যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের পিটসবার্গ শহর পরিদর্শনে গিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। উদ্দেশ্য, শহরটির রাস্তাঘাট ও সেতুসহ নানা অবকাঠামোর উন্নয়ন নিয়ে কথা বলা। তবে এর ঘণ্টা দুয়েক আগেই ঘটে বিপত্তি। ভেঙে পড়ে শহরের একটি সেতু। ভাঙা সেতুটি পরিদর্শনের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট আশ্বাস দিয়েছেন, পিটসবার্গ শহরের নড়বড়ে সব সেতু মেরামত করা হবে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়, শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ছয়টার দিকে ‘ফোর্বস অ্যাভিনিউ ব্রিজ’ নামের সেতুটি ভেঙে পড়ে। এ সময় সেটির ওপরে একটি বাসসহ ছয়টি যানবাহন ছিল। এ ঘটনায় নিহত হননি কেউ। তবে ১০ জন সামান্য আহত হয়েছেন। তাঁদের ৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দুর্ঘটনার পরপরই দড়ি দিয়ে লোকজনকে উঠিয়ে নিরাপদে নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের প্রধান ডারিল জোনস। এ ছাড়া মানব শৃঙ্খল তৈরি করে উদ্ধারকাজ চালানো হয় বলে জানান তিনি। ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজের জন্য প্রশিক্ষিত কুকুর ও ড্রোনও দেখা গেছে।
এদিকে ভেঙে পড়ার পর ওই সেতুর নিচ দিয়ে যাওয়া গ্যাসের লাইনে ছিদ্র হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জন নিরাপত্তাকর্মীরা। এলাকাজুড়ে গ্যাসের তীব্র গন্ধও পাওয়া গেছে। এর জের ধরে নতুন করে কোনো দুর্ঘটনা ঠেকাতে স্থানীয় লোকজনকে ঘটনাস্থল এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে।
দুর্ঘটনার কবলে পড়া ব্যক্তিদের একজন ডারিল লুসিয়ানি। পেশায় বাসচালক। শুক্রবার সেতুটির ওপর দিয়ে বাস চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। স্থানীয় একটি গণমাধ্যমকে লুসিয়ানি বলেন, ‘বাসটি ডিগবাজি খাচ্ছিল এবং কাঁপছিল। সে সময় মনে হচ্ছিল এটা অনেকক্ষণ ধরেই চলছে। তবে এক মিনিটের কম সময়ের মধ্যে সেটি থেমে যায়। আমি কৃতজ্ঞ যে বাসের কেউ আহত হননি।’
ফোর্বস অ্যাভিনিউ সেতুটি বেশ পুরোনো। নির্মাণ করা হয় ১৯৭০ সালে। কী কারণে সেটি ভেঙে পড়ল তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তবে এ বিষয়ে শহরের মেয়র এড গাইনি বলেন, ২০১৯ সালে সেতুটির কাঠামোগত অবস্থা খতিয়ে দেখা হয়। সে সময় অবকাঠামোর অবনতি হয়েছে বলে ধরা পড়ে। সবশেষ গত সেপ্টেম্বরে সেতুটি আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছিল।
গত নভেম্বরে নতুন একটি আইন প্রণয়ন করে জো বাইডেন সরকার। ওই আইনের আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের সড়ক ও সেতুগুলো পুনর্নির্মাণ করতে ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ দেওয়া হয়। দেশটির ফেডারেল ট্রান্সপোর্টেশন অফিস বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৪৫ হাজার সেতুর অবস্থা নড়বড়ে। এর মধ্যে ৩ হাজারের বেশি সেতু রয়েছে শুধু পেনসিলভানিয়েতেই।
এদিকে শুক্রবারেই ভেঙে পড়া সেতুটি পরিদর্শন করেছেন বাইডেন। এরপর ওয়েস্ট মিফলিন এলাকায় একটি বক্তৃতা দেন তিনি। সেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি বুঝতে পারিনি পিটসবার্গে অন্য শহরের তুলনায় বেশি সেতু রয়েছে। সেগুলোর সব মেরামত করা হবে। আর এটা কোনো রসিকতা নয়।’