মার্কিন ভাষাবিদ ও অধিকারকর্মী নোয়াম চমস্কি
মার্কিন ভাষাবিদ ও অধিকারকর্মী নোয়াম চমস্কি

স্ট্রোকে আক্রান্ত নোয়াম চমস্কি ব্রাজিলের হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন

মার্কিন ভাষাবিদ ও অধিকারকর্মী নোয়াম চমস্কি গত বছরের মাঝামাঝি একটি বড় ধরনের স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। তিনি বর্তমানে তাঁর স্ত্রী ভ্যালেরিয়া চমস্কির জন্মভূমি ব্রাজিলের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এখন তিনি ধীরে ধীরে সেরে উঠছেন। গত মঙ্গলবার ভ্যালেরিয়া এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

ই–মেইলে ভ্যালেরিয়া চমস্কি জানান, ৯৫ বছর বয়সী চমস্কি বর্তমানে ব্রাজিলের সাও পাওলোর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ২০২৩ সালের জুনে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসে স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। অবস্থা কিছুটা ভালো হলে তাঁকে একটি অ্যাম্বুলেন্স জেটে (উড়োজাহাজ) করে ব্রাজিলে নেওয়া হয়।

ব্রাজিলে ২০১৫ সাল থেকে এই দম্পতির একটি বাসস্থান রয়েছে। চমস্কির সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা নিয়ে গত সোমবার ব্রাজিলের সংবাদপত্র ফোলহা দে এস পাওলো একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ভ্যালেরিয়া।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, চমস্কির কথা বলতে সমস্যা হচ্ছে। স্ট্রোকে তাঁর শরীরের ডান দিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একজন নিউরোলজিস্ট, স্পিচ থেরাপিস্ট ও ফুসফুস বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে তাঁর চিকিৎসা চলছে।

ভ্যালেরিয়া ব্রাজিলের সংবাদপত্রটিকে বলেছেন, এ অবস্থার মধ্যেও গণমাধ্যমের খবরাখবরে চোখ রাখেন তাঁর স্বামী। চলমান গাজা যুদ্ধের ছবি দেখলে তিনি পরিতাপ ও ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে নিজের বাঁ হাত ওপরের দিকে তোলেন।

বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদ ও স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে চমস্কি সমাদৃত। অধিকারকর্মী ও সমালোচক হিসেবেও তিনি বেশ প্রভাবশালী। মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে মধ্য আমেরিকার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি ও অনুগত গণমাধ্যমের বড় সমালোচক তিনি। বিশ্বে তাঁর বই ও প্রবন্ধের অনেক পাঠক রয়েছেন।

বরেণ্য এই ভাষাবিদ যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে দীর্ঘদিন পড়িয়েছেন। ২০১৭ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের টুকসনের অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক ও আচরণগত বিজ্ঞান কলেজে যোগ দেন। সেখানে তিনি বর্তমানে ভাষাবিজ্ঞানের ‘লরিয়েট প্রফেসর’ হিসেবে তালিকাভুক্ত।

১৯৫৭ সালে চমস্কির ‘সিনট্যাকটিক স্ট্রাকচার্স’ নামের বিখ্যাত বই বের হয়। বইটি ভাষাবিজ্ঞান অধ্যয়নকেই বদলে দিয়েছে।

বইতে চমস্কি লিখেছেন, মানুষ শুধু সাদামাটাভাবে ভাষা শেখে, বিষয়টি কিন্তু তেমন নয়। বরং ভাষা শেখার একটি সহজাত সক্ষমতা নিয়েই মানুষের জন্ম হয়।

ভ্যালেরিয়া ব্রাজিলের সংবাদপত্র ফোলহা দে এস পাওলোকে বলেছেন, তিনি তাঁর স্বামীকে নিয়ে রিও ডি জেনিরোর সমুদ্রসৈকতের কাছাকাছি একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকার কথা ভাবছেন। কারণ, রৌদ্রোজ্জ্বল জায়গা স্ট্রোকের রোগীর জন্য উপকারী বলে তিনি পড়েছেন।