মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আর ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন ৪৩ বছর ধরে একসঙ্গে। সুখী দম্পতি হিসেবে কাটাচ্ছেন সংসার জীবন। ভালোবাসা দিবসে ৪৩ বছরের সুখী জীবনের গোপন মন্ত্র তাঁরা জানালেন বিশ্ববাসীকে। সম্প্রতি দেশটির এই ‘ফার্স্ট কাপল’ একসঙ্গে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। জানান নিজেদের ইতিহাস ও অতীত সম্পর্কে। কীভাবে তারা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন? কেমন ছিল তাদের বৈবাহিক জীবন? এ নিয়ে কথা তাঁরা কথা বলেন পিপল ম্যাগাজিনের সঙ্গে।
বাইডেন বলেন, ‘জিলকে দেখার কিছু সময় পরেই ঠিক করে ফেলেছিলাম, ওকে বিয়ে করব। সবাই বলে, বিয়ে হচ্ছে একটা ফিফটি-ফিফটি ব্যাপার। কিন্তু তা সত্য নয়। কখনো কখনো এটি সেভেন্টি-থার্টিও। যখন খুব খারাপ অবস্থায় থাকি, সে আমাকে উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করে এবং যখন সে বাজে অবস্থায় থাকে, আমি তাকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করি। আমার এই কথার অর্থ হলো, যখন আমি সত্যিই নিচে নেমেছি, তখন সে পদক্ষেপ নিয়েছে এবং যখন সে নিচে নেমেছে, আমি পদক্ষেপ নিতে সক্ষম হয়েছি। এতকাল আমরা দুজনেই একে অন্যের প্রতি খুবই সহায়ক থেকেছি।’
একজন সাংবাদিকের সঙ্গে এক কথোপকথনের ঘটনা স্মরণ করে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বললেন, ‘রিপোর্টার আমার দিকে তাকিয়ে বলেছিলেন, সবাই বলে, আপনি ও আপনার স্ত্রীর মধ্যে গভীর প্রেম রয়েছে।’ উত্তরে বলেছিলাম, ‘হ্যাঁ, আমিও তা-ই মনে করি।’ তবে সঙ্গে আরও যোগ করেছিলাম, ‘জিল আমাকে যতটা ভালোবাসে, সবাই তা জানে; আমি তাকে এর চেয়েও বেশি ভালোবাসি। এর অর্থ এই নয়, আমাদের মধ্যে একেবারেই ঝগড়াঝাঁটি বা কথা কাটাকাটি হয় না। তবে আমার শুধু মনে হয়, আমি খুবই ভাগ্যবান বলেই জিলকে পেয়েছি।
প্রেসিডেন্ট তাঁর কথা শেষ করেন এই বলে, ‘আমি মনে করি, জিলও ভাবে, একজন আরেকজনকে বুঝতে পারাটা খুবই জরুরি। এখনো তাঁকে দেখলে আমার হৃদয়ে কম্পন শুরু হয়ে যায়, এটাই সত্য।’
প্রত্যুত্তরে জিল বাইডেন বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে যে সময় পার করে এসেছি, তাকে এক কথায় বলা যায়, কখনো কখনো তুমি ভাঙা জায়গাগুলোতেই বেশি শক্তিশালী হয়ে ওঠো।’ আমি মনে করি, আমরা দুজনে ঠিক এই জিনিসই প্রত্যাশা করি এবং এটিই অর্জনের চেষ্টা করি ও শিখি। পরে জিল কৌতুক করে বলেন, হ্যাঁ, আসলে ৪৩ বছর সংসার করার পর ঝগড়াঝাঁটি করার তেমন কিছু থাকেও না!’
২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন বাইডেন। সে সময় তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রিয়তমা স্ত্রী ও নতুন মার্কিন ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন।
বলা হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট ও তাঁর স্ত্রীর মধ্যকার সম্পর্ক এতটাই মধুর, এ রকম ‘লাভ গোলস’ কখনোই নষ্ট হবে না। এমনকি নির্বাচনী প্রচারণার সময়েও তাঁদের দুজনের ভালোবাসার অজস্র প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ধরনের একটি চমৎকার ব্যাপার যুক্তরাষ্ট্রের জনসাধারণের মনেও নিয়ে আসবে ইতিবাচক পরিবর্তন। যারা ৪৩ বছর একসঙ্গে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখছেন, তাদের জন্য ভালোবাসা দিবসের ঠিক এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফার্স্ট কাপল’-এর কাছ থেকে সবারই কিছু শিক্ষা নেওয়ার সময় এসেছে।