নিউইয়র্কের কুইন্সে বিশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৪ মার্চ। এতে ডেমোক্রেটিক পার্টির বরো প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন কুইন্সে বসবাসরত দলের রেজিস্ট্রার ভোটাররা।
অন্য দুই প্রার্থীর সঙ্গে নির্বাচন করছেন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা অ্যান্থনি মিরান্ডা। প্রথমবারের মতো বেশ কিছু বাংলাদেশি নতুন প্রজন্ম এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মিরান্ডার সঙ্গে কুইন্সের নির্বাচনী জেলা-২৪ (রিচমন্ড হিল/সাউথ ওজন পার্ক, ব্রায়ারউড/ জ্যামাইকা/ ফ্রেশমেডো/বেলরোজ মেনর/বে সাইড/ লিটল নেক/ ফ্লোরাল পার্ক/গ্লেন ওয়াক/) এলাকায় ডেমোক্রেটিক দলের ডিস্ট্রিক্ট লিডার পদে নির্বাচন করছেন ইশতেহাক চৌধুরী।
পুলিশের অধিকার আদায়ে অ্যান্থনি মিরান্ডা এক আলোচিত নাম। তাঁর কারণেই মাইনরিটি পুলিশের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে নিউইয়র্কে। মজুরি বৈষম্য অবসানে আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে তিনি বিজয়ী হয়েছিলেন।
বিশেষ এই নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দলের বরো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। পরে আগামী ২৩ জুন ডেমোক্রেটিক প্রাইমারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে ইশতেহাক চৌধুরী ডিস্ট্রিক্ট লিডার ছাড়াও দলের জুডিশিয়াল ডেলিগেট পদেও প্রার্থী হচ্ছেন।
ইশতেহাক চৌধুরী পারিবারিক অভিবাসনে আমেরিকায় আসেন। ১৯৯২ সালে জ্যামাইকার হিলক্রেস্ট স্কুল থেকে আমেরিকার জীবন শুরু। প্রযুক্তিবিদ ইশতেহাক চৌধুরী জ্যামাইকা হাসপাতালের প্রযুক্তি বিভাগের ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে কর্মরত।
সিলেট থেকে আমেরিকায় আসা বিশাল অভিবাসী পরিবারের সদস্য ইশতেহাক। কুইন্সসহ নিউইয়র্ক, নিউজার্সির মূলধারার চাকরি, রাজনীতি, সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে এ পরিবারের সদস্যরা নানাভাবে জড়িত।
ইশতেহাক ছাত্র অবস্থায় রোটারি ক্লাবের কিশোর সংগঠন ইন্টারেক্ট ক্লাব দিয়ে তাঁর সমাজকর্ম শুরু করেন। ‘প্রোগ্রামস’ নামের এনজিওর পরিচালনা পরিষদে দায়িত্ব পালন করেন। অর্গান ডোনার নেটওয়ার্কের মতো জরুরি সেবা কার্যক্রমের সঙ্গেও তিনি জড়িত।
ইশতেহাক চৌধুরী বলেন, কুইন্সের জ্যামাইকায় বাংলাদেশি কমিউনিটি গত চার দশকে অনেক বেড়েছে। ২৫ বছর আগে স্কুলে হামলার শিকার হয়েছিলাম। আজও এ এলাকায় স্বদেশিরা হামলার শিকার হন। রক্তে লাল হয় কমিউনিটির বসতবাড়ি সংলগ্ন সড়কপথ। নিরাপদ কমিউনিটি আমরা গড়ে তুলতে পারিনি।
তিনি বলেন, শিক্ষা, বাসস্থান সমস্যা, জননিরাপত্তা, পরিবেশসহ নানা বিষয়ে কমিউনিটি এখনো বঞ্চনার শিকার। পারিবারিক মূল্যবোধ এবং নিজস্ব সংস্কৃতিকে ধারণ করে আমাদের বহুজাতিক এ সমাজে দ্রুত মাথা তুলে দাঁড়াতে হবে। নিজেকে জাহির করা নয়, মূলধারার রাজনীতিতে ঐক্যবদ্ধভাবে শক্ত অবস্থান নেওয়ার মধ্য দিয়েই এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে বলে তিনি মনে করেন।
ডিস্ট্রিক্ট লিডার পদের প্রার্থী ইশতেহাক চৌধুরী বলেন, প্রথাগত রাজনৈতিক নেতাদের বাইরে নীরবে কমিউনিটির জন্য কাজ করার যোগ্যতা ও প্রত্যয় আছে-এমন মানুষদের নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমেরিকায় আমাদের অভিবাসীদের এখন তৃতীয় প্রজন্ম চলছে। নিউইয়র্কে আমরা অনেক আগেই একটি দৃশ্যমান কমিউনিটি হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করতে পেরেছি। কর্ম যোগ্যতায় আমাদের এ এগিয়ে যাওয়ার পেছনে নীরবে কাজ করা প্রবাসীদের ভূমিকাই বেশি। এ দেশের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে, নিজেদের ভিতকে আর শক্ত করতে আমাদের রাজনৈতিক কাঠামোতে নিজেদের আরও বেশি সম্পৃক্ত করতে হবে।
ইশতেহাক চৌধুরী বলেন, ভোটার তালিকাভুক্তি করতে হবে, ভোটকেন্দ্রে নিজে যেতে হবে এবং অন্যদেরও নিয়ে যেতে হবে। নিজে ভোট দেবেন। স্বজন, পরিজন, প্রতিবেশীদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাবেন। তিনি বলেন, এ আমাদের এগিয়ে যাওয়ার লড়াই। অস্তিত্বের এ লড়াইকে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য বিনম্র আবেদন জানিয়েছেন প্রযুক্তিবিদ এবং আমেরিকায় বেড়ে ওঠা বাংলাদেশি প্রজন্মের প্রার্থী ইশতেহাক চৌধুরী।