ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোকে আট বছরের জন্য নির্বাচনে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন দেশটির সুপ্রিম ইলেক্টোরাল কোর্ট। গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে দোষীসাব্যস্ত হয়েছেন তিনি।
ব্রাজিলের নির্বাচনে ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক ব্যালট হ্যাক করে কারচুপির সুযোগ আছে এমন মিথ্যা দাবির মাধ্যমে বলসোনারো দেশটির গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে দুর্বল করেছেন বলে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল।
এই রায়ের বিরুদ্ধে বলসোনারোর আইনজীবীরা আপিল করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাঁদের যুক্তি, তৎকালীন প্রেসিডেন্টের বক্তব্য নির্বাচনী ফলাফলে কোনো প্রভাব ফেলেনি।
সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় গত বছরের ২ অক্টোবর থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। যদি রায় বহাল থাকে বলসোনারো ২০২৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। তবে ২০৩০ সালের নির্বাচনে তাঁর অংশ নিতে বাধা নেই। এ ছাড়া ২০২৪ ও ২০২৮ সালের স্থানীয় নির্বাচনেও অংশ নিতে পারবেন না তিনি।
বিচারপতিদের ৫-২ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় এই রায় দেওয়া হয়। এই রায়কে ‘পিঠে ছুরির মারার’ সঙ্গে তুলনা করেছেন বলসোনারো। ব্রাজিলে ডানপন্থার রাজনীতিকে এগিয়ে নেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
গত বছর ক্ষমতায় থাকার সময় দেওয়া এক বক্তব্য ঘিরে বলসোনারোর বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল। ওই বছরের ১৮ জুলাই রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় নিজের বাসভবনে বিদেশি কূটনীতিকদের আমন্ত্রণ জানান তিনি। ওই বৈঠকে বলসোনারো দাবি করেন, ব্রাজিলে ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন হ্যাক করা যায় এবং বড় ধরনের কারচুপির সুযোগ আছে।
পরে বলসোনারো বলেছিলেন, ব্রাজিলে কীভাবে নির্বাচন হয় তিনি কেবল তা ব্যাখ্যা করেছিলেন, নির্বাচনী ব্যবস্থার সমালোচনা বা এটাকে আক্রমণ করেননি। যদিও নির্বাচনী প্রচারণায় ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক বিভক্তিতে এই বক্তব্য প্রভাব ফেলেছিল।
অক্টোবরের নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপের ভোটে সামান্য ব্যবধানে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বামপন্থী নেতা লুইস ইনাসিও লুলা দা সিলভার কাছে পরাজিত হন বলসোনারো। প্রথম ধাপের ভোটে কেউই ৫০ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় দ্বিতীয় ধাপে গড়িয়েছিল ভোট।
বলসোনারো প্রকাশ্যে নির্বাচনে পরাজয় স্বীকার করেননি। লুলার শপথ নেওয়ার দুই দিন আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় চলে যান।
সাবেক এই প্রেসিডেন্টের সমর্থকেরা নির্বাচনী ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান। চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি তারা ব্রাজিলের কংগ্রেস (পার্লামেন্ট) ভবন, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ ও সুপ্রিম কোর্ট ভবনে তাণ্ডব চালিয়েছিলেন।