ক্যালিফোর্নিয়ার রাজধানী স্যাক্রামেন্টোর পাশের শহর ডেভিসের ভেটেরান্স মেমোরিয়াল সেন্টার থিয়েটারে ২৩ মার্চ জাঁকজমকের সঙ্গে অনুষ্ঠিত হলো বৃহত্তর স্যাক্রামেন্টোর বাংলাদেশি কমিউনিটির একমাত্র মানবিক দাতব্য সংস্থা হিউম্যান বিয়ন্ড ব্যারিয়ার্সের (এউচবিবি) চতুর্থ বার্ষিক তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠান। এইচবিবির জন্মলগ্ন থেকেই তহবিল সংগ্রহের অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসকে কেন্দ্র করে আয়োজন করা হয়।
এ ব্যাপারে এইচবিবির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. সেলিম বলেন, “বাংলাদেশ যেমন পাকিস্তানের পরাধীনতা থেকে এই স্বাধীনতা দিবসেই মুক্ত হওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল সেইভাবে আমাদের এইচবিবির অঙ্গীকার হচ্ছে দুস্থ ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের অজ্ঞতা, দারিদ্র্য ও অসুস্থতা থেকে মুক্ত করা। আমরা হয়তো সব দুস্থ ও সুবিধাবঞ্চিতদের জীবনের পরিবর্তন করতে পারব না, কিন্তু আমরা যদি কিছু মানুষকে এ থেকে মুক্ত করে তাদের জীবনযাত্রার উন্নতি করতে পারি তবে মনে করব যে দেশের উন্নতিতে কিছুটা হলেও আমরা অবদান রাখতে পারছি।”
দিনটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকায় অনুষ্ঠানে বিপুলসংখ্যক নারী-পুরুষ, শিশু ও কিশোর-কিশোরীর সমাগম ঘটে। বিদেশের মাটিতে এ যেন এক লাল-সবুজের মেলা। দেখলেই মনটা জুড়িয়ে যায়। ফলসম, স্যাক্রামেন্টো, ডেভিস, রিনো, বে-এরিয়া, বার্কলি ও সানফ্রান্সিসকো থেকে ৩০০ শতাধিক অতিথি এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন। অতিথিদের মধ্যে বেশ কিছু বিদেশিও ছিলেন।
হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া বাংলাদেশি জাতীয় সংগীত ও আমেরিকার জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। তিন ভাগে সাজানো এই অনুষ্ঠানে ছিল স্থানীয় শিল্পীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, গত বছরগুলোর এইচবিবির প্রকল্প নিয়ে আলোচনা ও এইচবিবির সাফল্য। সবশেষে অনুষ্ঠানের আকর্ষণ ছিল জাদুকর সংগীতশিল্পী সোভান আনোয়ারের একক সংগীতানুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি ছিল স্বাধীনতা দিবসের মেলা যেখানে হরেক রকম মুখরোচক দেশীয় খাবার ছাড়াও ছিল রংবেরঙের শাড়ির স্টল।
অনুষ্ঠানের মাঝামাঝি এক ঘণ্টার বিরতি ছিল নামাজ ও নৈশভোজের। সেই সময় কথা হলো বেশ কিছু অতিথির সঙ্গে, যাঁরা দৈনন্দিন কর্মব্যস্ততার মাঝেও প্রবাসে এমন একটি উদ্যোগ নেওয়ার জন্য এইচবিবির কর্মকর্তাদের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানের শেষে এইচবিবির মহাসচিব প্রকৌশলী আকিম কবির উপস্থিত অতিথিদের ধন্যবাদ জানান। এইচবিবির কর্মকর্তাদের পরিচয় করিয়ে দেন ড. শেখ সেলিম (প্রেসিডেন্ট), প্রকৌশলী এম আর খন্দকার (ট্রেজারার), প্রকৌশলী সিরাজুল চৌধুরী মিলন (জনসংযোগ ও যোগাযোগ পরিচালক), ডা. হালিমা করিম (সহকারী সচিব), প্রকৌশলী জাওদাত রহমান (প্রযুক্তি ও মিডিয়া পরিচালক), অধ্যাপক রেইমন্ড রড্রিগজ (ভাইস প্রেসিডেন্ট) এবং প্রকৌশলী সায়মা চৌধুরী শহীদ রীমা (পরিচালক, ইয়ুথ প্রোগ্রাম)।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন মৌসুমী, রাফী, রিয়ান, তাহিয়া ও তাশফিয়া। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী শিপ্লী এবং কলাকুশলী যাঁরা অনুষ্ঠানটি সার্থক করার পেছনে শ্রম দিয়েছেন, তাঁরা হচ্ছেন— অহনা, আনিস, বিপাশা, বৈজু, এজাজ, তামান্না, সোহেল, পারু, পলাশ, সারাহ, মিতু, মেশকাত, রুমা, নীলা, তাহমিদ, সেঁজুতি, বৃষ্টি, টুটুল, জীশান, জুলহাস, আফশিন, এমি, আফরীন, এমিলি, মাহীকা, শ্রীজা, মানহা, নিওশা, নওরীন, মাহির, সারিম, তাবিন, ওয়াদি, জাহি, আরিব, শাহীর, নুবাইদ, মাহের, রাইদ, শাফিক, লামিসা, জানিতা, শায়না, মাহীক, আদীনা, আফরীন, মানাল, জ্যাজলিন, রাজীব, পার্থ, শুভ, আবাবীল, প্রীতম, অর্নি, পারশা, বিপন, ফারশিদ ও লতা।
উল্লেখযোগ্য যে সব অতিথির সমষ্টিগত সহায়তায় এইচবিবি তাদের লক্ষ্য ৫০ হাজার ডলারের বেশি তুলতে সক্ষম হয়েছে। বিদেশে বসেও দেশের মাটির টানে যারা অক্লান্ত পরিশ্রম, নিজেদের উপস্থিতি, অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ ও অর্থ দিয়ে এইচবিবির কর্মকর্তাদের এমন একটি মানবিক কাজের অনুষ্ঠানকে সার্থক করতে এগিয়ে এসেছেন তাঁরা সবাই আমাদের সোনার দেশের অহংকার বৈকি!
HBB সম্পর্কে আরও বিবরণ পেতে হলে ক্লিক করুন —http://www.humanitybeyondbarriers.org/