মার্কিন কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্য তুলসী গ্যাবার্ড আগামী নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান। এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ২০২০ সালে দেশটিতে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি অংশ নিতে চান।
মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে হাওয়াই থেকে নির্বাচিত তুলসী গ্যাবার্ড শনিবার সিএনএনকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আগামী সপ্তাহে নির্বাচনে তিনি নিজের প্রার্থিতার বিষয়টি নিশ্চিত করবেন। শনিবার তুলসী ‘দ্য ভ্যান জোনস শো’র সাংবাদিক ভ্যান জোনসকে সাক্ষাৎকার দেন। এ সময় গ্যাবার্ড বলেন, নির্বাচনে তাঁর মূল ইস্যু হবে যুদ্ধ ও শান্তি। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন, ফৌজদারি বিচারব্যবস্থা ও স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে সংকট কাটিয়ে ওঠার প্রতি জোর দেবেন। তিনি বলেন, ‘আমার এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে অনেক যুক্তি আছে। মার্কিন জনগণ এখন ব্যাপক প্রতিকূলতার মোকাবিলা করছে। সে ব্যাপারে আমি উদ্বিগ্ন এবং তা সমাধানে আমি সাহায্য করতে চাই।’
কংগ্রেসে নির্বাচিত প্রথম হিন্দু প্রতিনিধি হলেন ৩৭ বছর বয়সী তুলসী গ্যাবার্ড। তিনি এখন মার্কিন ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য। ইরাক যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। তুলসী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হলে যুক্তরাষ্ট্রের সামোয়ায় জন্ম নেওয়া প্রথম ব্যক্তি হবেন তিনি। এ ছাড়া তুলসীই প্রথম হিন্দু নারী, যিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে নাম লেখাতে যাচ্ছেন।
তুলসী গ্যাবার্ডের মা ক্যারোল এবং বাবা মাইক গ্যাবার্ড ছিলেন আমেরিকান সামোয়া। তুলসির দুই বছর বয়সে তাঁরা পাকাপাকিভাবে হাওয়াইয়ে চলে যান। খ্রিষ্টান হলেও বাড়িতে কীর্তন চর্চা হতো। তাঁর মা হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী ছিলেন এবং হিন্দু ধর্মের কিছু আচার, রীতি-নীতিও পালন করতেন। এতে অনুপ্রাণিত হয়ে কিশোরী বয়সে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেন তুলসী। ৩৭ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী হিসেবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নামতে যাচ্ছেন তুলসী। ইরাকযুদ্ধের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন তুলসীর লড়াইটা খুব একটা সহজ হবে না বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
ডেমোক্র্যাট অনেক সদস্যই পরবর্তী মার্কিন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নিতে চান। ইতিমধ্যে ম্যাসাচুসেটসের সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন এ জন্য একটি কমিটি গঠন করেছেন। প্রাইমারি রাজ্যগুলোতে তিনি সফরেও যাচ্ছেন। এ ছাড়া ক্যালিফোর্নিয়ার সিনেটর কামালা হ্যারিস, নিউ জার্সির সিনেটর কোরি বুকার, ভারমন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্সও প্রার্থী হচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগামী কয়েক সপ্তাহে একে একে নিজেদের প্রার্থী হওয়ার কথা ঘোষণা করতে শুরু করবেন তাঁরা।
তুলসীকে নিয়ে বিতর্ক আছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ নিয়ে ডোমোক্র্যাটদের তোপের মুখে পড়েছিলেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকারের কড়া সমালোচক যুক্তরাষ্ট্র। যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা এবং রাসায়নিক হামলা চালানোসহ অনেক অভিযোগ তোলা হয় বাশারের বিরুদ্ধে। ২০১৬ সালে সিরিয়ায় যুদ্ধ চলার সময় বাশার আল-আসাদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছিলেন তুলসী। সেই সময় সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। সাক্ষাৎ নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক হয়। ওই সময় তুলসীর দাবি ছিল, সিরিয়ার মানুষের স্বার্থে এমন সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছেন। রাসায়নিক হামলায় আসাদের হাত ছিল কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। রিপাবলিকানরা তাঁকে আসাদের মুখপাত্র বলেও উল্লেখ করেছিলেন।