যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে ওয়ালমার্টের এক স্টোরে বন্দুকধারীর গুলিতে মেক্সিকোর আট নাগরিক নিহত হওয়ার ঘটনাকে মেক্সিকোবাসীর বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসবাদমূলক কর্মকাণ্ড’ বলে অভিহিত করেছে মেক্সিকো সরকার। গতকাল সোমবার বার্তা সংস্থা এএফপির এক খবরে বলা হয়, এ ঘটনার পর মার্কিন বন্দুক আইনে পরিবর্তন আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে মেক্সিকো।
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদর বলেন, শনিবারের হামলায় ২০ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগ প্রকাশ করে কোনো বৈঠকের আয়োজন করলে মেক্সিকো তার প্রতি সম্মান জানাবে। তিনি বিশ্বাস করেন, এ আলোচনার ফলে সীমান্তের উত্তরে পরিবর্তন আসতে পারে।
লোপেজ ওব্রাদর বলেন, ‘যা ঘটেছে তাকে এক কথায় দুর্ভাগ্যজনক এবং জোরালো বলা যায়। এ ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রের আইনে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। তারা সংবিধান এবং আইনে পরিবর্তন আনতে পারবে কি না জানি না। সময় বদলেছে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে, নতুন বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আইনি কাঠামো বিন্যস্ত করতে হবে।’
শনিবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের এল পাসো এলাকার সিয়েলো ভিস্তা শপিং মলে ওয়ালমার্টের একটি স্টোরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। মেক্সিকোর অধিকাংশ নাগরিকের ধারণা, মূলত হিস্পানিক এবং মেক্সিকোবাসীদের লক্ষ্য করেই এ হামলা চালানো হয়েছে।
মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্সেলো ইব্রার্ড একে ‘সন্ত্রাসবাদী ঘটনা’ হিসেবে চিহ্নিত করে আমেরিকা সরকারকে ‘ঘৃণ্য অপরাধের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট এবং দৃঢ়প্রত্যয়ী অবস্থান’ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন।
এর আগে ইব্রার্ড জানিয়েছিলেন, টেক্সাসের ঘটনায় সাতজন আহত হয়েছে। গতকাল সোমবার তিনি জানান, সেখানে মৃত ম্যাক্সিকান নাগরিকের সংখ্যা আটজনে উন্নীত হয়েছে। নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এল পাসো এলাকায় যান ইব্রার্ড। তিনি বলেন, ক্ষোভে উত্তাল হয়ে আছে মেক্সিকো।
টেক্সাসের ঘটনায় মেক্সিকোর ক্ষতিগ্রস্ত নাগরিকদের মধ্যে রয়েছেন এস্থার রেগালাডো, এডলফো কেরোস হার্নান্দেজ, জর্জ ক্যালভিল গার্সিয়া, এলসা মেন্ডোজা, গ্লোরিয়া ইরমা মার্কুইজ, মারিয়া ইউগেনিয়া, ইভান ফিলিবার্তো এবং হুয়ান দে ডায়স। আহতদের মধ্যে মেক্সিকোর আরও অনেক অধিবাসী থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইব্রার্ড বলেন, ওই বন্দুকধারীর কাছে বন্দুক বিক্রেতা ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবে মেক্সিকো। দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস একে মেক্সিকোর নাগরিকদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদমূলক কর্মকাণ্ড হিসেবে ঘোষণা করবে। তাতে মেক্সিকোর প্রসিকিউটররা মামলার অগ্রগতি জানার অধিকার পাবে, যার পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বন্দুকধারীকে মেক্সিকোতে প্রত্যর্পণ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
ইব্রার্ড বলেন, মেক্সিকোর চোখে ওই বন্দুকধারী নিঃসন্দেহে সন্ত্রাসী। মেক্সিকোর আইনপ্রণেতারা বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিদ্বেষমূলক কথার জের ধরে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের মধ্যে মেক্সিকো বিদ্বেষী মনোভাব গড়ে উঠছে। এ বিষয়ে ট্রাম্পের আরও সচেতন হওয়া জরুরি।