ইউক্রেনে রুশ বাহিনী হামলা শুরু করার দুই সপ্তাহ পর রাশিয়ার জ্বালানি পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে ওই নিষেধাজ্ঞার পর রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার এক ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তার বরাতে গত রোববার রুশ সংবাদমাধ্যমগুলো এ খবর প্রকাশ করেছে।
চীনের দৈনিক গ্লোবাল টাইমস বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের তেল আমদানির এ তথ্য দিয়েছেন রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি সেক্রেটারি মিখাইল পোপভ। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র শুধু রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করছে না, এক সপ্তাহে দৈনিক অপরিশোধিত তেল আমদানি ৪৩ শতাংশ বা ১ লাখ ব্যারেল বাড়িয়েছে।
ইউরোপকেও ওয়াশিংটনের একই পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানোর প্রসঙ্গ টেনে মিখাইল পোপভ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যে এমন চমক দেবে, সেটা ইউরোপের আগেই বোঝা উচিত ছিল। তিনি বলেন, ‘শুধু তেল নয়, জরুরি পণ্য বলে রাশিয়া থেকে খনিজ সার আমদানি করতে মার্কিন কোম্পানিগুলোকে অনুমতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।’
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরু করার পর যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদেশগুলো মস্কোর ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দেয়। অর্থনীতির চালিকা শক্তি দেশটির জ্বালানি তেলে নিষেধাজ্ঞার কথাও ভাবে পশ্চিমা দেশগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিলেও রাশিয়ার তেল-গ্যাসের ওপর নির্ভরশীলতার কারণে ইউরোপের পক্ষে সেটা সম্ভব হয়নি।
তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রাশিয়ার জ্বালানি পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা না দিলেও যুক্তরাজ্য ঘোষণা দেয়, চলতি বছরে শেষ থেকে ধাপে ধাপে রাশিয়ার তেল আমদানি থেকে সরে আসবে তারা। এরপর যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপে তাদের প্রধান মিত্র যুক্তরাজ্য মিলে ইউরোপকে রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধে চাপ দিতে থাকে।
গত ৮ মার্চ রাশিয়া থেকে তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস ও কয়লা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়ে বাইডেন বলেন, রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি বন্ধের কারণে তাঁর দেশকে মূল্য দিতে হবে। কিন্তু আইনপ্রণেতারা এমন পদক্ষেপের ব্যাপারে একমত।
রাশিয়ার জ্বালানি আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বাইডেন ওই দিন একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এ আদেশ তাৎক্ষণিক কার্যকর হয়। তবে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ জানায়, আগে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী আমদানির জন্য ৪৫ দিন সময় পাবে কোম্পানিগুলো। ২২ এপ্রিল এই সময় শেষ হবে।