ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো
ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো

সৌদির উপহার আত্মসাৎ, বলসোনারোর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনল ব্রাজিলের পুলিশ

সৌদি আরব থেকে পাওয়া উপহারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র আত্মসাতের অভিযোগে ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোর বিরুদ্ধে গতকাল বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ এনেছে দেশটির কেন্দ্রীয় পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপ্রধান থাকাকালে সৌদি সরকারের কাছ থেকে পাওয়া উপহারসামগ্রী আত্মসাৎ–সংক্রান্ত অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে তারা। পুলিশের দুটি সূত্রের বরাতে এমন তথ্য জানা গেছে।

এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বলসোনারোর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ আনল ব্রাজিলের পুলিশ। এর আগে করোনার টিকাসংক্রান্ত তথ্য নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগে গত মার্চে তাঁর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ এনেছিল পুলিশ।

গতকাল বলসোনারোর বিরুদ্ধে যেসব গয়না আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে, তাঁর কয়েকটি সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান চপার্ডের তৈরি করা। এগুলোর মূল্য ৩২ লাখ ডলার। এর মধ্যে আছে ডায়মন্ডের তৈরি একটি গলার হার, আংটি, ঘড়ি ও কানের দুল। সৌদি আরবের সরকার এগুলো বলসোনারো ও তাঁর স্ত্রী মিশেল বলসোনারোকে উপহার হিসেবে দিয়েছিল।

২০২১ সালের অক্টোবরে সাও পাওলো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শুল্ক কর্মকর্তারা কিছু অলংকার জব্দ করেন। বলসোনারো সরকারের এক সহযোগীর ব্যাগ থেকে এগুলো পাওয়া গিয়েছিল। ওই সহযোগী তখন সৌদি আরবের রিয়াদ থেকে ফিরছিলেন।

একটি সূত্র বলেছে, পুলিশ বলসোনারোর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং, অপরাধকর্মে সহযোগিতা এবং আত্মসাতের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এমন তথ্য জানিয়েছে ওই সূত্র।

এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে ব্রাজিলের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। তবে তাৎক্ষণিক সাড়া পাওয়া যায়নি।

বলসোনারোর আইনজীবীর সঙ্গেও টেলিফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল রয়টার্স। তাঁর কাছ থেকেও সাড়া পাওয়া যায়নি। এর আগে বলসোনারোর আইনজীবী দাবি করেছিলেন, তাঁর মক্কেল কোনো অপরাধ করেননি।

বলসোনারোর বড় ছেলে এবং সিনেটর ফ্লাভিও গতকাল বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে অভিযোগ করেছেন, তাঁর বাবা নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে কিছু অলংকার বিক্রিতে বলসোনারোকে সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এবং মন্ত্রী আলেক্সান্দ্রে দে মোরায়েসের অনুমতির পর গত বছর পুলিশ ওই সেনা কর্মকর্তাদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল।

সে সময় বিচারপতি মোরায়েস বলেছিলেন, ওইসব জিনিস বিক্রি করা হলেও এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়নি।

পুলিশের অভিযোগের ভিত্তিতে বলসোনারোর বিরুদ্ধে বিচার শুরু করা হবে কিনা—এখন সে সিদ্ধান্ত নেবেন ব্রাজিলের প্রসিকিউটর জেনারেল।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচনে হেরে যান বলসোনারো। ক্ষমতা ছাড়ার পর একাধিক আইনি জটিলতায় পড়েন তিনি।