ক্যারিবীয় দ্বীপ সেন্ট কিটসে মধুচন্দ্রিমায় গিয়েছিলেন ক্লে চাসটেইন ও তাঁর নববধূ অ্যাকাইমি। দ্বীপের ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি মাউন্ট লিয়ামুইগায় ওঠার সাধ হয় ক্লের। অ্যাকাইমিকে নিচে রেখে আগ্নেয়গিরিতে চড়তে শুরু করেন তিনি। মাউন্ট লিয়ামুইগার স্তরে স্তরে রয়েছে লাভা আর ছাই। উচ্চতা ৩ হাজার ৭৯২ ফুট।
আগ্নেয়গিরিতে ওঠার পথে পড়ে যান ক্লে। মাথার খুলির হাড় ও মেরুদণ্ডে গুরুতর আঘাত পান তিনি। আর এ অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ফ্লোরিডায় নিয়ে আসেন স্ত্রী অ্যাকাইমি।
বিবিসি অনলাইনে গতকাল শুক্রবার প্রকাশিত খবরে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের ক্রফোর্ডসভিলে বিয়ের এক দিন পরই ১৮ জুলাই আগ্নেয়গিরিতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আগ্নেয়গিরির একদম উঁচুতে উঠতে চেয়েছিলেন ক্লে। তিনি সেখান থেকে সবুজ গাছপালার সৌন্দর্য উপভোগ করতে চেয়েছিলেন। নিচে ছিলেন অ্যাকাইমি।
ক্লে বলেন, আগ্নেয়গিরির শিখরে ওঠা নিয়ে তাঁর মধ্যে একধরনের ভয় ছিল। হঠাৎ তিনি সশব্দে কিছু ভেঙে পড়ার শব্দ শোনেন। মনে হয় যেন কোনো কিছু গড়িয়ে পড়ছে। আগ্নেয়গিরির দুই মাইল পর্যন্ত উঠেছিলেন ক্লে।
অ্যাকাইমি বলেন, তিনি সাহায্যের জন্য ক্লের চিৎকার শোনেন। প্রথমে অ্যাকাইমি নিচে ক্লের মুঠোফোন খুঁজে পান। এরপর ক্লেকে মাটিতে শুয়ে থাকতে দেখেন। তাঁর পুরো মাথা রক্তাক্ত ছিল।
অ্যাকাইমি বুঝতে পারেন, ক্লেকে সাহায্য করার মতো আর কোনো আরোহণকারী নেই। সেখানে কোনো ফোনের নেটওয়ার্ক নেই। একটুও দেরি না করে অ্যাকাইমি দৌড়ে যান ক্লের কাছে। তাঁকে টেনে নিচে নামান। ক্লে তাঁর গায়ে হেলান দিয়ে পড়েন। এ সময় মুখ দিয়ে বারবার শ্বাস নিচ্ছিলেন ক্লে। অ্যাকাইমির ওপর ভর দিয়ে পথ চলতে চলতে বলছিলেন আর কত দূর? ক্লের উচ্চতা ৫ ফুট ২ ইঞ্চি। ওজন ৪৭ কেজি। তাঁর প্রায় পুরো ভার বহন করে অ্যাকাইমি স্থানীয় চিকিৎসাকেন্দ্রে যান। এরপর চিকিৎসার জন্য সহায়তা চান। তাতে ৩০ হাজার ডলারেরও বেশি সাহায্য আসে। মেডিকেল ফ্লাইটে ফ্লোরিডার ফোর্ট লডারডেল এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয় ক্লেকে।
চিকিৎসকেরা জানান, ক্লের মাথার খুলির কিছু হাড় ভেঙে গেছে। মেরুদণ্ডের কশেরুকাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ফ্লোরিডায় ফেরার পর ক্লে বলেন, তাঁর স্ত্রী খুবই বিস্ময়কর কাজ করেছেন। আগ্নেয়গিরির নিচের পুরো পথ তাঁকে বহন করে এনেছেন।
যদিও অ্যাকাইমি বলছেন, এমন গুরুতর আঘাত নিয়ে ক্লে এতটা পথ যে আসতে পেরেছেন, সেটিই অবিশ্বাস্য।