ডেমোক্রেটিক পার্টির বিবাদের কেন্দ্রে এক বাঙালি!

আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিয়া-করতেস। ছবি: রয়টার্স
আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিয়া-করতেস। ছবি: রয়টার্স

ডেমোক্রেটিক পার্টির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দলের চার নারী কংগ্রেস সদস্যের ভিন্নমত রীতিমতো বিবাদে পরিণত হয়েছে। আর এর কেন্দ্রে উঠে এসেছে এক বাঙালি কর্মকর্তার নাম। তিনি সৈকত চক্রবর্তী। চার নারী সদস্যের একজন আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিয়া-করতেসের চিফ অব স্টাফ হিসেবে সৈকত কর্মরত। সৈকতের টুইটে খেপেছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।

গত মাসে প্রতিনিধি পরিষদে গৃহীত সাড়ে চার বিলিয়ন ডলারের সীমান্ত নিরাপত্তা ও জরুরি সাহায্য আইনের অনুমোদন নিয়ে স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ও দলের নেতাদের সঙ্গে ওই চার নারী সদস্যের বিরোধ শুরু হয়। ট্রাম্পের অভিবাসননীতির সমর্থনে এই আইন গৃহীত হচ্ছে—এই যুক্তিতে আলেকজান্দ্রিয়ার নেতৃত্বে ওই চার নারী সদস্য তার বিরুদ্ধে ভোট দেন। আলেকজান্দ্রিয়ার মতো বাকি তিন নারী সদস্যও অশ্বেতকায় ও বামপন্থী হিসেবে পরিচিত।

বিরোধ অবশ্য সেখানে আটকে থাকেনি। স্পিকার পেলোসি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এই চারজনের ‘না’ ভোটের প্রতি কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, ‘ওরা মোটে চারজন।’

পেলোসির কথার জবাবে আলেকজান্দ্রিয়া অভিযোগ করেন, স্পিকার ইচ্ছাকৃতভাবে অশ্বেতকায় ও নারী কংগ্রেস সদস্যদের ভূমিকা খাটো করে দেখছেন।

এতে নিজ দলের এক বৈঠকে পেলোসি তাঁর বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, কোনো বিষয়ে মতভেদ থাকলে তা দলের বৈঠকে বলা উচিত, সর্বসমক্ষে নয়।

আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিয়া-করতেসের চিফ অব স্টাফ সৈকত চক্রবর্তী। ছবি: টুইটার

এই পর্যায়ে বিতর্কে প্রবেশ করেন সৈকত। এক টুইটে তিনি অভিযোগ করেন, ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতৃত্ব যেভাবে অশ্বেতকায় কংগ্রেস সদস্যদের গুরুত্ব অগ্রাহ্য করছে, তা একসময় আমেরিকার দক্ষিণে বর্ণবাদীরা কৃষ্ণকায়দের প্রতি যে আচরণ করত, তা মনে করিয়ে দেয়। সীমান্ত তহবিল আইনের প্রতি নেটিভ আমেরিকান নারী কংগ্রেস সদস্য শ্যারিস ডেভিডসের সমর্থনকে তিনি কার্যত বর্ণবাদী বলে বর্ণনা করেন।

সৈকতের মন্তব্যের জন্য দলীয় নেতৃত্ব থেকে তাঁর (সৈকত) কঠোর সমালোচনা করা হয়। দলের পক্ষ থেকে এক টুইটে প্রশ্ন করা হয়, ‘কে এই লোকটা, যে একজন নেটিভ আমেরিকান নারী কংগ্রেস সদস্যকে বর্ণবাদী বলে অভিহিত করছেন?’

টুইটে সৈকতকে সতর্ক করে বলা হয়, ‘এই কংগ্রেস সদস্যের নাম মুখেও আনবেন না। মনে রাখবেন, তিনি একজন কংগ্রেস সদস্য, শুধু শ্যারিস নন।’

সমালোচনার মুখে সৈকত তাঁর টুইটটি মুছে দেন। তবে নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যায় তিনি ভিন্ন এক টুইট করেন। নতুন টুইটে জানান, তিনি শ্যারিস ডেভিডসকে বর্ণবাদী বলেননি। শুধু ওই আইনের প্রতি সমর্থনকে বর্ণবাদী বলেছেন।

সৈকত অবশ্য এই প্রথম তোপের মুখে পড়লেন, তা নয়। গত ডিসেম্বরে আলেকজান্দ্রিয়ার নির্বাচনে জয়ের পর নেতাজি সুভাষ বোসের চিত্রসংবলিত এক জামা পরার জন্য তিনি রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক উভয় দলের সদস্যদের সমালোচনার শিকার হন। বলা হয়, সুভাষ বোস দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে হিটলারের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন। আমেরিকান রাজনীতিকদের চোখে তা হিটলার ও নাৎসি জার্মানির প্রতি সমর্থন বলেই ভাবা হয়।