পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো
পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো

ট্রাম্পের হুমকি নাকচ করলেন পানামার প্রেসিডেন্ট

পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ আবার নেওয়ার বিষয়ে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকি প্রত্যাখ্যান করেছেন পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো।

মার্কিন জাহাজের সঙ্গে ‘অন্যায্য’ আচরণের অভিযোগ এনে গত শনিবার ট্রাম্প পানামা খাল আবার যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার বিষয়ে হুমকি দেন।

ট্রাম্প বলেন, ‘পানামা যদি চ্যানেলটির নিরাপদ, দক্ষ ও নির্ভরযোগ্য পরিচালনা নিশ্চিত করতে না পারে, তাহলে আমরা দাবি করব যে পানামা খাল আমাদের কাছে সম্পূর্ণরূপে ও প্রশ্ন ছাড়াই ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’

ট্রাম্পের এই হুমকি প্রত্যাখ্যান করে গতকাল রোববার পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) একটি ভিডিও পোস্ট করেন।

ভিডিওতে হোসে রাউল মুলিনো বলেন, ‘পানামা খাল ও এর-সংলগ্ন এলাকার প্রতি বর্গমিটার পানামার স্বত্বাধীন। আর তা পানামার স্বত্বাধীনই থাকবে।’

মুলিনো অবশ্য তাঁর এই প্রকাশ্য মন্তব্যে ট্রাম্পের নাম উল্লেখ করেননি।

ট্রাম্প তাঁর মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে গত শনিবার দেওয়া এক পোস্টে বলেন, ‘মার্কিন জাহাজ ও বাণিজ্যের সঙ্গে খুবই অন্যায্য ও অন্যায় আচরণ করা হয়েছে। এই জলপথ ব্যবহারের জন্য পানামা যে মাশুল নিচ্ছে, তা হাস্যকর।’

পানামা খাল ঘিরে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের বিষয় নিয়েও অভিযোগ করেছেন ট্রাম্প। বিষয়টিকে যুক্তরাষ্ট্র তার স্বার্থের জন্য একটি উদ্বেগজনক প্রবণতা হিসেবে দেখছে।

পানামা খালের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়িক নির্ভরতা আছে। জাহাজে করে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র এই জলপথ ব্যবহার করে।

ট্রাম্প বলেছেন, পানামা খাল শুধু পানামার ব্যবস্থাপনার জন্যই ছিল, চীন বা অন্য কারও নয়। তাঁরা এটা কখনো ভুল হাতে পড়তে দেবেন না।

লাতিন আমেরিকার দেশ পানামা যুক্তরাষ্ট্রের একটি মিত্ররাষ্ট্র। পানামা খাল খননের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের বড় ভূমিকা ছিল। মূলত যুক্তরাষ্ট্রই খালটি নির্মাণ করে বেশ কয়েক দশক ধরে এটির আশপাশের এলাকায় প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করেছে। এরপর কিছুদিন পানামার সঙ্গে যৌথভাবে খালটি পরিচালনা করে। ১৯৯৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র সরকার খালটির নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি ছেড়ে দেয়। খাল পরিচালনার দায়িত্ব নেয় পানামা।

পানামা খাল আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরকে যুক্ত করেছে। খালটির দৈর্ঘ্য ৮২ কিলোমিটার। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি জাহাজ চলাচলকারী কৃত্রিম খালের একটি। অন্যটি হচ্ছে সুয়েজ খাল। পানামা খাল না থাকলে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব থেকে পশ্চিম উপকূল অভিমুখে যাত্রাকারী যেকোনো জাহাজকে দক্ষিণ আমেরিকার কেইপ হর্ন হয়ে যাওয়ার মাধ্যমে অতিরিক্ত ১৫ হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হতো।