আটলান্টিক সিটিতে বাংলাদেশি-আমেরিকানদের অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত আলহেরা মসজিদে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ রোজাদার ইফতার করেন। সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এক সঙ্গে এ ইফতারে শামিল হন। থাকে না কোনো বর্ণ কিংবা জাতিগত ভেদাভেদ। সবাই একসঙ্গে পাশাপাশি বসে ইফতার করেন। রমজান মাসের প্রথম দিন থেকেই আলহেরা মসজিদ কর্তৃপক্ষের আয়োজনে এ ইফতার হয়ে আসছে।
অন্যবারের মতোই রোজাদারদের প্রত্যেককে অতিথি জ্ঞান করে তাদের জন্য বিনা খরচে ইফতারের ব্যবস্থা করছে আলহেরা মসজিদ কর্তৃপক্ষ। আলহেরা মসজিদের বিশাল মেঝেজুড়ে রোজাদারদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিদিন আছরের নামাজের পর থেকে শুরু হয়ে যায় ইফতার আয়োজনের কাজ। আলহেরা মসজিদের স্বেচ্ছাসেবকেরা নিজ হাতে বিভিন্ন কাজ করছেন। ইফতারের অনেক আগে থেকেই শুরু হয় মসজিদের খতিব রুহুল আমিনের বয়ান। পরে হাফেজ সোলায়মানের সুললিত কণ্ঠে কোরআন তিলাওয়াত চলতে থাকে। এভাবেই ইফতারের সময় ঘনিয়ে আসে।
আলহেরা মসজিদে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের জন্যও রয়েছে ইফতারের পৃথক ব্যবস্থা। প্রতিদিন প্রায় ১০০ নারী ইফতার করেন বলে জানান আলহেরা মসজিদের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ওবায়দুল্লাহ চৌধুরী। সব মিলিয়ে অন্যরকম একটি আয়োজন। আলহেরা মসজিদ পরিচালনা পর্ষদের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নিত্যদিনের এ আয়োজন সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে মসজিদের ৪০ জন স্বেচ্ছাসেবক কাজ করেন। তাঁদের সঙ্গে থাকেন সাধারণ মুসল্লিরাও।
ইফতারের আগে কথা হয় আলহেরা মসজিদে নিয়মিত ইফতার করতে আসা মুসল্লিদের সঙ্গে। তাঁরা বলেন, মসজিদে এত মানুষের সঙ্গে ইফতার করার আলাদা একটা শান্তি আছে। গরিব-ধনীর ভেদাভেদ ভুলে একসঙ্গে পাশাপাশি বসা, খাওয়া—এর চেয়ে ভালো আর কী হতে পারে? এই শিক্ষা ধরে রাখা গেলে প্রবাসে সামাজিক জীবন আরও সহজ হবে।
এক মুসল্লি বলেন, ‘আমি আমার দুই সন্তানকে নিয়ে মসজিদেই ইফতার করি। আমার যদিও অন্য কোনো অসুবিধা নেই, শুধুমাত্র প্রবাসে বেড়ে ওঠা সন্তানদের সাম্যের শিক্ষা দিতেই এখানে ইফতার করা।’
আলহেরা মসজিদের এই মহতী উদ্যোগ ইতিমধ্যে আটলান্টিক সিটির বিভিন্ন কমিউনিটিতেও সাড়া ফেলেছে। আলহেরা মসজিদের সাম্যের শিক্ষার এই মহতী প্রয়াস প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে অব্যাহত থাকুক—এটাই সুধীমহলের একান্ত কামনা।