উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগসহ ১৭টি নতুন অপরাধের অভিযোগ এনেছে মার্কিন বিচার বিভাগ। এসব অভিযোগের মধ্যে রয়েছে বেআইনিভাবে গোপন সূত্রের নাম প্রকাশ এবং গোপন তথ্য পেতে ষড়যন্ত্র ও সেনাবাহিনীর সাবেক গোয়েন্দা বিশ্লেষক চেলসি ম্যানিংকে সহায়তা করা।
মাসখানেক আগে বিচার বিভাগ অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে আরও ছোটখাটো ফৌজদারি মামলা করে। এর কিছুদিনের মধ্যে নতুন করে এত মামলার সম্মুখীন হতে হচ্ছে অ্যাসাঞ্জকে।
২০১০ সালে আড়াই লাখ মার্কিন কূটনৈতিক নথি ও পাঁচ লাখ সামরিক গোপন নথি ফাঁস করে হইচই ফেলে দিয়েছিল উইকিলিকস। অভিযোগ রয়েছে, ইরাক ও আফগান যুদ্ধ নিয়ে মার্কিন সেনাবাহিনীর ভিডিও ও কূটনৈতিক তারবার্তা ফাঁস করতে অ্যাসাঞ্জকে সহায়তা করেন চেলসি ম্যানিং। বর্তমানে মোট ১৮টি অপরাধের দায়ে অ্যাসাঞ্জকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কয়েক দশক পর্যন্ত জেল খাটতে হতে পারে তাঁর।
অ্যাসাঞ্জের পক্ষে আমেরিকান অ্যাটর্নি ব্যারি পলাক বলেন, ‘জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন সব অভিযোগ এনে সারা বিশ্বের সাংবাদিকদের হুঁশিয়ার করে দেওয়া হলো। মার্কিন সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে জনগণকে তথ্য দিলে পরিণতি কী হতে পারে, তার জলজ্যান্ত উদাহরণ হয়ে থাকবেন অ্যাসাঞ্জ।’
বিচার বিভাগের দাবি, অ্যাসাঞ্জ কেবল তথ্য ফাঁস করতে ম্যানিংকে সহায়তা আর উৎসাহই দেননি, বরং তাঁর এই কাজের জন্য হাজারো আফগান, ইরাকি, সাংবাদিক, ধর্মীয় নেতা, মানবাধিকারকর্মী এবং পিছিয়ে পড়া অঞ্চলের বিদ্রোহী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের পরিচয় প্রকাশিত হওয়ায় তাঁদের জীবন হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তারা আজ বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, বারংবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও অ্যাসাঞ্জ সূত্রের পরিচয় গোপন করেননি। তাঁদের সব সতর্কবার্তা উপেক্ষা করে নাম-পরিচয় প্রকাশ করেছে উইকিলিকস।
২০১০ সালের মে মাসে গ্রেপ্তার করা হয় ম্যানিংকে। ২০১০ সালে উইকিলিকসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ২০১৩ সালে তাঁর কোর্ট মার্শাল হয়।
জামিনের শর্ত লঙ্ঘন করে লন্ডনে ইকুয়েডর দূতাবাসে অবস্থান করায় এ মাসের শুরুতে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে ৫০ সপ্তাহ কারাদণ্ড দিয়েছেন লন্ডনের একটি আদালত। অ্যাসাঞ্জকে কবজা করতে বিচার বিভাগের এই লাগাতার মামলার প্রস্তুতি নেওয়া বিস্ময়কর কোনো ব্যাপার নয়। প্রত্যর্পণ নীতি অনুযায়ী, অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে আরও অভিযোগ আনার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে সময় আছে মাত্র ৬০ দিন। সাধারণত এরপর বৈদেশিক সরকারের কাছ থেকে আর কোনো অভিযোগ গ্রহণ করা হয় না।