জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টায় এক মাসের ব্যবধানে তিন বাংলাদেশী দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হয়েছেন। প্রবাসী সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া ও রেজওয়ানুল ইসলামের পর সর্বশেষ গত ২৭ অক্টোবর শুক্রবার নিহত হলেন দীপংকর দাস (৫৭)।
ঘাতকেরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় আটলান্টার বাংলাদেশী কমিউনিটিতে ভীতি বিরাজ করছে। আটলান্টার ডাউন টাউনে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কৃষ্ণাঙ্গ বন্দুকধারীর গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হওয়ার ১৩ দিন পর মারা যান বাংলাদেশী দীপংকর দাস (৫৭)। এর ঠিক এক মাস আগে একই সিটিতে দুর্বৃত্তের গুলিতে মারা যান আরও দুই বাংলাদেশী। এরা হলেন সাইফুল ভূঁইয়া (৩৬) এবং তাঁর দোকানের কর্মচারী রেজওয়ানুল ইসলাম (২০)।
সর্বশেষ ডাকাতির ঘটনায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হন দীপংকর দাস। ১৪ অক্টোবর শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। আটলান্টা সিটির ডাউন টাউন এলাকার ক্যাসকেড এভিনিউতে জি কর্ণার ফুড মার্টে প্রবেশ করে এক দুর্বৃত্ত তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করে। ‘ব্রেনডেড’ অবস্থায় তাঁকে নিকটস্থ গ্র্যাডি মেমরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কোমায় থাকাবস্থায়ই গত ২৭ অক্টোবর শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টায় চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত দীপংকর দাসের শেষকৃত্যানুষ্ঠান ৩১ অক্টোবর রোববার দুপুরে আটলান্টায় সম্পন্ন হয়।
মৌলভীবাজার জেলা সদরের দীপংকর দাস এক পুত্র আর এক কন্যার জনক। ১৬ বছর বয়সী পুত্র দেব জ্যোতি পড়ছে একাদশ গ্রেডে আর ১৩ বছর বয়সী একমাত্র কন্যা পড়ছে আটলান্টার একটি হাই স্কুলে। সে নবম গ্রেডের শিক্ষার্থী। দীপংকরকে হারিয়ে স্ত্রীর দিন কাটছে শুধুই কেঁদে। উলেখ্য, দীপংকর দাস ইতিপূর্বে নিউইয়র্কের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি নিউইয়র্কস্থ ‘শ্রীকৃষ্ণ ভক্তসংঘ, ইউএসএ’র সহ সভাপতি ছিলেন।
আটলান্টা পুলিশের মেজর এডাম লী জানান, ‘তরুন বয়েসী এক বন্দুকধারী দীপংকরের মাথায় তাক করে গুলি ছুড়েছিল। তিনি স্টোরটির মেঝেতে লুটিয়ে পড়ার পর দুর্বৃত্তটি ক্যাশ বাক্স থেকে নগদ সব ডলারসহ লটারির কিছু টিকিট লুট করে নিয়ে যায়। দুর্বৃত্তের ছবি সর্বসাধারণের জন্যে প্রচার করা হয়েছে। তাঁকে গ্রেপ্তারের জন্যে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এদিকে, দীপংকরের হত্যাকারী দুর্বৃত্তের সন্ধান পুলিশকে জানানোর জন্যে হটলাইন চালু করেছে। পুলিশের নম্বরটি হচ্ছে ৪০৪-৫৭৭-৮৪৭৭.
গত ১০ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে আটলান্টা সিটির সাউদার্ন গ্রোসারি স্টোর বন্ধ করে সহকর্মীসহ নিজ গাড়িতে উঠার সময় দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হন আরেক বাংলাদেশী ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া। ঘটনার সময় মারাত্মকভাবে আহত হন কর্মচারী রেজওয়ানুল ইসলাম। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের ভর্তি করা হয় স্থানীয় হাসপাতালে। ৪ দিন পর গ্র্যাডি মেমোরিয়াল হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁকেও মৃত ঘোষণা করেন। এ হত্যাকান্ডের জন্যে দায়ী দৃর্বৃত্তরাও এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়নি।