ইফতার পার্টি ও মানবতা

দরিদ্র শিশুটির ইফতার নেওয়ার ছবিটি দিল্লির জামা মসজিদ এলাকা থেকে তোলা। ফাইল ছবি: এএফপি
দরিদ্র শিশুটির ইফতার নেওয়ার ছবিটি দিল্লির জামা মসজিদ এলাকা থেকে তোলা।  ফাইল ছবি: এএফপি

নিউইয়র্কে রমজান মাসের আগে থেকেই ইফতার পার্টির জন্য বাঙালি রেস্টুরেন্টের হল রুমগুলো শনি ও রবিবার বুক হয়ে যায়। পুরো রমজান মাসে জ্যাকসন হাইটস, এস্টরিয়া, জ্যামাইকা এবং উডসাইড এলাকায় অন্তত ২০০ ইফতার পার্টির আয়োজন হয়ে থাকে।
ইফতার পার্টির এ আয়োজনগুলো করে থাকে বিভিন্ন বিভাগীয়, জেলা, থানা এবং উপজেলা সমিতি। এখানে ৮০০ ডলারের ছোট আকারের ইফতার পার্টি যেমন হয় তেমনি ৮ হাজার ডলারের পার্টিও হয়ে থাকে।
সরেজমিনে দেখা যায়, এসব ইফতারে যাদের দাওয়াত দেওয়া হয় তাঁরা সবাই সাধারণত অবস্থা সম্পন্ন মানুষ। গরিব বা অসহায় মানুষের তেমন কোনো স্থান সেখানে থাকে না। তাহলে কি এই ইফতার পার্টি কেবল লোক দেখানো সামাজিকতার জন্য? ইচ্ছা করলেই কি ইফতার পার্টিতে একটু কম খরচ করে, যারা মানবেতর জীবনযাপন করছে নিউইয়র্কে অথবা বাংলাদেশে, তাদের পাশে দাঁড়ানো যায় না?
ওজন পার্কের দারুস সুন্নাহ জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা সাইফুল আলম সিদ্দিকী বলেন, সামাজিকতার জন্য ইফতার পার্টির প্রয়োজন আছে। তবে ইফতার পার্টির পরিসর কমিয়ে যদি গরিব, মিসকিন, এতিম এবং অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায় তবে তা মাহে রমজানকে আরও মহিমান্বিত করবে। যদি একটি পার্টির তিন ভাগের এক ভাগও নিপীড়িত বঞ্চিত মানুষের কল্যাণে ব্যয় করা যায় তাহলে অনেক মানুষ উপকৃত হতো। মানুষের কল্যাণের তাগিদ আল্লাহ বারে বারে কোরআনুল করিমে দিয়েছেন। সুরা বাকারার ২৭১ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তোমরা যদি প্রকাশ্যে দান কর, তবে ভালো। আর যদি তা গোপনে কর এবং অভাবগ্রস্তকে দাও, তবে তা তোমাদের জন্য আরও ভালো। এতে তোমাদের অনেক অকল্যাণ বা পাপ দূর হবে। তোমরা যা কর, আল্লাহ সে সম্পর্কে জানেন।’
বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আলম সিদ্দিকী বলেন, অসহায় মানুষকে সাহায্য করা অবশ্যই ভালো। তবে ইফতার পার্টির খরচ কমিয়ে কাউকে সহায়তা করা সম্ভব হবে না। কারণ আমরা যত টাকা বাজেট করি তত টাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে তুলে থাকি। বিভিন্ন ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান আমাদের টাকা দেয় ইফতার পার্টি আয়োজনের জন্য। ইফতারের কথা বলে সাহায্য করাটা উচিত হবে না।