জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে বিশ্বে শান্তি রক্ষায় আত্মাহুতি দেওয়া ১২ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীকে মরণোত্তর পদক দেওয়া হচ্ছে।
জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ২৪ মে শান্তির জন্য আত্মাহুতি দেওয়া বীরদের পদক প্রদান ও সম্মাননা অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে। সদর দপ্তরে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস পালিত হচ্ছে ২৮ মে।
জাতিসংঘের দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বহির্বিশ্বে জাতিসংঘের কার্যালয়ে এই দিনটি ২৯ মে পালন করা হবে। প্রতি বছরের মতো দিবসটিকে কেন্দ্র করে নিউইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘ সদর দপ্তরে দ্যাগ হ্যামারশোল্ড পদক দেওয়া হবে।
মূলত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের নারী এবং পুরুষকে বিশ্বে শান্তি রক্ষার লক্ষ্যে পেশাদারি মনোভাব বজায়, কর্তব্যপরায়ণতা, নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করার জন্য এই পদকটি দেওয়া হয়।
জাতিসংঘে যে ১২ জন শহীদ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীকে মরণোত্তর দ্যাগ হ্যামারশোল্ড পদক দেওয়া হবে তাঁরা হলেন-এসএনকে আরজান হাওলাদার, এসএনকে মো. রিপুল মিয়া, এসএনকে মো. জামাল উদ্দিন, ডব্লিওও মো. আবুল কালাম আজাদ, এসএনকে মো. রায়হান আলী, এলসিপিএল মো. আখতার হোসেন, এসএনকে মো. রাসেদুজ্জামান, এসএনকে মো. জানে আলম, এসএনকে মো. মতিয়ার রহমান, এসএনকে মো. মনজুর আলী এবং এলসিপিএল মো. আশরাফ সিদ্দিকী।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর কার্যক্রমে অবদানকারী বাংলাদেশের স্থান দ্বিতীয়। ইতিমধ্যে ৬ হাজার ৬০০-এর বেশি বাংলাদেশি মিলিটারি এবং পুলিশ সদস্য সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, কঙ্গো, হাইতি, লেবানন এবং সুদান সহ মোট নয়টি স্থানে শান্তি রক্ষার লক্ষ্যে পেশাদারি মনোভাব বজায় রেখে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে।
এই দিবসকে কেন্দ্র করে জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল আন্তোনিও গুতেরেজ এক ভিডিও বার্তায় বলেন, এই দিনে আমরা সম্মানের সঙ্গে ১০ লাখ নারী ও পুরুষদের স্মরণ করছি। যারা ১৯৪৮ সাল থেকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছেন। আমরা আরও স্মরণ করছি সেই ৩ হাজার ৮০০ সদস্যদের যারা নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আত্মত্যাগ করেছে। বর্তমানে সারা বিশ্বে এক লাখ সিভিল সদস্য, পুলিশ বাহিনী ও মিলিটারি সদস্য জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর কার্যক্রমে জড়িত। আমরা তাঁদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ফর পিস অপারেশন জিন-পিয়ারে লেক্রোক্স বলেন, বেশির ভাগ সময় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর কার্যক্রমগুলো বিপজ্জনক পরিবেশে করতে হয়। শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের পৃথিবীর অনেক নিরীহ মানুষকে রক্ষা করতে কঠিন সময় ব্যয় করতে হয়। নিরীহ মানুষকে রক্ষা করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। আমরা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করছি যেন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করা যায়।