যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

প্রেসিডেন্টের কাজে মন নেই ট্রাম্পের

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সরকারি কাজে ডোনাল্ড ট্রাম্পের খুব কম আগ্রহ লক্ষ করা যাচ্ছে। ট্রাম্পের সরকারি কাজের সাম্প্রতিক সূচি পর্যালোচনা করে বুধবার সিএনএন এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

সিএনএন বলছে, ট্রাম্পের সরকারি কাজের সূচি ইঙ্গিত করে, তিনি ছুটি ছাড়াই তাঁর কাজে অনুপস্থিত।

ছয় দিনের মধ্যে গতকাল বুধবার ট্রাম্প প্রথম প্রকাশ্যে আসেন। এদিন তিনি ‘ভেটেরানস ডে’ উপলক্ষে আর্লিংটন ন্যাশনাল সিমেট্রিতে যান। তাঁর পাশে ছিলেন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। এ অনুষ্ঠানে কোনো কথা বলেননি ট্রাম্প।

ট্রাম্প এখনো যুক্তরাষ্ট্রের বৈধ প্রেসিডেন্ট। সদ্য সমাপ্ত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি পরাজিত হয়েছেন। তবে পরাজয় মেনে নিতে তিনি নারাজ।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে আরেক দফায় ক্ষমতায় থাকতে ট্রাম্প মরিয়া। এ জন্য ভোট নিয়ে আইনি লড়াইয়ের কথা বারবার বলে চলছেন তিনি। কিন্তু প্রেসিডেন্টের সরকারি কাজের প্রতি তাঁর আগ্রহ খুব কমই দেখা যাচ্ছে।

নির্বাচনের পরপরই ভোট গণনা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার হুমকি দেন ট্রাম্প। তারপর বেশ কিছু দিন কেটে গেছে। কিন্তু এই সময়কালে ট্রাম্প এমন কোনো কাজ করেননি, যাতে মনে হয় তিনি এখনো যুক্তরাষ্ট্র চালাচ্ছেন।

সরকারি কাজে মনোযোগী হওয়ার পরিবর্তে ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে একের পর এক ভিত্তিহীন দাবি করে যাচ্ছেন। তাঁর পোস্টের মধ্যে অনেকগুলোতে সতর্কবার্তা পর্যন্ত সেঁটে দিয়েছে টুইটার। এ ছাড়া তাঁকে গলফের মাঠেও সময় কাটাতে দেখা গেছে।

হোয়াইট হাউসের এক মুখপাত্র অবশ্য ট্রাম্পের ঢিলেঢালা সরকারি কার্যসূচির পক্ষে সাফাই করেছেন। তাঁর দাবি, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর সব দায়িত্বই পালন করছেন।

হোয়াইট হাউসের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি জাড ডিয়ার বলেন, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য কঠোর সংগ্রাম করছেন। একই সঙ্গে তিনি আমেরিকা ফার্স্ট নীতি বজায় রাখতে সব ধরনের দায়িত্ব পালন করছেন।

মঙ্গলবার ট্রাম্প তাঁর রাজনৈতিক ও হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তাঁর এই বৈঠকের উদ্দেশ্য—আইনগত কৌশলের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা। এই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, পরাজয় স্বীকার করার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ইতিবাচক ইঙ্গিত দেননি ট্রাম্প।

ট্রাম্প পরাজয় স্বীকার করতে অস্বীকৃতি জানানোয় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের মধ্যে এমন ধারণা ছড়িয়ে পড়েছে যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনকে কোনো ধরনের সহযোগিতা করা একটা নিষিদ্ধ কাজ।

এদিকে ট্রাম্প নিজেও সরকারি কাজকর্মে অনুপস্থিত। বরং এই সময়ে বাইডেন অনেকটা প্রেসিডেন্টের মতো কার্যসূচি অনুসরণ করছেন। তিনি সংবাদ সম্মেলন করছেন। বিশ্ব নেতাদের ফোন ধরছেন। তাঁর নিয়োগ করা করোনা পরামর্শ বোর্ডের সঙ্গে বৈঠক করছেন।

গত ২ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর বা তার পরবর্তী সময়ের ট্রাম্পের দৈনন্দিন সরকারি কার্যসূচি পর্যালোচনা করেছে সিএনএন। এতে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সরকারি অনুষ্ঠান আয়োজনের কমতি দেখা যায়।

বিশেষ করে করোনা মহামারির এই সময়ে এক মাসের বেশি সময় ধরে প্রেসিডেন্টের অফিশিয়াল মিটিংয়ে কমতি দেখা গেছে। এই বিষয়টি চোখে পড়ার মতো। ট্রাম্পের সবশেষ ইনটেলিজেন্স ব্রিফিংয়ের কার্যসূচি দেখা যায় গত ২ অক্টোবর।

এমনকি নির্বাচনের দিন কয়েক পর সব গণমাধ্যম যখন বাইডেনকে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করে, তখন ট্রাম্প গলফ ক্লাবে ছিলেন।