গাজায় ইসরায়েলের চলমান ‘পদ্ধতিগত হত্যাকাণ্ড’ ও ‘রক্তপাত’ অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। ইসরায়েলি হত্যাকাণ্ডের শুধু সমালোচনা না করে, তা বন্ধ করতে বিশ্ব সমাজকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
গতকাল শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘এটা কেবল সংঘাত নয় বরং এটা নির্দোষ ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে পদ্ধতিগত হত্যাকাণ্ড। মানুষের জীবন ও মর্যাদার একেবারে মর্মমূলে আঘাত। গাজার শিশুদের রক্ত কেবল নিপীড়কদের হাতে লেগে নেই। যারা এই নির্মম সংঘাতকে দীর্ঘায়িত করতে সহায়তা করছে তাদের (হাতেও লেগে আছে)।’
ফিলিস্তিনিদের ‘অন্তহীন ভোগান্তি’ উপেক্ষা করার মধ্য দিয়ে মানবতা সংকুচিত হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কেবল সমালোচনা করাটা যথেষ্ট নয়। এখন আমাদের অবশ্য কাজ করতে হবে। এই রক্তপাত তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধের দাবি জানাতে হবে। মনে রাখতে হবে নিরাপদ ফিলিস্তিনিদের ত্যাগ কখনো বৃথা যাবে না। আমরা তাদের বাস্তুচ্যুতি, সমস্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমরা তাদের পাশে আছি।’
ফিলিস্তিনে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের জন্য কাজ করতে বিশ্বনেতার আহ্বান জানান শাহবাজ শরিফ। পাশাপাশি ফিলিস্তিনকে শিগগিরই জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য করারও আহ্বান জানান তিনি।
শাহবাজ শরিফ বলেছেন, মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যে ইসরায়েলের ক্লান্তিহীন বোমা হামলায় লেবাননে ৫০০ মানুষ মারা গেছেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জাতিসংঘের প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে ব্যর্থতা ইসরায়েলকে উত্সাহিত করেছে এবং পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে যুদ্ধে জড়ানোর হুমকি সৃষ্টি হয়েছে, যার পরিণতি খুব গুরুতর এবং কল্পনার বাইরে হতে পারে।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও বক্তব্য দিয়েছেন। বক্তব্যে তিনি জাতিসংঘকে ‘অন্ধকারের ঘর’ অভিহিত করে বলেন, এই ইহুদিবিদ্বেষী পিত্তে ভরা জলাভূমিতে অধিকাংশই ইহুদি রাষ্ট্রের প্রতি অমানবিক। গত দশকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অনেক প্রস্তাব পাস হয়েছে। এসব ভণ্ডামি, দ্বিমুখী নীতি ও রসিকতা।
একই অধিবেশনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসও অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে গাজা ইস্যুতে কথা বলেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে বাসসের প্রতিবেদনে। তিনি বলেন, বিশ্ববাসীর উদ্বেগ ও নিন্দা সত্ত্বেও গাজায় গণহত্যা থামছে না। ফিলিস্তিনের বিদ্যমান বাস্তবতা কেবল আরব কিংবা মুসলমানদের জন্যই উদ্বেগজনক নয় বরং তা সমগ্র মানবজাতির জন্যই উদ্বেগের।