যে ব্যক্তি ‘নতুন ট্রাম্প’ হয়ে উঠতে পারেন

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো
ফাইল ছবি: এএফপি

‘যখন এক পক্ষ মনে করে যে নির্বাচনে মাত্র দুটি ফল হতে পারে হয়—তাঁরা জিতবেন আর হারলে নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। তখন গণতন্ত্র টিকতে পারে না।’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এ মন্তব্য করেন। কিন্তু তাঁর এ মন্তব্য হয়তো ব্রাজিলের জন্যও খাটে। আগামী মাসেই ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। সেখানে আবার প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লড়বেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একনিষ্ঠ ভক্ত ‘ব্রাজিলের ট্রাম্প’ হিসেবে খ্যাত জইর বলসোনারো। কিন্তু নির্বাচনের আগে পরিচালিত প্রতিটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ব্রাজিলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট বলসোনারো হারতে চলেছেন।

বলসোনারো বলেছেন, নির্বাচন যদি অবাধ ও স্বচ্ছ হয়, তবে ফলাফল তিনি মেনে নেবেন। ব্রাজিলের নির্বাচনের ফলাফল স্বচ্ছই হওয়ার কথা। কারণ, দেশটির ইলেকট্রনিক ভোটিং সিস্টেম নিয়ে খুব বেশি সংশয় নেই। এ যন্ত্রের ফল বদলে ফেলাও কঠিন। তাহলে সমস্যা কোথায়? ইকোনমিস্ট বলছে, ইলেকট্রনিক ভোটিং সিস্টেমে ভোটের নিরপেক্ষতার বিষয়টিই এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলসোনারোর জন্য। তিনি বলে আসছেন, মতামত জরিপ ঠিক নয়। তিনিই জেতার পথে রয়েছেন।

নির্বাচন নিয়ে বলসোনারোর নিজের অভিযোগও রয়েছে। বলছেন, তাঁকে হারাতে নির্বাচন পাতানো হতে পারে। অভিযোগের পক্ষে তিনি কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি। কিন্তু বলসোনারোর একদল ‘অন্ধ’ সমর্থক রয়েছে। বলসোনারো যা বলেন, তাঁরা সেটাই বিশ্বাস করেন, যেমনটা করেন ট্রাম্পের সমর্থকেরা। বলসোনারো নির্বাচনে ভরাডুবির বিষয়টি আঁচ করতে পেরে তাই আগেভাগেই নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছেন। নির্বাচন যাতে প্রত্যাখ্যান করা যায়, তার পটভূমি আগেই তৈরি করে রাখছেন তিনি। ব্রাজিলবাসীর আশঙ্কা, ফল পক্ষে না গেলে বলসোনারো বিদ্রোহ উসকে দিতে পারেন। ঠিক এমনটাই করেছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত বছরের ৬ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্পের একদল সমর্থক যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটলে হামলা চালিয়েছিলেন।

৭৬ বছর বয়সী লুলা ডা সিলভা আবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তা বিস্ময়কর প্রত্যাবর্তনের উদাহরণ হয়ে থাকবে।

বিবিসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের এক শুনানিতে ট্রাম্পের প্রতি অভিযোগ করে বলা হয়েছে, অভ্যুত্থানচেষ্টার অংশ হিসেবে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ক্যাপিটলে দাঙ্গা সংঘটিত করেছিলেন তিনি। ক্যাপিটলে তাণ্ডব চালানোর ঘটনায় হামলাকারীরা ‘যুদ্ধের প্রস্তুতি’ নিয়ে এসেছিলেন। দাঙ্গা করার জন্য উগ্রবাদীরা অস্ত্র, বেতার যোগাযোগব্যবস্থাসহ নানা সরঞ্জাম নিয়ে ভবনটির আশপাশে জড়ো হন। তাঁদের এ প্রস্তুতি মোকাবিলায় নিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল অপ্রতুল। গত ৬ জানুয়ারি নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ফল প্রত্যয়নের জন্য কংগ্রেসের অধিবেশন চলাকালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সমর্থকেরা ক্যাপিটলে হামলা চালান। হামলার ঘটনায় পাঁচজন নিহত হন।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

বলসোনারো কেন ট্রাম্পের ক্যাপিটলের ঘটনার পুনরাবৃত্তি করবেন? এ প্রশ্নের উত্তর মিলবে তাঁর আচরণে। এর আগে বিভিন্ন সময় তিনি ট্রাম্পকে অনুসরণ করেছেন। তিনি ইতিমধ্যে দেশে বিভাজনের বীজ বপন করেছেন। তিনি সমালোচনা নিতে পারেন না। তাঁর বিরুদ্ধে যত সমালোচনা হয়, তিনি সেগুলোকে ‘ভুয়া খবর’ হিসেবে উড়িয়ে দেন। তাঁর প্রবৃত্তি ট্রাম্পের মতোই কর্তৃত্ববাদী। তিনি ব্রাজিলের সামরিক শাসনের দিনগুলো নিয়ে স্মৃতিকাতর হয়ে ওঠেন। বলসোনারোর ছেলে এদোয়ার্দো তাঁর ঘনিষ্ঠ পরামর্শদাতা। এদোয়ার্দো একবার সরাসরি ক্যাপিটল দাঙ্গার প্রশংসা করেছিলেন। বিশ্বে বলসোনারোই হলেন একমাত্র নেতা, যিনি বাইডেনের জয়কে সবার পরে স্বীকৃতি দেন।

২০১৮ সালে দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান ও অপরাধ নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন বলসোনারো। তবে তিনি সমর্থকদের কাছে টানার কৌশল শিখেছেন। এর মধ্যে রয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ক্রমাগত অপব্যবহারের মতো বিষয়গুলো। তিনি এ মাধ্যমে সমর্থকদের দুটি বিষয়ে বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন। একটি হচ্ছে, তিনি যদি নির্বাচনে হারেন, তাহলে সেই নির্বাচন স্বচ্ছ হবে না। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী লুলা ডা সিলভা জিতলে ব্রাজিলকে শয়তানের হাতে তুলে দেবেন। বলসোনারো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন কথাও ছড়িয়েছেন যাতে বলা হয়েছে, লুলা জিতলে ব্রাজিলের চার্চ বন্ধ হয়ে যাবে, দেশ মাদক-রাজ্যে পরিণত হবে।

লুলা ডা সিলভা

কিন্তু লুলাকে নিয়ে যেসব কথা ছড়ানো হয়েছে, তার কোনো ভিত্তি নেই। লুলা ২০০৩–২০১০ সাল পর্যন্ত দুই মেয়াদে ব্রাজিলে প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তাঁর শাসনামলে ব্রাজিলের দ্রুত উন্নতি হয়। তাঁর প্রশাসন লাখ লাখ দরিদ্র মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করেছিল। ব্যাপক জনপ্রিয়তা নিয়েই লুলা ক্ষমতা ছাড়েন। তবে ক্ষমতা ছাড়ার পর দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হয়ে ২০১৮–২০১৯ সালে ৫৮০ দিন কারাভোগ করেন লুলা। পরে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ বাতিল করা হয়েছিল। ৭৬ বছর বয়সী এই নেতা আবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তা বিস্ময়কর প্রত্যাবর্তনের উদাহরণ হয়ে থাকবে। লুলা সম্পর্কে ইকোনমিস্ট বলছে, লুলা হয়তো পুরোপুরি আদর্শ প্রার্থী নন। তবে তিনি স্বাভাবিক ও গণতন্ত্রের সমর্থক।

বলসোনারো ও লুলার রাজনৈতিক জীবন

বলসোনারো ১৯৫৫ সালের ২১ মার্চ ব্রাজিলের সাও পাওলোর একটি শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা ছিলেন দন্তচিকিৎসক। বলসোনারো ব্রাজিলিয়ান সেনাবাহিনী পরিচালিত স্কুলে পড়াশোনা করেন এবং ১৯৭৭ সালে আগুলহাস নেগ্রাস মিলিটারি একাডেমি থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর তিনি প্রায় ১৭ বছর সেনাবাহিনীতে কাজ করেন। তিনি ছত্রীসেনা হিসেবে কাজ করেছিলেন। সেনাবাহিনীতে তিনি ক্যাপ্টেন পদে উন্নীত হন। ১৯৮৬ সালে সেনাবাহিনীর বেতনব্যবস্থা নিয়ে নিবন্ধ লিখে বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। তবে সহকর্মী ও জনসাধারণের কাছ থেকে প্রশংসিত হন তিনি। ১৯৮৮ সালে তিনি সেনাবাহিনী ছাড়েন। পরের বছর তিনি রিও ডি জেনিরো সিটি কাউন্সিলের নির্বাচনে জয়ী হন। দুই বছর পর তিনি ব্রাজিলের ফেডারেল চেম্বার অব ডেপুটিজে রিও ডি জেনিরোর প্রতিনিধিত্ব করে একটি আসন জেতেন। টানা সাতবার ওই পদে ছিলেন। তখন থেকেই তিনি সামাজিক ইস্যুতে রক্ষণশীলদের পক্ষে বক্তব্যের জন্য খ্যাতি পেতে শুরু করেন। তাঁর বিভিন্ন মন্তব্যের কারণে রাজনৈতিক অঙ্গনে তিনি বিশেষ পরিচিতি পান।

বিদেশি সম্পর্ক ও জাতীয় প্রতিরক্ষা কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বলসোনারো। তিনি মানবাধিকার ও সংখ্যালঘু অধিকার কমিশনের সদস্যও ছিলেন। ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে তিনি ১৯৯৩ সালে প্রোগ্রেসিভ পার্টিতে যোগ দেন। পরে ১৯৯৫ সালে দলটি ব্রাজিলিয়ান প্রোগ্রেসিভ পার্টি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ২০০৩ সালে তিনি লেবার পার্টিতে যোগ দিলেও দুই বছর পর আবার পুরোনো দরে ফিরে আসেন। ২০১৬ সালে তিনি সোশ্যাল ক্রিশ্চিয়ান পার্টিতে যোগ দেন।

ব্রাজিলের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হতে শুরু করলে বলসোনারোর ভাগ্য বদলাতে শুরু করে। লুলার উত্তরসূরি দিলমা রুসেফের ওয়ার্কার্স পার্টির শাসনামলে দেশটিতে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়। এ ছাড়া মূলধারার রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে থাকে। ২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াই করার ঘোষণা দেন বলসোনারো। তিনি সহজাতভাবে গণতন্ত্রের সমর্থক নন। উদ্বেগের বিষয় হলো, বলসোনারোকে গণতন্ত্রের বিধিবিধানে আটকে রাখার যে প্রক্রিয়া, তা ট্রাম্পকে ঠেকানোর চেয়ে কম শক্তিশালী। মার্কিন সামরিক বাহিনীর অভ্যুত্থান হয়তো অকল্পনীয়। কিন্তু ব্রাজিলের সামরিক শাসনের ইতিহাস খুব বেশি পুরোনো নয়। ১৯৮৫ সালে শেষ হয়েছে দেশটির সামরিক শাসন। দেশটির সেনাবাহিনী সরকারে গভীরভাবে ঢুকে পড়েছে এবং নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন করেছে। দেশটির জনগণ সামরিক অভ্যুত্থানের বিষয়টিও উড়িয়ে দিচ্ছে না।

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো ও সাবেক প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা ডা সিলভা

তবে ব্রাজিলে সামরিক অভ্যুত্থান হয়তো ঘটবে না। কিন্তু একধরনের বিদ্রোহ দানা বাঁধতে পারে। বলসোনারো নিয়মিত সহিংসতা উসকে দেন। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ৪৫ জন রাজনীতিবিদ খুন হয়েছেন। এখন বলসোনারোর অনুসারীরা আগের চেয়ে অনেক বেশি অস্ত্রধারী। বলসোনারো ক্ষমতায় আসার পর থেকে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের ফাঁকফোকরগুলো আরও বিস্তৃত হয়েছে। দেশটিতে ২০ লাখ মানুষের হাতে ব্যক্তিগত অস্ত্র রয়েছে। ব্রাজিলের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল যদি লুলাকে বিজয়ী ঘোষণা করেন, তাহলে অস্ত্রধারী বলসোনারোর কর্মীরা তাদের ওপর হামলা করতে পারেন। তখন প্রশ্ন দাঁড়াবে, দেশটির ৪ লাখ শক্তিশালী পুলিশ বাহিনী তখন কার নির্দেশ পালন করবে বা কার পক্ষ নেবে। দেশটির পুলিশ বাহিনীর কিছু সদস্য বলসোনারোর অনুসারী। তিনি সন্দেহভাজন পুলিশ কর্মকর্তাদের রক্ষায় আইনের প্রস্তাব করেছেন। কিছু পুলিশ কর্মকর্তা ব্রাজিলের সংবিধানের তুলনায় বলসোনারোর প্রতি আনুগত্য দেখাতে পারেন। যদি রাস্তায় বিশৃঙ্খলা বা বিক্ষোভ দেখা দেয়, তবে বলসোনারো তাঁর জরুরি ক্ষমতা প্রয়োগ করে ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিতে পারেন।

লাতিন আমেরিকায় বৃহত্তম গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে বলসোনারো বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারেন। তাঁর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে আমাজন বন ধ্বংসকারীর তকমা লেগে গেছে। তাঁর আমলে আমাজন বন উজাড়ের হার ৭০ শতাংশ দ্রুত হয়েছে। তিনি আমাজন রক্ষায় কোনো ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে দেশটির রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যে ঘটনাই ঘটুক না কেন, বলসোনারো ও তাঁর কর্মকাণ্ড শেষ হয়ে যাবে না। তিনি ট্রাম্পের কাছ থেকে শিখেছেন কীভাবে পরাজয়ের মুখ থেকে প্রভাব ও ক্ষমতা কেড়ে নিতে হয়।

যখন সাধারণ প্রার্থীরা নির্বাচনে হেরে যান, তখন তাঁদের দলগুলো নতুন মুখের সন্ধান করে। পুরোনো প্রার্থীকে যতটা সম্ভব ঝেড়ে ফেলে। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প যখন হেরে গেলেন, তিনি তখন তাঁর সমর্থকদের বলেছিলেন, তাঁদের জয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। তিনি তাঁর এ ‘বড় মিথ্যাকে’ বিশাল সমাবেশ ও শোভাযাত্রার রূপ দিতে সক্ষম হন। তিনি তাঁর সমর্থকদের এক ছায়াতলে এনে বড় বিক্ষোভের সূচনা করেন। তিনি তাঁর রিপাবলিকান পার্টিকে বোঝাতে সক্ষম হন যে নেতা হিসেবে আর কেউ তাঁকে টক্কর দেওয়ার মতো নেই। একই রকমভাবে বলসোনারো যদি বড় মিথ্যার আশ্রয় নেন, তাহলে তিনিও ব্রাজিলের প্রভাবশালী বিরোধী রাজনীতিবিদ বনে যেতে পারেন। তাঁর সমর্থকের দল, বিশেষ করে রক্ষণশীল খ্রিষ্টান, বন্দুক-মালিক এবং গ্রামীণ লোকজন তাঁর পক্ষেই থেকে যেতে পারে। তাঁরা মনে করতে পারেন, ব্রাজিলের সঠিক প্রেসিডেন্ট তিনিই। আইনসভা এবং রাজ্যগুলোতে তাঁর সমর্থকেরা লুলার শাসনক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। ব্রাজিল আরও বিভক্ত হতে পারে।

ইকোনমিস্ট বলছে, সবচেয়ে ভালো হবে, বলসোনারোকে বড় ব্যবধানে হারাতে হবে, যাতে তিনি জয়ী দাবি না করতে পারেন। এ জন্য ২ অক্টোবর প্রথম রাউন্ডের ভোটে তাঁকে বড় ব্যবধানে হারাতে হবে। অথবা ৩০ অক্টোবরের দ্বিতীয় দফা ভোটে (রান অফে) তাঁকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে মুখ বন্ধ করতে হবে। তবে অক্টোবরের কয়েকটা সপ্তাহ যাবে বড় উদ্বেগে। এ দিনগুলো বিপজ্জনক হয়ে উঠবে, তাতে সন্দেহ নেই। এ জন্য অন্য দেশগুলোকে অবশ্যই ব্রাজিলের গণতন্ত্রকে সমর্থন করতে হবে। অন্য দেশগুলোকে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিতে হবে, সেনাবাহিনী যদি অভ্যুত্থান ঘটায়, তাহলে ব্রাজিলের প্রতি তাদের সমর্থন থাকবে না। ব্রাজিলের ভোটারদেরও নির্লজ্জ জনতুষ্টিবাদের প্রলোভন এড়াতে হবে। মনে রাখতে হবে, ব্রাজিলের জনগণ আরও ভালো কিছুর প্রত্যাশা করে।

ইকোনমিস্ট ও বিবিসি অবলম্বনে