ভেনেজুয়েলার বিতর্কিত নির্বাচনে নিকোলা মাদুরোর জয়কে স্বীকৃতি দিতে এবার অস্বীকৃতি জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এর মধ্য দিয়ে মাদুরোর ওপর আন্তর্জাতিক চাপ আরও বাড়ল। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ও লাতিন আমেরিকার বেশ কিছু দেশ মাদুরোর জয়কে প্রত্যাখ্যান করে।
গত ২৮ জুলাই ভেনেজুয়েলায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়। নির্বাচনে মাদুরোকে জয়ী ঘোষণা করে দেশটির জাতীয় নির্বাচন পরিষদ। তবে ভোটের ফলাফলে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তোলেন বিরোধীরা। তাঁরা নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেন।
ইইউ এমন সময় মাদুরোর জয়কে প্রত্যাখ্যান করল, যখন তাঁর বিরোধীপক্ষ ও আন্তর্জাতিক মহল নির্বাচনের পুঙ্খানুপুঙ্খ ফলাফল প্রকাশের আহ্বান জানিয়ে আসছে।
পোপ ফ্রান্সিস বলেছেন, ভেনেজুয়েলার জনগণের সত্য জানার অধিকার আছে। সহিংসতা যাতে আর না বাড়ে, সে বিষয়েও তিনি সতর্ক করেছেন।
এক বিবৃতিতে ইইউ কাউন্সিল বলেছে, ২ আগস্ট ভেনেজুয়েলার জাতীয় নির্বাচন পরিষদ প্রকাশিত ফলাফলকে স্বীকৃতি দেওয়া যায় না। আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটের পুঙ্খানুপুঙ্খ ফলাফল প্রকাশ বিলম্বিত করলে নির্বাচন পরিষদের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, স্পেনসহ ইইউর দেশগুলো নির্বাচনের ফলাফলে স্বচ্ছতা আনার আহ্বান জানিয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে ভোটের বিস্তারিত ফলাফল প্রকাশ করতে বলেছে দেশগুলো।
তবে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের মতো মাদুরোর বিরোধী প্রার্থী গঞ্জালেজ উরুতিয়াকে জয়ী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি ইইউ। ব্লকটির বিবৃতিতে বলা হয়, বিরোধীরা ভোটের কিছু নথি প্রকাশ করেছে। বেশ কিছু নিরপেক্ষ সংস্থা সেটি পর্যালোচনাও করেছে। এসব নথিতে দেখা গেছে, উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন গঞ্জালেজ উরুতিয়া। ইউরোপীয় ইউনিয়ন আরও নিরপেক্ষভাবে এসব নথি যাচাইয়ের আহ্বান জানাচ্ছে। যদি সম্ভব হয় প্রসিদ্ধ কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থাকে এ দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে।
নির্বাচনে মাদুরোকে জয়ী ঘোষণার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়ে বিরোধীরা। ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাসসহ বিভিন্ন শহরের রাস্তায় নেমে আসেন হাজারো মানুষ। নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয় বিক্ষোভকারীদের। একটি মানবাধিকার সংস্থা বলছে, সংঘর্ষে ১১ জন নিহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার করা হয়েছে হাজারেরও বেশি মানুষকে। তবে বিরোধী নেতা মারিয়া কারিনা মাচাদোর দাবি, সংঘাতে অন্তত ২০ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।