ফিলাডেলফিয়ায় অবস্থিত পেনসিলভানিয়া কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হবে এবারের মুনা কনভেনশন। আগামী ৩ জুলাই শুরু হয়ে মুসলিম উম্মাহ অব নর্থ আমেরিকার (মুনা) তিন দিনব্যাপী এ কনভেনশন শেষ হবে ৫ জুলাই। ২ মার্চ নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের একটি ভেন্যুতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মুনা নেতৃবৃন্দ এ তথ্য জানান।
নাসির উদ্দিন আহমদের কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া সংবাদ সম্মেলন পরিচালনা করেন মুনা নিউইয়র্ক সাউথ জোন সভাপতি হাফেজ আবদুল্লাহ আল আরিফ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মুনা জাতীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট সাঈদুর রহমান। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন মুনা জাতীয় কমিটির নির্বাহী পরিচালক হারুন আর-রশীদ, মুনা কনভেনশন ২০২০-এর আহ্বায়ক আরমান চৌধুরী ও মুনা নর্থ জোন সভাপতি আহমদ আবু উবায়দা। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন মাহবুবুর রহমান ও রশীদ আহমদ।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই সম্প্রতি দিল্লিতে হামলায় হতাহতদের জন্য শোক ও সমবেদনা জানানো হয়। বিশ্বব্যাপী আতঙ্ক ছড়ানো মরণব্যাধি করোনাভাইরাস থেকে মানবতাকে রক্ষার জন্য দোয়া করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রতি বছরের মতো এবারও ৩, ৪ ও ৫ জুলাই ফিলাডেলফিয়ার পেনসিলভানিয়া কনভেনশন সেন্টারে মুনা কনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে। এই সম্মেলন মুসলিম জীবনে বিশেষ করে বাংলাদেশি-আমেরিকান পরিবারের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে নেতৃবৃন্দ আশা প্রকাশ করেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘মুনা আমেরিকার একটি দাওয়াতি ও সামাজিক সংগঠন। মানুষের ব্যক্তিগত, নৈতিক ও সামাজিক মানোন্নয়নের জন্য সার্বিক প্রচেষ্টা চালানোর মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় মুনা। ১৯৯০ সালে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে করপোরেশনভুক্ত হওয়া সংগঠনটি বর্তমানে ৩০টির বেশি অঙ্গরাজ্যে কার্যক্রম চালাচ্ছে। একটি দাওয়াতি সংগঠন হিসেবে মুনা মুসলিমদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে ইসলাম পালনের পাশাপাশি অমুসলিমদের কাছে ইসলামের সঠিক শিক্ষা তুলে ধরার আহ্বান জানায়। অলাভজনক সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় এ সংগঠন কোনো দেশের কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নয়। নিজস্ব সংবিধান ও কর্মসূচির আলোকেই সংগঠনটি জন্মলগ্ন থেকে পরিচালিত হচ্ছে। মুনা চায় এমন প্রশিক্ষিত মানবসম্পদের উন্নয়ন, যারা স্রষ্টা ও প্রতিপালক আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষার সঙ্গে সঙ্গে সমাজে রাখবে উৎপাদনমুখী ভূমিকা। এ নিয়ে সপ্তমবারের মতো মুনা কনভেনশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারের লক্ষ্য ২০ হাজার লোকের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, অরাজনৈতিক সংগঠন হলেও মুনা রাজনীতি সম্পর্কে উদাসীন নয়। মুনা চায় সবার মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা গড়ে তুলতে, যাতে তারা রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয়ে নাগরিকেরা সচেতনভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে। মুনা আমেরিকায় জাতীয়ভিত্তিক সংগঠন হলেও এর প্রাথমিক লক্ষ্য বাংলা ভাষাভাষী তথা বাংলাদেশি-আমেরিকান কমিউনিটি। এটি প্রধানত বাংলা ভাষাভাষীদের মধ্যেই কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। মুনা চায় মুসলিমেরা এখানকার মূলধারার জীবনে অংশগ্রহণ করে নিজেদের অধিকার নিশ্চিত করবে এবং একই সঙ্গে নিজের আধ্যাত্মিক, নৈতিক ও সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার সংরক্ষণ করবে। তাই মুনা চায় আরও বেশিসংখ্যক বাংলাদেশিকে এর সঙ্গে যুক্ত করতে। এ ক্ষেত্রে মুনা ইয়ুথ ও ইয়ং সিস্টার অব মুনার সঙ্গে সন্তানদের সম্পৃক্ত করতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানায় মুনা। এ লক্ষ্যে প্রতিবারের মতো এবারও তরুণদের জন্য থাকবে আলাদা ইয়ুথ কনভেনশন। আলোচনা ছাড়াও থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিভিন্ন সামগ্রীর দোকান। এ ছাড়া ফিলাডেলফিয়া ভ্রমণকারীদের জন্য থাকবে নানা দর্শনীয় স্থান পরিদর্শনের সুযোগ।