ব্যক্তিত্ববান মানুষ হতে কে না চায়? কারণ ব্যক্তিত্ববান মানুষকে সবাই পছন্দ করে। কিন্তু, কখনো কি চিন্তা করে দেখছেন, একজন মানুষের মধ্যে কী কী বৈশিষ্ট্য থাকলে আমরা তাঁকে একজন ব্যক্তিত্ববান মানুষ হিসেবে মনে করতে পারি? এ প্রশ্নের মোটামুটি একটি সঠিক উত্তর দিতে হলে আমাদের রীতিমতো একটি গবেষণা করতে হবে। কারণ বিভিন্ন মানুষের কাছে এ প্রশ্নের পরিধি ও উত্তর বিভিন্ন। তবে, একজন ব্যক্তিত্ববান মানুষ সাধারণত—
১. ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন
২. ভালো শ্রোতা হন ও অন্যের কাছ থেকে শেখেন
৩. নিজস্ব চিন্তা ভাবনায় আত্মবিশ্বাসী থাকেন
৪. সহযোগিতা করেন, নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হন এবং
৫. সর্বোপরি ভেবেচিন্তে কথা বলেন ও নিজ কথার মূল্য বজায় রাখেন।
একজন ব্যক্তিত্ববান মানুষকে দেখে এই তালিকা আরও অনেক বড় করা যাবে। তবে, একজন ব্যক্তিত্ববান মানুষ সাধারণত যা যা করেন না বা যেসব জিনিস থেকে নিজেকে বিরত রাখেন, তা হলো—
১. তাঁরা তাঁদের নিজ জীবনের ব্যক্তিগত বিষয় সবার সঙ্গে শেয়ার করেন না।
২. তাঁরা নিজের মতো থাকেন। তাই, তাঁরা অন্যের কাছে নিজেকে আকর্ষণীয় করে তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন না।
৩. তাঁরা তাঁদের মতামতে অন্যের সমর্থন খোঁজেন না। কারণ, তাঁরা জানেন তাঁদের চেয়েও ভালো মতামত কেউ দিতে পারে।
৪. তাঁরা যেকোনো বিষয়ে হুট করে কোনো মন্তব্য করেন না এবং কম কথা বলেন।
৫. তাঁরা অজুহাত দেখাতে পছন্দ করেন না। তাই, তাঁরা সাহসী হয়ে সমস্যা সমাধানে নিজে কাজ করেন।
বিভিন্ন লেখক ও গবেষকদের মতে ব্যক্তিত্ববান মানুষ হওয়ার অনেক উপায় থাকলেও তাঁরা সবাই যেসব বিষয়ে একমত তা হলো—
১. ভেবেচিন্তে কথা বলুন। কারণ মুখের কথা ও ধনুকের তীর—দুটোই কিন্তু একই রকম। মানে, দুটি যদি একবার বেরিয়ে যায়, ওটাকে আর ফেরানো যায় না। তাই, আমাদের সবার প্রিয় ইত্যাদি অনুষ্ঠানের লেখক, পরিচালক, প্রযোজক ও উপস্থাপক হানিফ সংকেত বলেন, ‘কথা যখন বলা হবে, তখন অন্যের টের পাওয়ার আগে আমাদের ঢের ভেবে নেওয়া উচিত, এর জের কোনো দিকে যাবে।’ আর, সে জন্য সাধক সত্যানন্দ বলেছিলেন, ‘অনেক কথার অনেক দোষ, ভেবেচিন্তে কথা কোস।’ তাই, যখন আপনি ভেবেচিন্তে কথা বলবেন, তখন অটোমেটিকভাবেই আপনি কম কথা বলবেন, আপনার কথার মূল্য বাড়বে এবং আপনি অন্যের কথা শুনতে মনোযোগী হবেন।
২. কথা রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করুন। কারণ মানুষের ব্যক্তিত্ব প্রকাশ পায় তাঁর নিজ কথা রাখার যোগ্যতায়। উদাহরণ, আপনি যখন কাউকে ৫০০ টাকা ধার দেওয়ার কথা বলেন, সে মানুষটি কিন্তু আপনার ওপর নির্ভরশীল হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে আপনি হঠাৎ করে কোনো সমস্যায় পড়লে সময় থাকতে আগে তাঁকে আপনার সমস্যার কথা জানিয়ে দিন। এসব ক্ষেত্রে দেখা যায়, খুবই ব্যক্তিত্ববান মানুষ নিজের কাছে টাকা না থাকলেও শুধুমাত্র তাঁর আগের কথা রাখতে অন্য কোনোভাবে টাকা ম্যানেজ করে সময়মতো সেই ৫০০ টাকা ধার দেন। কারণ, তিনি জানেন তাঁর নিজের কথার মূল্য কতটুকু।
৩. চরিত্রবান হোন। কারণ ব্যক্তিত্ববান কথার মানেই হচ্ছে চরিত্রবান। সৎ কথা বলা, সৎ পথে চলা ও সৎ উপদেশ দেওয়াই চরিত্রবান হওয়ার মূল ভিত্তি। চরিত্রবান মানুষ সব সময়ই নৈতিক হন এবং অন্যরা তাঁদের মাধ্যমে উপকৃত হন। কাজেই, অন্যরা তাঁদের ব্যক্তিত্ববান মানুষ বলে মনে করেন।