নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট কারাতে প্রশিক্ষক সেনসি হুমায়ুন কবীর জুয়েল (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ঢাকার গ্রিনলাইফ হাসপাতালের আইসিইউতে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় মৃত্যুশয্যায় থেকে অবশেষে চলে গেলেন বিশ্বখ্যাত এই কারাতে প্রশিক্ষক ও রেফারি।
নিউইয়র্কে অবস্থানরত তাঁর পারিবার সূত্রে জানা গেছে, ১৬ মে শ্বাসকষ্টের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লে হুমায়ুন কবীরকে রাজধানীর গ্রিনলাইফ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। চিকিৎসকেরা তাঁকে সুস্থ করার আপ্রাণ চেষ্টা করেন। তবে শেষ কয়েক দিন তাঁর মস্তিষ্ক, কিডনি ও ফুসফুস সঠিকভাবে কাজ করছিল না বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। গত শনিবার থেকে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। আজ মঙ্গলবার সকালে সব চেষ্টা ব্যর্থ করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। এরপর হাসপাতাল থেকে জুয়েলের পরিবারের সদস্যদের ফোন করে খবর দেওয়া হয়।
হুমায়ুন কবীরের স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে বর্তমানে আমেরিকার নিউইয়র্কে বসবাস করছেন। সব ধরনের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ থাকায় তাঁরা দেশে ফিরতে পারছেন না।
স্ত্রী-সন্তান ছাড়াও নিউইয়র্কে বসবাসরত সেনসি জুয়েলের কারাতের ছাত্র জি এম ফিরোজ কবীর ও মঞ্জুরুল কাদের ফেসবুক স্ট্যাটাসে বিশ্বের খ্যাতিমান এই কারাতে প্রশিক্ষকের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও দোয়া চেয়েছেন।
আশির দশকে বাংলাদেশে জাপানি স্টাইলের সোতোকান কারাতে প্রশিক্ষণ শুরু হয় সেনসি হুমায়ুন কবীরের হাত ধরেই। জাতীয় অঙ্গন ছাড়িয়ে বাংলাদেশকে বিশ্বদরবারে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান তিনি। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ‘জুয়েল কারাতে একাডেমি’ বিশ্বের বুকে অতিপরিচিত এক নাম। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সেনসি জুয়েলের শিক্ষার্থীরা বহু স্বর্ণপদক অর্জন করেছেন, যা দেশের ক্রীড়াঙ্গনে একটি বিরল ঘটনা। বাংলাদেশ জুডো–কারাতে ফেডারেশনের প্রশিক্ষক এবং রেফারি ছাড়াও ওয়ার্ল্ড কারাতে ফেডারেশনের সিনিয়র রেফারি ছিলেন তিনি। বিশ্বের বহু দেশে আন্তর্জাতিক কারাতে প্রতিযোগিতায় তিনি রেফারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।