যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইরানের প্রভাবশালী জেনারেল কাশেম সোলাইমানি নিহত হওয়ার ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যে চরম উত্তেজনার মধ্যে গত বৃহস্পতিবার আরব সাগরের উত্তরে মুখোমুখি হলো যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার দুটি যুদ্ধজাহাজ। এ সময় মার্কিন যুদ্ধজাহাজটির দিকে ক্ষিপ্তভারে ধেঁয়ে যায় রুশ যুদ্ধজাহাজটি। গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী এই তথ্য জানিয়েছে।
ওই ঘটনার একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজটি আগ্রাসীভাবে ধেঁয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র ইউএসএস ফারাগাট নামের ডেস্ট্রয়ারটির দিকে। একেবারে খুব কাছে আসার পর রুশ যুদ্ধজাহাজটি দিক পরিবর্তন করে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের দুই কর্মকর্তা বলেছেন, ১৮০ ফুট দূরত্বে এসে গিয়েছিল জাহাজ দুটি। এ সময় দিক পরিবর্তন করে যুদ্ধজাহাজটি। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর মধ্যে এটি সর্বশেষ মুখোমুখি হওয়ার ঘটনা, যেটিকে অনিরাপদ ও উসকানিমূলক হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। সাত মাস আগে প্রশান্ত মহাসাগরে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। ওই সময় মার্কিন একটি যুদ্ধজাহাজের একেবার কাছে চলে আসে রাশিয়ার একটি যুদ্ধজাহাজ। পরে জরুরি ভিত্তিতে সংঘর্ষ এড়ায় রুশ জাহাজটি।
মধ্যপ্রাচ্যে নৌ অভিযানের দায়িত্বে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম নৌবহর এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘গত বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) ইউএসএস ফারাগাট যখন উত্তর আরব সাগরে টহল দিচ্ছিল, তখন সেটির দিকে আগ্রাসীভাবে ধেঁয়ে আসে রাশিয়ার নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধজাহাজ।’ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সংঘর্ষ এড়াতে ফারাগাট পাঁচবার বিপৎসংকেত দেয়। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী দিক পরিবর্তনের জন্য রুশ যুদ্ধজাহাজকে অনুরোধ করে। রুশ যুদ্ধজাহাজটি প্রথমে সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে। তবে পরে দিক পরিবর্তন করে। আন্তর্জাতিক নিয়ম মানতে প্রথমে দেরি করে রুশ জাহাজটি। আগ্রাসীভাবে ধেঁয়ে আসার কারণ দুটি জাহাজের মধ্যে সংঘর্ষের ঝুঁকি বেড়ে যায়।’
যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা বলেছেন, যুদ্ধবিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান গ্রুপের অংশ ফারাগাট। শত্রুদের হামলা থেকে হ্যারি এস ট্রুম্যানকে রক্ষা এবং শত্রুদের যুদ্ধজাহাজকে প্রতিহত করার কাজ করে ফারাগাট।
তবে এই জন্য উল্টো যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজকে দায়ী করেছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। শুক্রবার এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়টি বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর দাবি বাস্তবতার সঙ্গে কোনো মিল নেই। ইউএসএস ফারাগাটের ক্রুরা অপেশাদারি আচরণ করেছেন উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রাশিয়া যুদ্ধজাহাজের বাঁয়ে থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ডেস্ট্রয়ারটি দ্রুতগতিতে চলছিল। আন্তর্জাতিক নিয়ম অমান্য করে রুশ যুদ্ধজাহাজাটির দিক পরিবর্তন করতে মার্কিন যুদ্ধজাহাজটি কৌশল গ্রহণ করে। রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজের ক্রুরা পেশাগতভাবে দায়িত্ব পালন করেন। আর যুক্তরাষ্ট্রের ডেস্ট্রয়ারের ক্রুরা ছিলেন চরম অপেশাদার।’