মার্কিন বিমান হামলায় বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি রোধে এ-সংক্রান্ত কর্মকৌশল সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছেন পেন্টাগনপ্রধান। খবর এএফপির।
পেন্টাগনের কর্মকর্তাদের গতকাল বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। মার্কিন বিমান হামলায় বেসামরিক মানুষের প্রাণহানির একাধিক ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপ নিল।
পেন্টাগনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের প্রতি দেওয়া নির্দেশনায় লয়েড অস্টিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থে যখন সামরিক শক্তি প্রয়োগ করা হবে, তখন বেসামরিক মানুষের সুরক্ষার বিষয়টি মৌলিকভাবে মাথায় রাখতে হবে। এটি কৌশলগত ও নৈতিকভাবে বাধ্যতামূলক একটি বিষয়।
সামরিক অভিযানকালে বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি কীভাবে কমিয়ে আনা যায়, কীভাবে এড়ানো যায়, তা নিয়ে একটি পরিকল্পনা তৈরির জন্য পেন্টাগনের কর্মকর্তাদের ৯০ দিন সময় দিয়েছেন লয়েড অস্টিন। এ ব্যাপারে আফগানিস্তান ও ইরাকের ঘটনা থেকে শিক্ষা নেওয়ার কথা বলেন তিনি।
মার্কিন বিমান হামলায় বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি নিয়ে সমালোচনার মুখে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের শেষ সময়ে কাবুলে সন্দেহভাজন আইএস জঙ্গিদের লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। এই হামলায় ৭ শিশুসহ ১০ জন নিহত হন। নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই ছিল একই পরিবারের।
কাবুলে হামলার ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদনে মার্কিন বিমানবাহিনীর মহাপরিদর্শক লেফটেন্যান্ট জেনারেল সামি ডি সেইড বলেন, এই ঘটনায় যুদ্ধসংক্রান্ত আইনসহ কোনো আইন লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। নানা ভুলে দুঃখজনক এই ঘটনা ঘটেছে। সত্যিকার অর্থেই এটা ছিল একটা ভুল। তবে তা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ছিল না।
তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্রের মিশনের জন্য হুমকি বিবেচনা করে ওই ড্রোন হামলা চালানো হয়েছিল। কিন্তু হামলা চালানোর জন্য পাওয়া তথ্য ঠিক ছিল না। এ জন্য যুক্তরাষ্ট্র অনুতপ্ত, তবে এই হামলার জন্য কাউকে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে না।
নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালের মার্চে আইএসের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের লড়াইয়ের শেষদিকে মার্কিন বোমা হামলায় প্রায় ৭০ জন সাধারণ মানুষ নিহত হন। তবে মার্কিন সামরিক বাহিনী এই ঘটনার কোনো তদন্ত করেনি। এ জন্য যুক্তরাষ্ট্র কাউকে জবাবদিহির আওতায়ও আনেনি।