আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (ডিএইচএস) প্রধান কির্স্টজেন নিলসেনের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে নতুন করে অস্থিরতা শুরু হয়েছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনে। এরই মধ্যে ডিএইচএসসহ নিরাপত্তা-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে বেশ কয়েকজন পদত্যাগ করেছেন। সদা অস্তির ট্রাম্প প্রশাসনে নতুন করে দেখা দেওয়া এই অস্থিরতায় শুরু হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা।
কির্স্টজেন নিলসেনের পদত্যাগের প্রাথমিক সংবাদে বিভিন্ন পর্যায় থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়েছিল। অনেকেই প্রেসিডেন্টের মতোই কির্স্টজেন নিলসেনকে তাঁর দায়িত্বের জন্য ধন্যবাদ জানায়। আবার একটি বড় অংশ অভিবাসী বিশেষত আমেরিকায় অবৈধভাবে প্রবেশ করা অভিবাসী শিশুদের সঙ্গে ডিএইচএসের আচরণের জন্য তাঁকে ‘নির্মম’ আখ্যা দিয়ে বিদায় মুহূর্তেও সমালোচনা করেন। যদিও কির্স্টজেন নিলসেনের নির্মম হয়ে ওঠার মূলে ছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পই। প্রেসিডেন্টের কঠোর অভিবাসন নীতিটি তাঁকে বাস্তবায়ন করতে হয়েছে।
নিলসেনের পদত্যাগ সম্পর্কে প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ইউএসএ টুডেকে বলেন, ‘তাঁকে পদত্যাগ করতে হয়েছে, কারণ তিনি অভিবাসীর বিরুদ্ধে কঠোর নন! এটা ভয়াবহ একটি বিষয়। কারণ এই নিলসেনই নিরীহ অভিবাসী শিশুদের খাঁচায় বন্দী করেছিলেন।’
সিনেট মাইনরিটি লিডার চাক শুমার বলেন, যখন ট্রাম্প প্রশাসনের নিষ্ঠুর নীতিতেও কোনো কাজ হয় না, তখন বুঝতে হবে যে, তার সঙ্গে আমেরিকানরা নেই।
নিলসেনের প্রতি কিছুটা রূঢ়ই বলতে হবে ২০২০ সালে ডেমোক্রেটিক দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন। তিনি বলেন, অবশেষে তাহলে তিনি পদত্যাগ করলেন। নিরীহ মানুষদের বিচ্ছিন্ন করার পেছনে তাঁর যে ভূমিকা, তা যেন তিনি জীবনে না ভোলেন। এমন কাজের জন্য তাঁর লজ্জা হওয়া উচিত।
মজার বিষয় হচ্ছে এই নীতি কঠোরভাবে কার্যকরে ব্যর্থ হয়েছেন বলে তিনি আবার ট্রাম্পের কাছেও অপ্রিয় ছিলেন। প্রেসিডেন্ট তাঁকে অদক্ষ মনে করতেন। এই দূরত্বই মূলত তাঁর পদত্যাগের পেছনে কাজ করেছে। এটা স্পষ্ট যে, কির্স্টজেন নিলসেন চাপে পড়ে পদত্যাগ করেছেন।
কির্স্টজেন নিলসেনের নেতৃত্ব নিয়ে জনমনে অনেক সংশয় ছিল। আগে তাঁকে অনেকবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বরখাস্ত করার চেষ্টা করেছিলেন। এমনকি নিলসেনও পদত্যাগপত্র লিখে রেখেছেন বলে খবর চাউর ছিল। গত বছরই এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু যোগ্য কাউকে না পাওয়ায় তাঁকে পদে রেখে দেওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ২০১৭ সালের অক্টোবরে দায়িত্ব পাওয়া কির্স্টজেন নিলসেনকে সরেই যেতে হলো। আর এর মধ্য দিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের পদগুলো যে মিউজিক্যাল চেয়ার, সেই সত্যটি আরেকবার সামনে এল।