বাসিন্দা। তাঁর প্রেমিক থাকেন স্ট্যাটেন আইল্যান্ডে। এ জুটির এখন দেখা করতে সমস্যা হবে। কারণ তাঁরা একটা ইজিপাস ব্যবহার করেন। এ বিষয়ে কেথলিন কেলি বলেন, ‘আমার প্রেমিক স্ট্যাটেন আইল্যান্ডে বসবাস করে। ব্রুকলিন বাসিন্দাদের সঙ্গে খুব বেশি অন্যায় ও অনুপযুক্ত কাজ হয়েছে এটা।’
ডেমোক্র্যাট কাউন্সিলর জাস্টিন ব্রানান এ সম্পর্কিত এক টুইট বার্তায় লেখেন, ‘গতবার আমি ভেবে দেখেছি যে, একটি সেতুর দুটি দিক আছে। এটি আইনত খুবই হাস্যকর যে, একদিকে স্ট্যাটেন আইল্যান্ডের বাসিন্দাদের ছাড় দেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে ব্রকলিনের বাসিন্দাদের কিছুই দেওয়া হয়নি।’
প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান সদস্য নিকোল ম্যালিয়োটাকিস সেতুটিতে উভয় পক্ষ সমান সুবিধা পাচ্ছে না বলে মনে করেন। তিনি বলেন, এই সেতুই স্ট্যাটেন আইল্যান্ডের সঙ্গে আমাদের একমাত্র সংযোগের উপায়। তাই স্ট্যাটেন আইল্যান্ডের মানুষ সম্পূর্ণ সুবিধা পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু ব্রুকলিনের বাসিন্দাদেরও কিছুটা সুবিধা পাওয়ার অধিকার রাখে। ব্রুকলিনের মানুষকে কাজে যেতে হলেই এখন থেকে সেতু পার হওয়ার জন্য ১৯ ডলার গুনতে হবে।
বর্তমানে নগরীর অন্যান্য প্রধান ক্রসিংগুলো, রবার্ট এফ কেনেডি সেতু (ট্রাইবরো), থ্রোগস নেক ব্রিজ, কুইন্স মিডটাউন টানেলসহ সবগুলোতে টোল হিসেবে সাড়ে ৯ ডলার দিতে হয়। অবশ্য ইজি পাসের ক্ষেত্রে এর পরিমাণ সাড়ে ৬ ডলার।
এই বর্ধিত হার নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তাঁদের মতে, নিয়মিত যাত্রীদের সঙ্গে চরম অন্যায় করা হচ্ছে। দিন দিন পাগলের মতো শুধু টোল বাড়ছে। কিন্তু যাত্রীসেবা বাড়ছে না। হাজারো মানুষকে প্রতিদিন ম্যানহাটনের কুইন্স-মিডটাউন টানেলে প্রবেশের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। টানেলের প্রবেশদ্বারের একটি লেন সব সময়ই বন্ধ থাকতে দেখা যায়।