আইন পাস করার পর যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সি রাজ্যে গত বছর ১২ জন লোক স্বেচ্ছামৃত্যু বেছে নিয়েছেন। ২০১৯ সালের আগস্টে নিউজার্সিতে সম্মানের সঙ্গে মৃত্যু (ডেথ উইথ ডিগনিটি) আইন পাস হয়েছে। এ আইনের ফলে কোনো ব্যক্তি অসুস্থতার চরমে পৌঁছে নিজের মৃত্যুর জন্য প্রেসক্রিপশনের ওষুধ গ্রহণ করতে পারেন।
কেউ যদি জানতে পারেন, তার বাঁচার সম্ভাবনা ছয় মাস বা তার চেয়ে কম, তখন স্বেচ্ছায় নিজের জীবন অবসানের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন আইনসিদ্ধভাবে।
গত ৩১ জুলাই প্রকাশিত রাজ্যের প্রতিবেদনে জানা গেছে, গত বছরের আগস্ট থেকে ডিসেম্বরের মধ্যেই নিউজার্সির ছয়জন পুরুষ ও ছয়জন নারী এ আইনের সুযোগ গ্রহণ করেন। প্রতিবেদনে জানা গেছে, এসব লোকের বয়স ৫০ থেকে ৯৩ বছরের মধ্যে ছিল। ১২ জনের মধ্যে ১১ জনই শ্বেতাঙ্গ ও একজন এশীয়। ১০ জন স্বেচ্ছামৃত্যু বেছে নিয়েছেন নিজের ঘরে। একজন নার্সিং হোমে ও অন্য একজন অন্য কারও ঘরে মৃত্যুবরণ করেন। এর মধ্যে সাতজনের ক্যানসার ছিল। অন্যদের মধ্যে স্নায়ু ক্ষয়ে যাওয়া রোগ, ফুসফুস ও পাকস্থলীতে অসুখ ছিল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ডেথ উইথ ডিগনিটি আইনে বলা হয়, স্বেচ্ছামৃত্যুর জন্য মৌখিকভাবে দুবার অনুরোধ করতে হবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে। প্রথমবারের অনুরোধের ১৫ দিন পর দ্বিতীয় অনুরোধ করতে হবে। লিখিতভাবে অনুরোধ করতে হবে একবার। চিকিৎসককে এ মর্মে সার্টিফিকেট দিতে হবে যে স্বেচ্ছামৃত্যুর জন্য আবেদন করা ব্যক্তি স্বেচ্ছায় নিজে এমন আবেদন করছেন।
আমেরিকায় স্বেচ্ছামৃত্যু নিয়ে অনেক দিন ধরে বিতর্ক চলছে। আমেরিকার আটটি রাজ্য ও ওয়াশিংটন ডিসিতে এমন আইন রয়েছে। মৃত্যু অবধারিত হয়ে উঠেছে—এমন মনে করার পর একজন নিজের জীবন অবসানের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন কি না, এ নিয়ে বিতর্ক। স্বেচ্ছামৃত্যুর পক্ষের যুক্তিতে চিকিৎসার অযোগ্য মরণব্যাধিতে কষ্ট পাওয়া লোকজনের উদাহরণ দেওয়া হয়। বছরের পর বছর নার্সিং হোমে মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করা লোকজনের উদাহরণ দেওয়া হয়। অন্যদিকে, রক্ষণশীল ও ধর্মীয় গোষ্ঠীর মতে, বিষয়টা আত্মহত্যার শামিল। কোনো ধর্মই আত্মহত্যাকে সমর্থন করেনি। মৃত্যুটা প্রাকৃতিক বা স্রষ্টার ইচ্ছায় হয়ে থাকে। ফলে, রাষ্ট্র এমন কাজে অনুমোদন দিতে পারে না বলে তাঁরা মনে করেন।