ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিশংসনে যথেষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। ট্রাম্পের অভিশংসন তদন্তে গঠিত মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের প্যানেলের প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। আজ বুধবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
হাউস পারমানেন্ট সিলেক্ট কমিটি অন ইনটেলিজেন্স গতকাল মঙ্গলবার ‘ট্রাম্প-ইউক্রেন ইমপিচমেন্ট ইনকোয়ারি রিপোর্ট’ প্রকাশ করে।
৩০০ পৃষ্ঠার গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থের চেয়ে নিজের ব্যক্তিগত রাজনৈতিক স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছেন। ২০২০ সালে প্রেসিডেন্ট পুনর্নির্বাচিত হতে ট্রাম্প বিদেশি (ইউক্রেন) হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করার লক্ষ্যে প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বাধীন প্যানেল প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
প্রতিবেদনটি এখন হাউস জুডিশিয়ারি কমিটির কাছে যাবে। এই কমিটি আজ বুধবার প্রতিবেদনটি নিয়ে কাজ শুরু করবে। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিশংসন অভিযোগ আনতে তারা প্রতিবেদনটিকে ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করবে।
প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্রেটিক নেতৃত্ব জানিয়েছেন, চলতি বছরের বড়দিনের আগেই ট্রাম্পের অভিশংসন প্রশ্নে প্রতিনিধি পরিষদে ভোট নেওয়া হবে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কোনো ধরনের অপরাধ করার কথা অস্বীকার করে আসছেন। একই সঙ্গে তিনি তাঁর বিরুদ্ধে অভিশংসন তদন্তকে ষড়যন্ত্র হিসেবে বর্ণনা করছেন।
কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্র্যাটরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। এতে প্রতিনিধি পরিষদে ট্রাম্পের অভিশংসিত হওয়া প্রায় নিশ্চিত। কিন্তু তাঁকে ক্ষমতা থেকে অপসারিত করা যাবে না বলেই প্রতীয়মান হয়। কারণ, অভিশংসনের পর প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতা থেকে অপসারিত করার ক্ষমতা সিনেটের হাতে। কিন্তু বর্তমানে সিনেটে রিপাবলিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ২৫ জুলাই টেলিফোনে কথা বলেন ট্রাম্প। এ সময় আগামী নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে প্রেসিডেন্ট মনোনয়নপ্রত্যাশী জো বাইডেনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য তাঁর ছেলে হান্টার বাইডেনের অতীত ব্যবসার ব্যাপারে তদন্তের জন্য জেলেনস্কিকে চাপ দেন ট্রাম্প। বিনিময়ে ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তা তহবিল অনুমোদন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি মনে করছে, ট্রাম্প এর মধ্য দিয়ে ব্যক্তিগত কাজে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। এ পদক্ষেপ তাঁকে অভিশংসনযোগ্য করে তুলেছে।
ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে গত ২৪ সেপ্টেম্বর অভিশংসন তদন্ত শুরু করে প্রতিনিধি পরিষদ। এ নিয়ে তদন্ত করছে প্রতিনিধি পরিষদের তিনটি কমিটি।
তদন্তের অংশ হিসেবে প্রথমে রুদ্ধদ্বার সাক্ষ্য নেওয়া হয়। পরে সাক্ষীদের প্রকাশ্যে শুনানি হয়।