স্টার কাবাব অ্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টের সৌজন্যে কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী, সাংবাদিকদের নিয়ে মাসিক আড্ডার আয়োজন করেছে ঊনবাঙাল। প্রতি মাসের শেষ রোববার এই সমাবেশ ঘটে জ্যামাইকার স্টার কাবাব মিলনায়তনে। ২৫ নভেম্বর রোববার ছিল দ্বিতীয় সমাবেশ। এতে অংশ নেন নিউইয়র্ক ও নিউজার্সিতে বসবাসরত চল্লিশজন শিল্পসংস্কৃতি-সংশ্লিষ্ট মানুষ। এবারের আসরে উপস্থিত ছিলেন মাহবুব হাসান, আবেদীন কাদের, কাজী জহিরুল ইসলাম, রাজীব ভৌমিক, কুইন্স লাইব্রেরির ব্যবস্থাপক আবদুল্লাহ জাহিদ, ফেরদৌস নাজমী, রাগীব আহসান, রাজিয়া নাজমী, শুক্লা রায়, মিতা হোসেন, সৈয়দ শামসুল হুদা, সৈয়দ টিপু সুলতান, নাসরীন চৌধুরী, মুক্তি জহির, যুবায়ের হোসেন, শামীম আল আমিন, মো. নুরুল হক, টিপু চৌধুরী, শিবলী নোমানী, ওয়াহেদ হোসেন প্রমুখ।
শুরুতে কবি আবুল হাসানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর কবিতা আবৃত্তি করেন শুক্লা রায় এবং স্মৃতিচারণ করেন মাহবুব হাসান, যুবায়ের হোসেন ও রাগীব আহসান। অকালপ্রয়াত এই কবির বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের কথা উল্লেখ করে বক্তারা তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের নানান দিক তুলে ধরেন।
এরপরে শুরু হয় স্বরচিত কবিতা পাঠ ও আবৃত্তি। এই পর্বে অংশ নেন বিশজন কবি ও আবৃত্তিশিল্পী।
শামীম আল আমিনের সঞ্চালনায় একটি বিশেষ পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। সম্প্রতি ইউরোপীয় প্রকাশনা সংস্থা জাস্ট ফিকশন এডিশন প্রকাশ করে পোয়েমস অব কাজী জহিরুল ইসলাম। গ্রন্থটি সম্পাদনা করেছেন রাজীব ভৌমিক। অনুষ্ঠানে এই বইয়ের আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন করা হয়। রাজীব ভৌমিক জানান, দুই মাস অক্লান্ত পরিশ্রম করে তিনি এই গ্রন্থটির ম্যানাসস্ক্রিপ্ট তৈরি করেন। তিনি বলেন, ‘আমি কবির একজন ভক্ত, দুই বছর ধরে নিয়মিত তাঁর কবিতা পড়ছি। ভালো লাগা থেকেই সিদ্ধান্ত নিই তাঁর কবিতা নিয়ে একটি বই করব। সুখবর হচ্ছে এই বইটি এখন আমেরিকার বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় জন জে’র পাঠ্যপুস্তক। এটি বাংলা কবিতার জন্য এক বিশাল অর্জন।’
কাজী জহিরুল ইসলাম বলেন, এই প্রকাশনা এবং জন জে’র পাঠ্যপুস্তক হওয়া সবই ড. ভৌমিকের প্রচেষ্টার ফল। বাংলা কবিতাকে বিশ্বের দরবারে সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত করানোর স্বপ্ন আছে তাঁর মধ্যে, এটি সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রথম পদক্ষেপ। নাসরীন চৌধুরী, কুইন্স লাইব্রেরির ব্যবস্থাপক আবদুল্লাহ জাহিদ, ফেরদৌস নাজমী এবং মুক্তি জহির এই প্রকাশনা নিয়ে এবং জন জে’তে পাঠ্যপুস্তক হিসেবে বইটির অন্তর্ভুক্তি নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বক্তব্য দেন।
স্টার কাবাবের মালিক ঢাকা থিয়েটারের সাবেক কর্মী শিবলী নোমানী তাঁর আমন্ত্রণে ঊনবাঙাল স্টার আড্ডায় আসার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
শেষ পর্যায়ে ড. আবেদীন কাদের ঊনবাঙালের কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করে বক্তব্য দেন।
দেড় ঘণ্টার আনুষ্ঠানিক সভা শেষ হয়ে যাওয়ার পরে ঘণ্টাখানেক চলে অনানুষ্ঠানিক আড্ডা আর গরম গরম চা-সিঙ্গারা খাওয়া। সেই আড্ডায় সমসাময়িক রাজনীতি, বাংলাদেশের নির্বাচন, মোগল সাম্রাজ্য, তাজমহলের নির্মাণশৈলী, বাংলা শব্দভান্ডার এমনি নানান বিষয় নিয়ে জমে ওঠে আড্ডা।