আমেরিকায় করোনাভাইরাস পরিস্থিতি আবারও ভয়াবহভাবে ফিরে এসেছে। ক্রমে সংক্রমণ বেড়ে যাচ্ছে দেশটিতে। এ অবস্থায় দেশটির স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে হোয়াইট হাউসে পার্টির আয়োজন করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি উপেক্ষা করেই ট্রাম্প এই পার্টির আয়োজন করেন।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, হোয়াইট হাউস সব সময় ব্যস্ত থাকে। দিনে অন্তত তিন থেকে পাঁচটি অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকেই। এসব ছিল করোনাভাইরাস আসার আগপর্যন্ত। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ায় গত মার্চ মাসের শেষ দিকে এসব বন্ধ করা হয়। হোয়াইট হাউসের সব কার্যক্রম ভার্চ্যুয়ালি আয়োজন করা হতো। তবে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এবার আর ভার্চ্যুয়ালি নয়, সরাসরি হোয়াইট হাউসে পার্টির আয়োজন করলেন ট্রাম্প।
প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠান আয়োজন বন্ধ থাকায় অনেক কর্মীকে ছুটি দেওয়া হয়েছিল। স্বাধীনতা দিবসের পার্টির আয়োজন করতে তাঁরা এখন আবার সবাই যোগ দিয়েছেন। এই পার্টির আয়োজন নিয়ে হোয়াইট হাউসের সোশ্যাল সেক্রেটারি রিকি নিচেটাসহ সবাইকে বেশ উদ্যম নিয়ে কাজ করতে দেখা গেছে। রিকি নিচেটা এত দিন বাসা থেকেই কাজ করছিলেন। এবারে আয়োজনে কিছুটা ভিন্নতা ছিল। টেবিলের সঙ্গে ৮ বা ১০টি চেয়ার ছিল না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতেই প্রতিটি টেবিলে মাত্র চারটি করে চেয়ার সাজানো ছিল। টেবিলের ওপর সাজানো ফুল ও খাবারের ডিশ। উল্লেখযোগ্য খাবারের মধ্যে ছিল হটডগ, হামবার্গার ও কোমল পানীয়।
অনুষ্ঠানের আগে নাম প্রকাশ না করার শর্তে হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা বলেন, সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) পরামর্শ অনুযায়ী, হোয়াইট হাউসের সব কর্মী মাস্ক ও গ্লাভস ব্যবহার করবেন।
হোয়াইট হাউসের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি জাড ডিয়ারি বলেছিলেন, পার্টিতে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, চিকিৎসক, নার্সসহ করোনা মোকাবিলায় সামনের সারিতে থাকা কর্মী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা আছেন। এ ছাড়া ট্রাম্প প্রশাসনের সব সদস্যও উপস্থিত থাকবেন। তবে পার্টিতে ঠিক কতজন অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, তা তিনি বলেননি। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, এ বছর স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপনের অনুষ্ঠান ২০১৯ সালের চেয়ে আলাদা হবে। কারণ, এখানে যাঁরা উপস্থিত থাকবেন, তাঁদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি আগে নিশ্চিত করতে হবে।
এর আগে গত ৩ জুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প সাউথ ডাকোটা অঙ্গরাজ্যের মাউন্ট রাশমোরে যান। সেখানে স্থানীয় সময় রাতে আতশবাজির উৎসবে যোগ দেন তাঁরা। ওই উৎসবে প্রায় সাড়ে সাত হাজার মানুষ অংশ নেয়। সেখানে কোনো সামাজিক দূরত্বের এজেন্ডা ছিল না। সেখানে ট্রাম্প ভাষণ দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বড় ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়রের প্রেমিকা ও ট্রাম্পের প্রচারণার তহবিল সংগ্রহকারী কিম্বার্লি গুইলফয়ল করোনায় সংক্রমিত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। এই ভ্রমণকালে কিম্বার্লি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের খুব কাছাকাছি গিয়েছিলেন। এ কারণে সতর্কতা হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ তাঁর খুব কাছাকাছি যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের করোনার টেস্ট করানো হবে।