করোনাকালে ত্রাণ সহযোগিতার অর্থ দিয়ে আমেরিকার ফ্লোরিডায় এক ব্যক্তি বিলাসবহুল ল্যাম্বারগিনি গাড়ি কিনেছেন। কোম্পানির কর্মীদের ধরে রাখার জন্য মার্কিন সরকারের দেওয়া ‘পে চেক প্রোটেকশন’ কর্মসূচির অর্থ দিয়ে ব্যয়বহুল এ গাড়ি কেনায় ডেভিড টি হাইনস (২৯) নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।
২৭ জুলাই আদালতের নথি থেকে জানা গেছে, মায়ামি নগরীর ডেভিড টি হাইনস নামের ওই ব্যবসায়ী পে চেক প্রোটেকশন কর্মসূচি থেকে প্রায় ৪০ লাখ ডলার উত্তোলন করেন। এ অর্থ থেকে তিনি ৩ লাখ ১৮ হাজার ডলার দিয়ে নিজের জন্য হুরাকান মডেলের ল্যাম্বারগিনি গাড়িটি কেনেন। ফেডারেল এজেন্ট তাঁর গাড়ি এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্টে থাকা ৩৪ লাখ ডলার জব্দ করেছে।
আদালতের নথিপত্র থেকে আরও জানা গেছে, ডেভিড হাইনস ১ কোটি সাড়ে ৩ লাখ ৫০ হাজার ডলারের জন্য পে চেক প্রোটেকশন কর্মসূচিতে আবেদন করেছিলেন। নিজের কয়েকটি ভুয়া কোম্পানি এবং কর্মচারীদের ভুয়া বিবরণী তৈরি করে তিনি এ আবেদন করেন। তদন্তে দেখা যায়, বিবরণীতে উল্লেখ করা কর্মচারীদের কোনো অস্তিত্ব নেই। কয়েকজনের খোঁজ পাওয়া গেলেও সংখ্যাটি আবেদনে দাবি করা সংখ্যার ধারেকাছেও নেই। রাজ্যের কর বিভাগ এবং ব্যাংক বিবরণীতে তাঁর আবেদনের পক্ষে কর্মীদের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গত মার্চ মাস থেকে পুরো আমেরিকা লকডাউনে চলে যায়। তখন বিপর্যস্ত ব্যবসায়ীদের সাহায্যের জন্য কংগ্রেস ইতিহাসের সবচেয়ে উদার নাগরিক সহযোগিতা ঘোষণা করে। এর মধ্যে ব্যবসায়ীদের জন্য পে চেক প্রোটেকশন কর্মসূচির আওতায় অনুদান ও ঋণ প্রদান করা হয়। এ অর্থ কর্মচারীদের মজুরির জন্য ব্যয় করা হলে সম্পূর্ণ বা উল্লেখযোগ্য অংশ আর ফেরত দিতে হবে না। এমন উদার সহযোগিতার আবেদন অনুদান খুব দ্রুততার সঙ্গে অনুমোদন করার জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়। বহু অসৎ মানুষ এ সুযোগ গ্রহণ করে বিরাট অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। এখন এসব তদন্তে নেমেছে ফেডারেল কর্তৃপক্ষ। রাজ্যে রাজ্যে মামলা হচ্ছে। উদার কর্মসূচির জন্য জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া লোকজনকে খুঁজে বিচারের সম্মুখীন করা হচ্ছে।
এ পর্যন্ত ধরা পড়া জালিয়াতদের মধ্যে ডেভিড টি হাইনসকে সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী দেখা গেছে। তিনি কর্মচারীদের জন্য কোনো অর্থ না নিয়ে করোনা মহামারির ত্রাণের অর্থ দিয়ে বিলাসবহুল গাড়ি কিনেছেন। তাঁকে ২৭ জুলাই রাজ্যের চিফ ম্যাজিস্ট্রেট বিচারক জন সুলিভানের আদালতে উপস্থাপন করে অভিযোগ আনা হয়েছে।