মেক্সিকোর নির্বাচন কমিশন বলছে, জলবায়ুবিজ্ঞানী এবং মেক্সিকো সিটির সাবেক মেয়র শিনবাউম ৫৮ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে ৬০ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন
মেক্সিকোর নির্বাচন কমিশন বলছে, জলবায়ুবিজ্ঞানী এবং মেক্সিকো সিটির সাবেক মেয়র শিনবাউম ৫৮ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে ৬০ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন

বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে মেক্সিকোর প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন শিনবাউম

বিপুল ভোটে জয়লাভ করে মেক্সিকোর প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন ক্লদিয়া শিনবাউম। তিনি ক্ষমতাসীন বামপন্থী দলের প্রার্থী।

মেক্সিকোর নির্বাচন কমিশন বলছে, জলবায়ুবিজ্ঞানী এবং মেক্সিকো সিটির সাবেক মেয়র শিনবাউম ৫৮ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে ৬০ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। গণতান্ত্রিক মেক্সিকোর ইতিহাসে এটাই কোনো প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর সর্বোচ্চ ভোটে জয়লাভ।

শিনবাউমের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী শোচিত গ্যালভেজ ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে ২৮ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন।

জয় নিশ্চিত হওয়ার পর সমর্থকদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে শিনবাউম বলেন, ‘আমাদের গণতন্ত্রের ২০০ বছরের ইতিহাসে আমিই প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হতে চলেছি।’

এ সময় শিনবাউমের সমর্থকেরা ‘প্রেসিডেন্ট’ ‘প্রেসিডেন্ট’ বলে চিৎকার করতে থাকেন।

সহিংসতা ও প্রাণহানির মধ্য দিয়ে মেক্সিকোতে পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। ভোটের আগে জনমত জরিপগুলোয় শিনবাউম তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী শোচিত গ্যালভেজের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে ছিলেন।

ক্ষমতাসীন বামপন্থী দলের প্রার্থী ক্লদিয়া শিনবাউম প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত

ভোটের দিন সারা দেশে সহিংস ঘটনা ঘটেছে। পুয়েব্লা রাজ্যে ভোটকেন্দ্রে সহিংসতায় দুজন নিহত হয়েছেন। রোববার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টায় বেশির ভাগ ভোটকেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শেষ হয়। এদিন দেশটির প্রায় ১০ কোটি মানুষ ভোট দিয়েছেন।

ভোটাররা মেক্সিকো কংগ্রেসের সব সদস্য, আটটি রাজ্যের গভর্নর এবং মেক্সিকো সিটির মেয়র নির্বাচন করতেও ভোট দেন।

মেক্সিকো সিটির মেয়র পদে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস আগেই ছিল। ক্ষমতাসীন দল মোরেনা পার্টির ক্লারা ব্রুগাদা এবং বিরোধী জোটের প্রার্থী সান্তিয়াগো তাবোয়াদা উভয়ই নিজস্ব বুথফেরত সমীক্ষার কথা বলে নিজেদের জয় দাবি করেছেন।

এল ফিন্যানসিয়েরো পত্রিকা অবশ্য তাদের বুথফেরত সমীক্ষায় বর্তমান সরকারদলীয় প্রার্থী ব্রুগাদাকে ‘সামান্য এগিয়ে রেখেছে’। তবে তারা নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা প্রকাশ করেনি।

মেক্সিকোর এবারের নির্বাচনটি আধুনিক সময়ে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে সহিংস নির্বাচনে পরিণত হয়েছে। এবার নির্বাচনী প্রচারের সময় হানাহানিতে ৩৮ জন প্রার্থী প্রাণ হারিয়েছেন। সরকার থেকে অবশ্য ২০ জনের বেশি প্রার্থী নিহত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে।

মেক্সিকোতে একজন প্রেসিডেন্টের মেয়াদ ছয় বছর এবং তিনি এক মেয়াদে দায়িত্ব পালন করতে পারেন।

রয়টার্স জানায়, বিদায়ী প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদরের আমলে আধুনিক মেক্সিকোর ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি খুন হয়েছে।

ভোট নিয়ে মেক্সিকোর ভোটারদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে।

শিনবাউমের সমর্থক ৮৭ বছর বয়সী একজন নারী ভোটার রয়টার্সকে বলেন, ‘আমি কল্পনাও করতে পারিনি একদিন একজন নারীকে ভোট দেব। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।’

মেক্সিকো সিটির উচ্চমধ্যবিত্তদের এলাকায় বসবাস করা আরেক নারী ভোটার বলেন, ‘দুর্নীতি মাত্রাহীনভাবে বেড়ে যাওয়ায় দেশে রক্তগঙ্গা বয়ে গেছে। আশা করি, দেশের সরকারব্যবস্থায় পরিবর্তন আসবে, এমন কিছু—যাতে জীবন আরেকটু ভালো হবে।’

নির্বাচন কমিশন থেকে এখন পর্যন্ত যে ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে তাতে মেক্সিকোর কংগ্রেসের উভয় কক্ষে ক্ষমতাসীন জোট দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে চলেছে। যদি তাই হয় তবে বিরোধীদের সমর্থন ছাড়াই ক্ষমতাসীন জোট সংবিধান সংশোধনের সুযোগ পাবে।