আসন্ন অভিশংসন ভোটকে ঘিরে প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্র্যাট স্পিকার ন্যান্সি পেলোসিকে ক্ষুব্ধ চিঠি পাঠিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চিঠিতে তিনি পেলোসিকে ‘আমেরিকার গণতন্ত্রের ওপর প্রকাশ্যে যুদ্ধে’ নামার জন্য দোষারোপ করেন। আজ বুধবার প্রতিনিধি পরিষদে এই ভোট হবে।
বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার চিঠিটি পাঠান ট্রাম্প। এতে তিনি পেলোসির উদ্দেশে লেখেন, ‘অভিশংসন নামের কুৎসিত একটি শব্দের গুরুত্বকে আপনি খেলো করে ফেলেছেন।’ ছয় পৃষ্ঠার চিঠিতে তিনি অভিশংসন প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান এবং পেলোসির নিন্দা করেন।
ব্যক্তিগত রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলে ইউক্রেনের ওপর চাপ সৃষ্টির ঘটনায় আজ বুধবার ট্রাম্প অভিশংসন ভোটের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন। ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদে তিনি অভিশংসিত হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে প্রতিনিধি পরিষদের ভোটের পর তা সিনেটে উঠবে চূড়ান্ত ভোটের জন্য। সিনেটে ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় সেখানে তা পাসের সম্ভাবনা কম।
ট্রাম্প তাঁর চিঠিতে অভিযোগ করেন, এই অভিশংসন ‘প্রতারণার’ শুরু থেকেই ন্যূনতম সাংবিধানিক প্রক্রিয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। সাক্ষ্য প্রমাণ উপস্থাপন করাসহ সংবিধানে দেওয়া মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
যদিও প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বাধীন বিচার বিভাগীয় কমিটি প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন প্রক্রিয়ায় সাক্ষ্য প্রমাণ হাজির করার জন্য প্রকাশ্যেই আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। প্রেসিডেন্টের আইনজীবীদের প্রত্যক্ষদর্শীদের প্রশ্ন করার জন্যও অনুমতি দিতে চেয়েছিল। তবে প্রেসিডেন্ট তাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন।
ক্যাপিটল ভবনে স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি সাংবাদিকদের বলেন, তিনি পুরো চিঠিটি পড়েননি। তবে চিঠির ‘সারমর্ম’ দেখেছেন। তিনি মনে করেন, এটা ‘সত্যিই অসুস্থতা’।
বুধবারের অভিশংসন ভোট নিয়ে এক বিবৃতিতে ন্যান্সি পেলোসি বলেন, সংবিধানে দেওয়া অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ক্ষমতার চর্চা করবে প্রতিনিধি পরিষদ। জাতির ইতিহাসের পবিত্র এই মুহূর্তে সদস্যরা দেশি ও বিদেশি সব শত্রুদের কাছ থেকে সংবিধান রক্ষায় তাঁদের নেওয়া শপথের প্রতি সম্মান রক্ষা করবেন।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসনের দুটি অভিযোগ আনা হয়েছে। একটি হচ্ছে, অভিশংসন তদন্ত প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানানো, সাক্ষ্য দিতে তাঁর কর্মীদের বাধা দেওয়া এবং তথ্য প্রমাণ ধামাচাপা দেওয়ার মাধ্যমে কংগ্রেসের কাজকে বাধাগ্রস্ত করা। অপরটি হচ্ছে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের একটি গ্যাস কোম্পানির দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে ফোন করে চাপ দেওয়া।