ভারতীয়দের জন্য কর্মভিত্তিক গ্রিনকার্ড বা এইচওয়ানবি ভিসার সুযোগ বন্ধ থাকায় এখন বেশি বেশি খরচ করে একটি স্থায়ী বসবাসের সুযোগ নিতে মরিয়া হয়ে উঠছেন ভারতীয়রা। এ ক্ষেত্রে তারা বিনিয়োগ ভিসা বা ইবি-৫ এর দিকে ঝুঁকছেন।
এই প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের গ্রাম বা অনুন্নত এলাকায় এককভাবে ৫ লক্ষ ডলার বিনিয়োগ ও অন্তত ১০ জন লোকের কর্মসংস্থান দেখাতে পারলেই মিলতে পারে ‘সোনার হরিণ’ গ্রিনকার্ড। কেউ যদি এই ঝুঁকি নিতে না চান তাহলে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পে ১০ লক্ষ ডলার বিনিয়োগ দেখিয়েও গ্রিন কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন।
বিএনসিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ছবি-৫ ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে আছেন চীনারা। যুক্তরাষ্ট্র প্রতিবছর গড়ে ১০ হাজার গ্রিনকার্ড দেয় বিনিয়োগ কোটায়। সেখানে প্রতিটি দেশের জন্য ৭ শতাংশ করে বরাদ্দ থাকে। কিন্তু, অন্যরা আবেদন করে না বলে চীনের ছবি-৫ এর সুবিধাভোগীর সংখ্যাই বেশি। গত ১০ বছর ধরে প্রতি বছর বরাদ্দ করা গ্রিন কার্ডের সাড়ে ৭ হাজারই লুফে নেন চীনা বিনিয়োগকারীরা।
এখন অবশ্য বিনিয়োগ করে গ্রিন কার্ড পেতে মনোযোগী হচ্ছেন ভারতীয়রা। পাঁচ বছর আগে ভারত থেকে ইবি-৫ এ ৫০টি আবেদন পড়ত না। এখন প্রতি বছর ৫০০ এর বেশি আবেদন পড়ছে। ইবি-ফাইভ ব্রিকস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী বিবেক তান্দন বলছিলেন, তিনি একাই দেড় শর বেশি আবেদন নিয়ে কাজ করছেন।
এখন এই ইবি-৫ সংক্রান্ত প্রচারণা এবং বিজ্ঞাপনও দেখা যাচ্ছে ভারতীয় পত্রপত্রিকায়। যেটা আগে দৃশ্যমান ছিল না বলে জানিয়েছেন আরেকজন ইবি-৫ ভিসা প্রক্রিয়াকরণ পরামর্শক সংগীতা কুল। ‘ভারতীয়দের কাছে আগে এই বিনিয়োগ-সংক্রান্ত গ্রিনকার্ড এর ধারণা প্রচার করার কোনো উদ্যোগ দেখা যেত না। কিন্তু এখন ভারতীয় অনেক পত্রপত্রিকায় এ সংক্রান্ত পুরো পাতা বিজ্ঞাপনেরও দেখা মেলে’-বলছিলেন সংগীতা কুল।
ইলিনয়ের সাবেক কংগ্রেসম্যান অ্যারন শক জানিয়েছেন, খুব সম্ভবত সেপ্টেম্বর মাসেই ইবি-৫ গ্রিনকার্ড এর জন্য বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়ানো হবে। এটা গত ৩০ বছর ধরে একই অঙ্কে স্থির আছে। এ কারণেই যুক্তরাষ্ট্রে গ্রিনকার্ড পাওয়ার ব্যাপারে এই ক্যাটাগরিকে অনেকে লোভনীয় মনে করেন।
ইবি-৫ সংক্রান্ত একটি সেমিনার ভারতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে গিয়ে বক্তব্য দেন অ্যারন শক। সেখানে তিনি বলেন, আগে থেকে কিছুই বলা যাবে না যে কী ঘটতে যাচ্ছে। আমেরিকার ইবি-৫ এর নিয়মকানুন কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এমনকি ব্রিটেনের স্থায়ী আবাসনের নিয়মনীতির চেয়ে অনেক সহজ ও সস্তা।
‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলে থাকেন, আমরাই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দেশ। কিন্তু আমাদের বিনিয়োগভিত্তিক স্থায়ী বসবাসের আবেদন প্রক্রিয়াটি এত সস্তা কেন?’- বলছিলেন অ্যারন শক।