এপস্টেইনের নারী কেলেঙ্কারি

বাকিংহাম প্যালেসে রাজ পরিবারের আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব থেকে বহিষ্কার প্রিন্স অ্যান্ড্রু

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গে ব্রিটিশ যুবরাজ ডিউক অব ইয়র্ক অ্যান্ড্রু। ছবি: রয়টার্স
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গে ব্রিটিশ যুবরাজ ডিউক অব ইয়র্ক অ্যান্ড্রু। ছবি: রয়টার্স

নিউইয়র্কের একটি কারাগারে মৃত মার্কিন ধনকুবের জেফরি এপস্টেইনের নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায় ব্রিটিশ যুবরাজ ডিউক অব ইয়র্ক অ্যান্ড্রুর জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে বেশ আগেই। এ ঘটনায় বাকিংহাম প্যালেসে রাজ পরিবারের আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

টাইমস অব লন্ডনের বরাত দিয়ে ২২ নভেম্বর নিউইয়র্ক ডেইলি নিউজ–এর প্রতিবেদনে বলা হয়, জেফরি এপস্টেইনের নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায় ২২ নভেম্বর বাকিংহাম প্যালেসে রাজপরিবারের আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব থেকে ডিউক অব ইয়র্ক অ্যান্ড্রুকে বহিষ্কার করা হয়।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, শিশু-কিশোরীদের পাচার ও জোর করে যৌনদাসীর কাজ করানোর মতো গুরুতর অভিযোগে গ্রেপ্তার হন মার্কিন ধনকুবের জেফরি এপস্টেইন। নিউইয়র্কের একটি কারাগারে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে তাঁর। এই মৃত্যু নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। ধারণা করা হচ্ছে, কারাগারে আত্মহত্যা করেছেন এপস্টেইন। আবার ষড়যন্ত্র তত্ত্ব সামনে এনে অনেকে বলছেন, আত্মহত্যার বদলে খুনও হয়ে থাকতে পারেন এপস্টেইন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি বিবিসিকে দেওয়া অ্যান্ড্রুর সাক্ষাৎকার সম্প্রচারিত হওয়ার পর থেকেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০ বছর আগে মার্কিন এক কিশোরীর সঙ্গে জোর করে যৌন সংসর্গ করেছিলেন তিনি। এপস্টেইন তাঁকে ওই কিশোরীর সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেন। সাক্ষাৎকারে এপস্টেইনের সঙ্গে বন্ধুত্বের কথা স্বীকার করেছেন তিনি। কিন্তু ওই নাবালিকার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক ও এ নিয়ে এপস্টেইনের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন তিনি। ওই নাবালিকাকে জড়িয়ে ধরার যে ছবি দেখা গেছে, সেই ছবিও ‘ভুয়া’ হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এপস্টেইন প্রসঙ্গে যুবরাজ বলেন, ‘সে সময়ে যা সঠিক মনে হয়েছিল, তাই করেছি। এপস্টেইনের সূত্রে অনেকের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল, যা আমার কাজে লেগেছে।’

জেফরি এপস্টেইন। ফাইল ছবি: রয়টার্স

এই সাক্ষাৎকার প্রচারের পরই রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ যুবরাজ চার্লসের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে রানি তাঁর ডিউক অব ইয়র্ক অ্যান্ড্রুকে রাজ পরিবারের আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন। একই দিনে অ্যান্ড্রুর ব্যক্তিগত সেক্রেটারি আমান্ডা থার্কসকে চাকরিচ্যুত করেন রানি।

টাইমস অব লন্ডন–এর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ব্রিটিশ রাজ পরিবারে অ্যান্ড্রুই প্রথম সদস্য যাকে রাজ পরিবারের আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।

নিউইয়র্কে জন্ম নেওয়া এপস্টেইনের বিরুদ্ধে ২০০২ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েদের জোরপূর্বক যৌনকাজে বাধ্য করার অভিযোগ আনা হয়। ২০০৮ সালের ৬ জুলাই নিউজার্সি বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতে দেখা গেছে তাঁকে। বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ও যুক্তরাজ্যের প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সঙ্গে অনেকবারই দেখা গেছে এপস্টেইনকে। ২০০২ সালে নিউইয়র্কের এক সাময়িকীতে এপস্টেইনকে ‘চমৎকার মানুষ’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন ট্রাম্প। এপস্টেইনকে ১৫ বছর ধরে চিনতেন বলেও তখন মন্তব্য করেছিলেন ট্রাম্প।