জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটি নানা কর্মসূচির মাধ্যমে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করেছে। জ্যামাইকার হিলসাইড অ্যাভিনিউর একটি রেস্টুরেন্টের পার্টি হলে ২০ ফেব্রুয়ারি একুশের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ফ্রেন্ডস সোসাইটি ছাড়াও রাজশাহী জেলা সমিতি, সুনামগঞ্জ জেলা সমাজকল্যাণ সমিতি, মোরেলগঞ্জ উপজেলা সোসাইটি ইউএসএ ইন্ক, ফেনী জেলা সদর উপজেলা সমিতি ও জকিগঞ্জ সোসাইটি অব ইউএসএ ইন্কের পক্ষ থেকে একুশের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
ফ্রেন্ডস সোসাইটির একুশের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নিউইয়র্কের বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেসা। আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান ডেভিড ওয়েপ্রিন, কুইন্স বরো প্রেসিডেন্ট মেলিন্ডা কার্টস, নিউইয়র্ক সিটির সাবেক কাউন্সিলওম্যান এলিজাবেথ ক্রাউলি ও মূলধারার রাজনীতিক মোর্শেদ আলম। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি ছিলেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা এবিএম ওসমান গণি, উপদেষ্টা ও ব্যবসায়ী শাহ নেওয়াজ, উপদেষ্টা এবং ওয়েল কেয়ারের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক সালেহ আহমেদ।
জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির সভাপতি শেখ হায়দার আলীর সভাপতিত্বে আয়োজিত একুশের আলোচনায় অতিথিরা ছাড়াও বক্তব্য দেন ফ্রেন্ডস সোসাইটির উপদেষ্টা ছদরুন নূর, নিউইয়র্ক সিটির আসন্ন পাবলিক অ্যাডভোকেট পদপ্রার্থী হেলাল শেখ, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, নিউ ডেমোক্র্যাট ওমেন্স ফোরামের সভাপতি রোকেয়া আক্তার, ফ্রেন্ডস সোসাইটির সাবেক সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক বিলাল আহমেদ চৌধুরী, সংগঠনের সাবেক সভাপতি ও উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা মনির হোসেন, সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এএফ মিসবাউজ্জামান, মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবীর, একুশ পালন কমিটির আহ্বায়ক শেখ আনসার আলী প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে উপস্থাপনায় ছিলেন ফ্রেন্ডস সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ইফজাল আহমেদ চৌধুরী ও একুশ পালন কমিটির সদস্যসচিব আব্দুল মান্নাফ।
অনুষ্ঠানে কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেসা তাঁর বক্তব্যে ফ্রেন্ডস সোসাইটির কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করে বলেন, প্রবাসে বাংলা ভাষা আর বাংলাদেশের কৃষ্টি-কালচার তুলে ধরার পাশাপাশি এসব চর্চায় ফ্রেন্ডস সোসাইটির ভূমিকা রাখছে। তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশের সরকারের পক্ষ থেকে স্থানীয় সিটি ও বরো প্রশাসনের সঙ্গে সেতুবন্ধন জোরদারের মাধ্যমে বাংলা ভাষা ও বাংলা সংস্কৃতির বিকাশে কাজ করে চলেছি এবং এ জন্য ইতিমধ্যেই নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবেশ দ্বারে অন্য ভাষার পাশাপাশি বাংলা ভাষায় ‘স্বাগতম বা ওয়েলকাম’ লেখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানের অন্য বক্তা তাঁদের বক্তব্যে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি বাঁচিয়ে রাখতে নতুন প্রজন্মকে এই ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে আরও সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানান। পাশাপাশি বক্তারা বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান ও নিউইয়র্কে একটি স্থায়ী শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ছিল সংগীতানুষ্ঠান। এতে প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী চন্দন চৌধুরী, সোমা রহমান, চন্দ্রা রায়, লিমন চৌধুরী প্রমুখ সংগীত পরিবেশন করেন। এই পর্ব উপস্থাপনায় ছিলেন ফ্রেন্ডস সোসাইটির যুগ্ম সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবু।
অনুষ্ঠানে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যে সৈয়দ আতিকুর রহমান, আনোয়ার হোসেন, আব্দুল মজিদ আকন্দ, সৈয়দ মোস্তফা আল আমীন, হামিদুর রহমান, আফরোজা রোজী, তামান্না হাসিনা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পরে একুশের প্রথম প্রহরে অর্থাৎ বুধবার দিবাগত ১২টা এক মিনিটে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি......’ গান গেয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনারে ফ্রেন্ডস সোসাইটি সহ অন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
উল্লেখ্য, প্রতিকূল আহাওয়ার কারণে ফ্রেন্ডস সোসাইটি আয়োজিত একুশের অনুষ্ঠানের ‘শিশু-কিশোরদের প্রতিযোগিতা’ বাতিল করা হয়।