অনেকেই কম সময়ে বেশি কাজ করতে বা ভালো ফলাফল অর্জন করতে অতিরিক্ত কাজ করে হাঁপিয়ে ওঠেন। কাজের চাপে সাময়িক অসুস্থ হওয়া থেকে শুরু করে উচ্চ-রক্তচাপেও ভোগেন। ফলে নিজেদের অর্জনের চেয়ে বেশি বিপদে পড়েন তাঁরা। তাই আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কাজের চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। কাজের চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার অর্থ কম কাজ করা নয়; বরং শরীর ও মনে প্রভাব না ফেলে বেশি কাজ করা। আর কাজের চাপ যে শুধু শারীরিক পরিশ্রমেই হয়, তা কিন্তু নয়। মানসিক কাজ থেকে শুরু করে যেকোনো দুশ্চিন্তাও আমাদের কাজের চাপ বাড়ায়। তাই আসুন প্রথমে জেনে নিই অতিরিক্ত কাজের চাপের কিছু লক্ষণ—
১. পরিশ্রান্ত হওয়ার পরও ঘুমানোর সমস্যা
২. পেটের অসুখ ছাড়াও ক্ষুধামান্দ্য ভাব
৩. চেষ্টা করেও কোনো কিছুতে মনোযোগ দিতে সমস্যা
৪. আপনি যে রকমের মানুষ নন, সে রকম কোনো ব্যবহার করা
৫. রাগ নিয়ন্ত্রণে থাকলেও ঘন ঘন রাগান্বিত হওয়া
৬. অসামাজিক ব্যবহার করা
৭. বাস্তবতার বাইরে ঘনঘন আবেগতাড়িত হওয়া
৮. নেশা জাতীয় দ্রব্য যেমন ধূমপান/ অ্যালকোহলের ব্যবহার বেড়ে গেলে
৯. নিজের ওপর বিরক্তি এলে এবং
১০. দৈনন্দিন জীবনের কাজের সূচি ধরে রাখতে না পারা
এসব লক্ষণ আপনার সঙ্গে মিলে গেলে বুঝবেন যে, আপনি অতিরিক্ত কাজের চাপে আছেন। কিন্তু আপনি এটা শুনে অবাক হবেন যে, বেশি কাজ কিন্তু মানুষকে অতিরিক্ত কাজের চাপে ফেলে না। তাহলে অতিরিক্ত কাজের চাপের কারণ কী? অতিরিক্ত কাজের চাপের মূল কারণ মূলত চারটি। এগুলো হলো—
১. ক্ষুধা: আপনি খাবার সময় খাচ্ছেন না। এটা শেষ করে খাবেন, ওটা শেষ করে খাবেন-এভাবে ক্ষুধা আপনাকে অতিরিক্ত কাজের চাপে ফেলে দেয়। তাই ক্ষুধা লাগলে আগে খেয়ে নিন। বেশি কাজ থাকলেও অতিরিক্ত কাজের চাপ আর মনে হবে না।
২. রাগ: কোনো কিছু না পেলে বা কোনো কিছু নষ্ট হলে অন্যকে দোষারোপ করার সুযোগ থাকলেই মানুষের মানসিক অবস্থাকে রাগ বলে। রাগ করে কিছু অর্জন করা সম্ভব না। ফলে এটি কাজের চাপ বৃদ্ধি করে ও শরীরে উচ্চ-রক্তচাপ তৈরি করে। রাগ নিয়ন্ত্রণে আনতে জেনে নিন বিশেষ কৌশল। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলো উত্তর আমেরিকায় প্রকাশিত ‘রাগ নিয়ন্ত্রণ করার উপায়’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ সম্পর্কিত বেশ কিছু কৌশল তুলে ধরা হয়েছে।
৩. একাকিত্ব: বেশি কাজ করতে গিয়ে নির্জন/নিঃসঙ্গ থাকলেও কাজের চাপ বেড়ে যায়। কারণ অন্যদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করলে কথাবার্তার পাশাপাশি হাসিখুশি থাকা যায়। আর তাতে কাজের চাপ মন ও শরীরে প্রভাব ফেলে না।
৪. পরিশ্রান্ত: কাজ করে পরিশ্রান্ত হয়েও বিশ্রাম নিচ্ছেন না। এটা শেষ করে উঠবেন, ওটা শেষ করে বিশ্রাম নেবেন মনে করে, বেশি কাজ করে আপাতদৃষ্টিতে বেশি অর্জন মনে হলেও তা স্থায়ী হয় না। আর এটাই কাজের চাপ বাড়ায়। কাজেই পরিশ্রান্ত হলে বিশ্রাম নিন। বিশ্রামের পর আবার কাজে মনোযোগ দিন। এতে আর অতিরিক্ত কাজের চাপে ভুগবেন না।