যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, করোনাভাইরাসের টিকা নেওয়ার সময় সবাই তাঁর কথা মনে রাখবেন বলে তিনি আশা করেন। তিনি প্রেসিডেন্ট না থাকলে কখনোই এই টিকা পাওয়া সম্ভব হতো না বলে মনে করেন ট্রাম্প।
স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জনসন অ্যান্ড জনসনের কাছ থেকে এক কোটি টিকা সংগ্রহের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন। এরপরই ট্রাম্প এক বিবৃতিতে এ কথা জানান।
এক বছর আগে এই ১১ মার্চই মার্কিন কংগ্রেসে করোনাভাইরাস নিয়ে প্রথম আলোচনা শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ফাউসি সে সময় কংগ্রেসে পরিস্থিতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তবে ফাউসির সেসব কথায় খুব বেশি গুরুত্ব দেননি ট্রাম্প।
ওয়ার্ল্ডোমিটারসের সর্বশেষ তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মারা গেছেন ৫ লাখ ৪৩ হাজার ৭২১ জন। গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে দেশটিতে টিকা কার্যক্রম শুরু হয়।
২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পরই জো বাইডেন ব্যাপক টিকাদানের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করার কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তবে ট্রাম্পের দাবি, টিকা কার্যক্রমের কৃতিত্ব তাঁর।
যদিও করোনাভাইরাস নিয়ে বিভিন্ন সময়ে উদ্ভট কথাবার্তা বলেছেন ট্রাম্প। তিনি এটিকে সাধারণ ফ্লু হিসেবে উড়িয়ে দিতে চেয়েছেন। নিজেও করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন।
টিকা আসার পর জো বাইডেন প্রকাশ্যে টিকা নিয়েছেন। তবে ট্রাম্প কবে টিকা নিয়েছেন, তা প্রকাশ্যে জানানো হয়নি। পরে জানা গেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ও যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প জানুয়ারির শুরুতেই টিকা নিয়েছেন।
করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে জনস্বার্থ প্রচারণামূলক একটি বিজ্ঞাপনে অংশ নিয়েছেন সাবেক চার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জর্জ ডব্লিউ বুশ, বিল ক্লিনটন ও জিমি কার্টার। মানুষকে টিকা নিতে উৎসাহিত করতে দুটি বিজ্ঞাপনে দেখা যাবে তাঁদের। এ প্রচারকাজে তাঁদের সঙ্গে দেখা যাবে চার সাবেক ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা, লরা বুশ, হিলারি ক্লিনটন ও রোজালিন কার্টারকেও। তবে ট্রাম্প ও মেলানিয়াকে এ ধরনের কোনো প্রচারে দেখা যায়নি।
ট্রাম্পের সমর্থকেরা মনে করেন, তিনি জরুরি ভিত্তিতে টিকা বাজারজাত করতে ওষুধ কোম্পানিগুলোকে কাজের সুবিধা করে দিয়েছেন। এ নিয়ে পর্যাপ্ত তহবিল নিশ্চিত করেছেন। ট্রাম্পের সমর্থকেরা সে সময় দাবি করেন, ওবামা কেয়ার নামে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা আইনের মতো কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের নাম ট্রাম্প ভ্যাকসিন করা হোক।
যুক্তরাষ্ট্রে এখন গড়ে প্রতিদিন ২০ লাখের বেশি মানুষকে করোনার টিকা দেওয়া হচ্ছে। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল বলছে, দেশটির প্রায় ১৮ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়ে গেছে। স্বাস্থ্যসেবীরা আশা করছেন এই গ্রীষ্মেই বেশির ভাগ মানুষকে টিকা কর্মসূচির আওতায় আনা সম্ভব হবে।