নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে আয়কর আদায়ের পরিমাণ খুব দ্রুত কমছে। দীর্ঘদিন ধরেই অঙ্গরাজ্যে কর আদায়ে এ সমস্যা দেখা গেলেও এর সমাধানে নেতাদের তেমন কোনো তোড়জোড় নেই। বিষয়টি নিয়ে অনেকটাই উদাসীন নিউইয়র্কের নেতারা।
৪ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো ও কম্পট্রোলার টম দিনাপোলি গত বছর ২৩০ কোটি ডলার কম আয়কর আদায় হয়েছে বলে জানিয়েছেন। এর মধ্যে শুধু ডিসেম্বরেই লক্ষ্যের চেয়ে ৫০ কোটি ডলার কম আয়কর আদায় হয়েছে।
এর কারণ হিসেবে কুমো বলেন, ‘আমরা বরাবরই ধনীদের ওপর কর আরোপের কথা বলি। আমরা এটাই করেছি। কিন্তু এখন ঈশ্বর বিমুখ হয়েছেন; আর ধনীরা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।’
কুমো আয়কর আদায় কম হওয়ার কারণ অনেকটাই সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে পেরেছেন। তিনি বলেন, ‘নিউইয়র্কের ১ শতাংশ ব্যক্তি সবচেয়ে বেশি আয় করেন। ব্যক্তি পর্যায়ে আদায় করা মোট আয়করের ৪৬ শতাংশই আসে এই ১ শতাংশের কাছ থেকে। কিন্তু উচ্চ করহারের কারণে এই ধনাঢ্য অংশ এখন সে-সব অঙ্গরাজ্যে চলে যাচ্ছেন যেখানে কম হারে কর দিতে হয়।
অ্যান্ড্রু কুমো কারণটি যথাযথভাবে শনাক্ত করতে পারলেও কেন্দ্র সরকারকে দোষারোপের পথ বেছে নেওয়ায় তা আর সমাধানের পথ দেখাতে পারছে না। কারণ কুমোর মতে, এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। কর পুনর্গঠনের মাধ্যমে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তাতে নিউইয়র্কের ধনীদের ওপর করের বোঝা বেড়ে গেছে।
কুমোর এ যুক্তি আংশিক সত্য। কারণ কর পুনর্গঠনের ঘটনা কিছুদিন আগের হলেও, নিউইয়র্ক থেকে ধনীদের অন্য অঙ্গরাজ্যে পাড়ি জমানোর বিষয়টি শুরু হয়েছে অনেক আগেই। এম্পায়ার সেন্টারের ই জে ম্যাকমোহন কয়েক বছর আগে এ সম্পর্কিত এক জরিপের তথ্য তুলে ধরে জানান, অনেক আগে থেকেই নিউইয়র্কের উচ্চবিত্তদের মধ্যে ফ্লোরিডা ও অ্যারিজোনার মতো কম কর দিতে হয় এমন অঙ্গরাজ্যে পাড়ি জমানোর প্রবণতা শুরু হয়েছে।
পরিস্থিতি এতটাই বাজে যে, অঙ্গরাজ্য কর্তৃপক্ষ গত মাসে ১৭ হাজার ৬০০ কোটি ডলার ব্যয় হ্রাসের একটি পরিকল্পনা ঘোষণা করে। এই পরিস্থিতিকে অ্যান্ড্রু কুমো ‘ভয়াবহ হার্ট অ্যাটাকের’ সঙ্গে তুলনা করেছেন। কিন্তু এত কিছুর পরও তিনি দীর্ঘমেয়াদি কোনো সংস্কার পরিকল্পনার কথা বলেননি বলে উল্লেখ করা হয়েছে নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সমস্যাটি চিহ্নিত হলেও এর সমাধানের কোনো পথ বা করদাতাদের নিরাপত্তায় বাড়তি কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করেনি অঙ্গরাজ্য কর্তৃপক্ষ, যাতে করে তারা আশ্বস্ত হতে পারে এবং নিউইয়র্ক ছেড়ে না যায়। এ ক্ষেত্রে অঙ্গরাজ্য সিনেটের বিরোধী দলের নেতা জন ফ্ল্যানাগন সরকারের পরিসর কমানোর কথা বললেও কুমো তা খারিজ করে দিয়েছেন। তাঁর মতে, এতে সমস্যা বাড়বে বই কমবে না।