সিনেটে অভিশংসন বিচারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের খালাস চেয়েছেন তাঁর আইনজীবীরা। গতকাল সোমবার ট্রাম্পের আইনজীবীদের দলটি সিনেটে নথি জমা দিয়ে এ দাবি জানান। তাঁরা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এই অভিশংসনকে সংবিধানের ‘বিপজ্জনক স্বেচ্ছাচারিতা’ বলে মন্তব্য করেন।
ইতিমধ্যে প্রতিনিধি পরিষদের অভিশংসন ব্যবস্থাপকেরা তাঁদের নথি জমা দিয়েছেন। নথিতে তাঁরা বলেছেন, ট্রাম্প পরবর্তী নির্বাচনে প্রতারণা করতে দুর্নীতিমূলক আচরণ করেছেন।
বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, আজ মঙ্গলবার অভিশংসনের ওপর শুনানি শুরু হবে।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেটিক পার্টির জো বাইডেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে ইউক্রেনকে চাপ প্রয়োগ এবং তাঁর এই কর্মকাণ্ড নিয়ে কংগ্রেসের তদন্তকাজে বাধা প্রয়োগের অভিযোগ এনে ডেমোক্র্যাট-নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদ তাঁকে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর অভিশংসিত করে।
যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসিত হয়েছেন। এর আগে অ্যান্ড্রু জনসন ও বিল ক্লিনটন প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসিত হলেও সিনেটের বিচারে জয়ী হন। সিনেটে রিপাবলিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় ট্রাম্পও জয়ী হবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
বিচারের সময় সিনেটররা দিনে ছয় ঘণ্টা এবং সপ্তাহে ছয় দিন দুই পক্ষের শুনানি শুনবেন। বিচারকাজটি পরিচালনা করবেন দেশটির প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস। এর আগে ১৬ জানুয়ারি তিনি বিচারপ্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার জন্য ১০০ জন সিনেটরকে জুরি হিসেবে শপথ করান। এর মধ্যে ৫৩ জন রিপাবলিকান ও ৪৭ জন ডেমোক্র্যাট।
ট্রাম্পকে ক্ষমতা থেকে অপসারিত করতে হলে এই জুরিদের দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন বা ৬৭ ভোট লাগবে। ফলে ট্রাম্প খালাস পেয়ে যাবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
বিচার যখন শুরু হবে, ট্রাম্প তখন সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অর্থনৈতিক ফোরামের বৈঠকে থাকবেন।
অভিশংসনের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের পক্ষে তাঁর আইনজীবীরা বিস্তারিত তথ্য যুক্ত করে ১৭১ পৃষ্ঠার নথি জমা দিয়েছেন। তাঁরা অভিশংসনের অভিযোগকে ‘অসার এবং বিপজ্জনক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁরা বলেছেন, অভিশংসনের অভিযোগে ট্রাম্পের কোনো অপরাধ বা আইনভঙ্গের বিষয়টি তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে গত বছরের ২৫ জুলাই ট্রাম্পের টেলিফোন আলাপচারিতা থেকে এই অভিশংসন-প্রক্রিয়ার সূত্রপাত। অভিযোগ ওঠে, ফোনালাপের সময় আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির মনোনয়নপ্রত্যাশী জো বাইডেনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য জেলেনস্কিকে চাপ দেন ট্রাম্প। হুইসেল ব্লোয়ার বা তথ্য ফাঁস করে সতর্ক করা ব্যক্তির মাধ্যমে এই ঘটনা সামনে আসে।